বেলেঘাটায় সেলোটেপ পেঁচিয়ে দু’মাসের সন্তানহন্তা জন্মদাত্রীর পুলিশ হেফাজত, পেলেন না আইনজীবী

0
59

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ

দু-মাসের শিশুকন্যাকে খুনের অভিযোগ উঠলো মায়ের বিরুদ্ধে। এমনকি খুন করে ম্যানহোলেও পর্যন্ত ঢুকিয়ে দেওয়া হয় শিশুটিকে ৷ এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠলো সন্ধ্যা মালো নামে এক মহিলার বিরুদ্ধে ।

সন্তানহন্তা মা সন্ধ্যা মালোর সমর্থনে আদালতে দাঁড়ালেন না কোনও আইনজীবী। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে সরকারি আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর তাঁকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

অভিযুক্ত মহিলা। ফাইল চিত্র

সোমবার দুপুরে শিয়ালদহ কোর্টে তোলা হয় নিজের ২ মাসের কন্যা সন্তানকে খুনে অভিযুক্ত সন্ধ্যা মালোকে। তাঁর হয়ে সওয়াল করতে রাজি হননি কোনও আইনজীবী। ফলে সরকারি কৌসুলি নিজের বক্তব্য রাখা শুরু করেন। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে গোটা ঘটনাক্রম বিচারককে বুঝিয়ে বলেন তিনি। গোটা সময়টা মাথা নিচু করে এজলাসে দাঁড়িয়ে ছিলেন সন্ধ্যা।

উল্লেখ্য, বেলেঘাটার সিআইটি রোডের পাশে মহল্লা অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বেলেঘাটা থানায় ফোন করেন সুদর্শন মালো নামে এক ব্যক্তি। জানান আবাসনের ঠিকানাও। ওই আবাসনেরই তিনতলায় থাকে মালো পরিবার। সুদর্শন আরও জানান, দুপুর ১২ :৩০ থেকে ১ তা পর্যন্ত বাড়িতে একাই ছিল তাঁর স্ত্রী সন্ধ‍্যা মালো এবং পরিচারিকা টুম্পা দাস। ছিল দু-মাসের শিশুকন্যাও। তখন প্রথমে বলা হয়েছিল, দুপুর ১২ টা নাগাদ সে নিজেই জামাকাপড় মেলতে ছাদে যায়। দরজায় আচমকাই কলিং বেল বাজে। সেই সময় দরজার বাইরে থাকা এক যুবক নাকি তাকে জানায় পরিচারিকা চাবি চাইছে। ওই যুবক ঠিক কী বলছে তা বুঝতে না পেরেই ঘরের ভিতর থেকে দরজা খোলে পরিচারিকা টুম্পা। তখনই নাকি তাঁকে ধাক্কা মেরে ওই যুবক ওই ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এতে অজ্ঞান হয়ে যায় পরিচারিকা ওই মহিলা।

কিছুক্ষণ পরে বাড়িতে ফেরেন সুদর্শনের বাবা হেমন্ত। তিনিও দেখেন, শিশুটি তখনও নিখোঁজ। তারপরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।পুলিশও ঘটনার তদন্তে নামে। পুলিশের সন্দেহ হয় প্রথম থেকেই। সন্ধ্যা পুলিশের কাছে আরও দাবি করে, কলিং বেল বেজেছিল আয়া ছাদে যাওয়ার পরেই। এক যুবক জানিয়েছিল, ছাদের দরজার চাবি চাইছে আয়া। সেদিনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ জানতে পারে বাইরে থেকে সেদিন কোনও অজ্ঞাত পরিচয় যুবক আদৌও ওই অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশ করেনি।

গভীর রাতে সন্ধ্যা মালোকে জেরা করতেই পুলিশ জানতে পারে প্রকৃত ঘটনা। জেরার মুখে মেয়েকে খুন করার কথা স্বীকার করেন তিনি। শনিবার দুপুরে নিজেই কন্যাসন্তানকে সেলোটেপ পেঁচিয়ে খুন করেন সন্ধ্যা। খুন করার পর দেহটি ঢুকিয়ে দেন আবাসনেরই একটি ম্যানহোলে। এর পর মেয়ে অপহরণের গল্প ফাঁদেন তিনি। যদিও তাঁর সব জারিজুরি ফাঁস হয়ে যায় আবাসনে লাগানো সিসি ক্যামেরায়। তাঁকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ম্যানহোল থেকে শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে খুনের কারণ নিয়ে এখনো ধোঁয়াশায় পুলিশ। সন্ধ্যা পুলিশকে জানিয়েছেন, সন্তানকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সামনে এই মহিলা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই মহিলা মানসিক অবসাদ থেকেই খুন করেছে তার
শিশুকন্যাকে।

ঘটনার বিবরণ শুনে অবাক হয়ে যান বিচারপতিও। এর পরই সন্ধ্যাকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন তিনি।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here