নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে টানা লকডাউন জারি হওয়ায় অনেকেরই উপার্জনে টান পড়েছে। কাজ খুইছেন এমন মানুষের সংখ্যাটাও কোনো অংশে কম নয়। বেতন কেটে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে অনেকের সঙ্গে। ফলে মধ্যবিত্তদের সংসার চালানোটাই দস্তুর হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন অভিভাবকরা।
কেন্দ্রের নির্দেশকে তোয়াক্কা না করেই চলছে বাড়তি ফি নেওয়ার হিড়িক। ফলে উপায় না দেখে বেসরকারি স্কুল থেকে সরকারি স্কুলে ভর্তি করানোর ট্রেন্ড শুরু হয়েছে গুজরাতে। বহু অভিভাবকই বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। অনেকেই আবার বাধ্য হয়ে বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে স্যানিটেশন কর্মী হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যেই রজনীকান্ত সোলাঙ্কি হলেন একজন অভিভাবক।
করোনা মহামারীর সময়ে তাঁর বেতন থেকে ২০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। মাসে মাত্র সাড়ে ছয় হাজার টাকা দিয়ে তাঁর পক্ষে সংসার চালানো যে সম্ভব হচ্ছে না তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। আপাতত এই টাকা দিয়ে অভুক্ত অবস্থাতেই দুই মেয়েকে বেসরকারি স্কুলে পাঠাতে হবে, না হলে অল্প খেয়ে সরকারি স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুনঃ করোনা আবহে একমাসে পাঁচটি দেশে ২৩ লক্ষ পিপিই রপ্তানি করেছে ভারত
বছরে ১০ হাজার টাকা মাত্র দুই মেয়ের পড়াশোনা কাজেই লেগে যায়। কিন্তু এই করোনা পরিস্থিতিতে এত টাকার খরচের বোঝা সামলাতে পারবেন না তিনি। তাই স্কুলের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, আগামী কয়েকমাসের ফি যেন মকুব করা হয়। কিন্তু সেই কথা শোনেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুনঃ বিএস-৪ গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের উপরে জারি করা নিষেধাজ্ঞা তুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট
সোলাঙ্কি আরও জানিয়েছেন, প্রাইভেট স্কুলে মেয়েদের পড়াশোনা করিয়ে অনেক বড় করে তোলার স্বপ্ন দেখা এখন আর সম্ভব নয়। তাই শাহিবাগের একটি সরকারি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন দুই মেয়েকে। বড় মেয়েকে ক্লাস সেভেনে ও ছোট মেয়েকে ক্লাস থ্রিতে ভর্তি করিয়েছেন তিনি।
বাড়তি ফি নিয়েও প্রাইভেট স্কুলগুলি অনলাইন ক্লাসে গুরুত্ব দিচ্ছে না। পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে বলে আক্ষেপ জানিয়েছেন রজনীকান্ত। তবে তিনিই একা নন, তাঁর মতো বহু অভিভাবক এখন বেসরকারি স্কুল থেকে সরকারি স্কুলের প্রতি ঝুঁকেছেন বলে জানিয়েছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর। চলতি বছর সারা রাজ্যে স্বচালিত স্কুলগুলি থেকে প্রায় ২.৩৬ লক্ষ পড়ুয়া সরকারি ও সরকারি অনুদান দ্বারা চালিত স্কুলগুলিতে ভর্তি হয়েছে। এমনটা জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রকের সচিব বিনোদ রাও।
সূত্রের খবর, করোনাভাইরাস ও লকডাউনের জেরে প্রায় ২০ শাতংশ অভিভাবক আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছেন। চাকরি হারিয়ে কিংবা বেতন কেটে নেওয়ায় বা ব্যবসায় ব্যপক ক্ষতি হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। এ রাজ্যে মোট ৩৩ হাজার সরকারি স্কুল ও সরকারি অনুদানে চালিত স্কুল রয়েছে মোট ৫ হাজার। এই সব স্কুলগুলিতে ৫০ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছে এ বছরে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584