সিমা পুরকাইত,দক্ষিন ২৪ পরগনাঃ
মল্লিকপুরে যুবক খুনের ঘটনায় কোন রাজনীতির যোগ নেই,বন্ধুদের সাথে পুরানো বিবাদ থেকেই খুন,রাজস্থানের আজমিরে পাড়ি দিয়ে পুলিস ধরে আনলো মুল অভিযুক্ত সহ তিন জনকে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা ,মল্লিকপুরে রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় নিজামুদ্দিন মণ্ডলের খুনের ঘটনায় কোন রাজনীতির যোগ নেই।বন্ধুদের সাথে পুরানো বিবাদ থেকেই খুন হয়েছে নিজামুদ্দিন এমনটাই মনে করছে পুলিশ।
মল্লিকপুরে খুনের ঘটনায় রাজস্তানের আজমিরে পাড়ি দিয়ে বারুইপুর থানার পুলিস মুল অভিযুক্ত সহ তিন জন কে গ্রেফতার করার পর জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েই এই তথ্য পুলিসের।বারুইপুর জেলা পুলিস সুপার রশিদ মুনির খান বারুইপুর থানায় সাংবাদিক বৈঠক করে এই কথাই জানান।মুল অভিযুক্ত আলতাফ বৈদ্য,খুরসিদ খান,কাট্টা সহিদকে রাজস্থানের আজমির থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে শুক্রবার বারুইপুরে নিয়ে আসা হয়।
আরও পড়ুন: ডোমকলে তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতির দেহ উদ্ধার, খুনের অভিযোগ পরিবারের
ধৃত দের দুপুরে বারুইপুর আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে ১ টি ৭ এম এম পিস্তল,একটি ওয়ান শাটার,৫ রাউন্ড কার্তুজ আগেই উদ্ধার করে পুলিস।বারুইপুর পুলিসের এই সাফল্যে খুশি নিহতদের পরিবার। এই সাফল্যের কারনেই বারুইপুর থানার দুই তদন্তকারি অফিসার সমরেশ ঘোষ, দীপঙ্কর দাসের হাতে ১০ হাজার টাকা আর্থিক পুরষ্কার তুলে দেন জেলা পুলিস সুপার রশিদ মুনির খান।
বারুইপুর থানায় সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিস সুপার ইন্দ্রজিত বসু,এসডিপিও অভিষেক মজুমদার,বারুইপুর থানার আই সি দেবকুমার রায়।এদিন সাংবাদিক বৈঠকে পুলিস সুপার জানান,গত ২৩ জুন রাতে বারুইপুরের মল্লিকপুর রেল গেট সংলগ্ন এলাকায় নিজামুদ্দিন মণ্ডল খুন হয়।
এর তদন্তে নেমে মোবাইল ট্রাক,লোকাল তথ্য জোগাড় করে জানা যায় মুল অভিযুক্ত আলতাফ বৈদ্য সহ খুরসিদ,কাট্টা শহিদ রাজস্থানের আজমিরে পালিয়েছে। এর পরেই বারুইপুর থানার তদন্তকারি অফিসার সমরেশ ঘোষ,এ এস আই দীপঙ্কর দাস কে আজমিরে পাঠানো হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে আলতাফ সহ তার সঙ্গিরা প্রথমে কলকাতা থেকে বাসে আসানসোল যায়। সেখান থেকে ট্রেনে বিহারে যায়। বিহারের হাজিনগরে কাট্টা সহিদের শ্বশুরবাড়িতে ওরা দুই দিন থাকে। পরে ওখান থেকে ২০-২৫ হাজার টাকা নিয়ে দিল্লি যায়।
দিল্লি থেকে যায় রাজস্থান।পুলিশ তদন্তে নেমে রাজস্থান পুলিসের সাহায্য নেয়। এরা মাত্র ৩০০ টাকা করে ঘর ভাড়া নিয়ে ছিল। পরে রাজস্তানের তারাগড়ে এক ভাড়া বাড়িতে গিয়ে ওঠে তারা। কয়েকদিন আগেই রাজস্থানে গিয়ে উঠেছিল তদন্তকারি অফিসার সমরেশ ঘোষ, দিপঙ্কর দাস।বারুইপুর জেলা পুলিসের স্পেশাল অপারেশান গ্রুপ ওসি লক্ষিকান্ত বিশ্বাস অপারেশনে সাহায্য করে।
এর পরেই পুলিস তারাগড়ে নাগাল পায় আলতাফ বৈদ্য সহ তিন জনের।তিন জনকে বুধবার আজমিরের আদালতে তোলা হয়েছিল।খুনের কারন সম্পর্কে পুলিস সুপার জানান, দুই মাসে বারুইপুর থানার পুলিস মল্লিকপুর হাসপাতাল এলাকা থেকে আতিশ সরদার ওরফে মিন্টু কে অস্ত্র সমেত গ্রেফতার করা হয়।
এই মিন্টু ছিল নিজামুদ্দিনের বন্ধু।নিজামুদ্দিন সন্ধেহ করে তার পুরানো বন্ধু আলতাফ,খুরসিদ এরাই মিন্টুকে ধরিয়ে দিয়েছে। এর পরেই ২৩ জুন মন্দিরতলা থেকে মদ্যপ অবস্থায় ফেরার পথে নিজামুদ্দিন,সাব্বিরের সাথে খুরসিদের বচসা হয়।হাতাহাতি হয়।দুই পক্ষ মদ্যপ অবস্থায় ছিল।খুরসিদকে নিজাম চড় মারলে খুরসিদ ফোন করে আলতাফ কে ডেকে আনে।
এর পরই আলতাফ এলে বচসা হয় আবার। নিজামুদ্দিনকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আলতাফ তার কোমর থেকে ৭ এম এম পিস্তল বের করে প্রথমে শুন্যে গুলি চালায়,পরে নিজাম কে লক্ষ্য করে বুকে গুলি চালায়। এরা সবাই একে অপরের বন্ধু।
পুরানো বিবাদ থেকেই এই খুন,এর সাথে রাজনীতির কোন যোগ নেই। প্রসঙ্গত, সিপিএমের বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী নিজামুদ্দিন কে নিজেদের কর্মী দাবি করে ঘটনার সাথে রাজনীতি জুড়ে দিয়েছিল।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584