মনিরুল হক,কোচবিহারঃ
মেয়ের খুনির ফাঁসি চায় মন্দিরার মা তাপসী দাস। বুধবার সকালে কোচবিহার ১নং ব্লকের দেওয়ানহাট-বলরামপুর রাজ্য সড়কের পাশে জিরানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোসাইগঞ্জ বেলতলা তেপথী এলাকায় ভেটাগুরির সিঙ্গিজানি গ্রামের কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। কলেজ ছাত্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।পরে ঘটনার তদন্তে নেমে কোচবিহার কোতোয়ালি থানার পুলিশ ওই কলেজ পড়ুয়া যুবতির প্রতিবেশী যুবক আদেশ দেবনাথকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।রাতেই পুলিশি জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে ধৃত যুবক।আজ সকালে মৃত কলেজ ছাত্রী মন্দিরা দাসের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল বাড়ির দাওয়ায় বসে রয়েছে মা তাপসী দাস। আজ তাপসীর পরলৌকিক কাজের ব্যাস্ততা চলছে।ততক্ষণে এসে পৌঁছেছে পুরোহিতও।
মন্দিরার কথা জিজ্ঞাস করতেই কাঁদতে কাঁদতে মা তাপসী দাস বলেন, “আমার মেয়েটা কার কি ক্ষতি করেছে? ওকে এভাবে খুন করা হল? আমি কি নিয়ে বাঁচবো? আমার মেয়েকে যারা খুন করল তাদের আমি ফাঁসি চাই।” এই কথা গুলি বলতে বলতেই আবার হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন মা তাপসীদেবী।কিছুক্ষণ পরে নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বলেন,“মঙ্গলবার বিকালে প্রান্তিক বাজারের কাছে তার বান্ধবী বুল্টির বাড়ী তে যায় মন্দিরা।শেষ কথা হয় সন্ধ্যা ৭ টার দিকে। তখন সে ফোনে জানায় কিছুক্ষণ পরে বাড়ী ফিরবে সে,কিন্তু রাত হলেও মন্দিরা বাড়ী না আসায় ফের তাকে ফোন করলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।পরে আমার দাদাকে ফোন করে মন্দিরার বাড়ী ফিরে না আসার কথা জানাই। পরের দিন সাকালে ওর দেহ পরে থাকার কথা জানতে পারি।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যুবতী খুনের ঘটনায় ধৃত আদেশ দেবনাথ মন্দিরা খুনের কথা স্বীকার করেছে।পাশাপাশি মন্দিরার সাথে তার প্রেমের কথাও জানিয়েছে সে।পুলিশ ধৃত যুবককে কোচবিহার আদালতে তুললে তাঁকে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। মন্দিরার মা অবশ্য তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।মন্দিরার মা তাপসী দাস এবিষয়ে বলেন, “প্রতিবেশী যুবক। তাই আদেশের সাথে কথা বলত।তবে তাদের মধ্যে প্রেমের কোন সম্পর্ক ছিল বলে আমার জানা ছিল না।আর ওরা যদি প্রেম করে বিয়ে করতে চাইতো, তবে করতো।তাই বলে ওকে এভাবে মেরে ফেললো।” তবে আদেশের স্ত্রী দীপ্তি বর্মন (দেবনাথ) বলেন, “মন্দিরার সাথে আমার স্বামীর কোন সম্পর্কই ছিল না।ওকে ফাঁসানো হচ্ছে।সঠিক তদন্ত হলে সব বেড়িয়ে পড়বে।”
আরও পড়ুনঃ কোচবিহারে কলেজ ছাত্রী খুনের ঘটনায় ধৃত প্রেমিক
পুলিশ জেরায় ধৃত আদেশ জানিয়েছে, দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।তখন একটি বাশ দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায় আদেশ।কিন্তু তাদের মধ্যে কি নিয়ে বিরোধ বাধে,যে মন্দিরাকে বাশ দিয়ে মাথায় মারতে হল? নাকি আগে থেকেই প্রেমিকাকে খুনের পরিকল্পনা করছিল আদেশ? সে সময় আদেশ ছাড়া কি আরও কেউ সেখানে ছিল? ওই খুনের সাথে কি আরও কেউ যুক্ত ছিল? এই প্রশ্ন গুলির উত্তর খুঁজছে তদন্তকারীরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584