নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালকে রেফারহীন হাসপাতালে রূপান্তরিত করতে স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে আবেদন

0
132

শ্যামল রায়,নদীয়াঃ
ঝাঁ-চকচকে হাসপাতালের রূপ  পেয়েছে নবদ্দীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। পরিষেবার যথেষ্ট উন্নতি হলেও শুধুমাত্র অভাব মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক। ১২৫ বেডের অনুমোদিত হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এতটাই বেশি যে এক বেডে দুজনকেই থাকতে হয়। তবে কখনো কখনো রোগীর সংখ্যা অত্যাধিক বেড়ে যায়। শুধুমাত্র অভাব চিকিৎসকের।
বুধবার হাসপাতালে সুপার বাপ্পা ঢালী জানিয়েছেন যে হাসপাতালকে ঢেলে সাজাতে এক কোটি টাকার স্কিম পাঠানো হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরে। এছাড়াও হাসপাতালে একটি ডিজিটাল এক্স-রে বিভাগ চালুর ব্যাপারে আবেদনপত্র পাঠানো হয়েছে জেলা ও স্বাস্থ্য দপ্তরে। তিনি আশাবাদী খুব তাড়াতাড়ি হাসপাতালকে ঢেলে সাজানোর কাজে বিভিন্ন ধরনের পাঠানো আবেদনপত্র বাস্তবায়িত হবে।
এই হাসপাতালে রয়েছে একটি ব্লাড ব্যাংক রয়েছে ন্যায্য মূল্যের দোকান। আরো জানা গিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে ইতিমধ্যেই হাসপাতাল সুপার হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবার সফলতার জন্য পুরস্কার পেয়ে গিয়েছেন।

নিজস্ব চিত্র

কিন্তু প্রতিদিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা তাই ইতিমধ্যে আরো ৫০টি বেড সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন করেছেন জেলা -রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের কে। বিষয়টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও নবদ্দীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল কে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হয়েছেন বলে বিশেষ সূত্রে খবর।
হাসপাতাল সুপার বাপ্পা ঢালি আরও জানিয়েছেন যে এই মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা ২১জন  ও নার্সের সংখ্যা ৪১জন।
চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী সংখ্যা ৩০জন। কিন্তু এই সংখ্যাটা কম থাকায় শূন্য পদ খালি রয়েছে।
এক্সরে বিভাগে রয়েছেন দুই জন কর্মচারী লাইব্রেরী খুব ভালো চলে বলে জানা গিয়েছে।
তবে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ হাসপাতাল থেকে কোন রোগীকে রেফার করা যাবেনা। সেই দিক থেকে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল অনেকটাই এগিয়ে গেছে। রেফার সংখ্যা অনেকটাই কমে দাঁড়িয়েছে। সুপার পরিসংখ্যান দিয়ে জানান যে গত সোমবার হাসপাতালে ৬৪জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
কাল থেকে রেফার করা হয়েছে ছয়জনকে। রেফারের সংখ্যা অনেকটাই কম দাঁড়িয়েছে।
তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে এই হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের স্থায়ী চিকিৎসক থাকলে  রেফারের সংখ্যা আরো অনেকটাই কমানো যেত। মেডিসিন বিভাগে ডেপুটেশনে একজন চিকিৎসক রয়েছেন তিনি সপ্তাহে তিনদিন পরিষেবা দিয়ে থাকেন বর্তমানে ছুটিতে থাকার কারণে পরিষেবা অনেকটাই ব্যাঘাত ঘটছে বলে তিনিও স্বীকার করেছেন। তাই মেডিসিন বিভাগে একজন চিকিৎসকের প্রয়োজন জোর দিয়ে জানালেন সুপার।
এই মুহূর্তে বিভিন্ন ধরনের অপারেশনে নবদ্দীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যথেষ্ট সুনাম বেড়েছে।
সুপার আরও জানালেন যে হাসপাতালে সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত চিকিৎসক এবং কর্মীদের আবাসন এর বিষয়। হাসপাতালে কোয়াটার গুলির অবস্থা জরাজীর্ণ। হাসপাতাল চত্বরে কোয়ার্টারে মাত্র তিনজন চিকিৎসক থাকেন আর সকলেই গ্রুপ সি কর্মচারীরা থাকেন। আবাসন সংস্কারের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই আবেদনপত্র করা সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত সদুত্তর মেলেনি। বিষয়টি কার্যকারী হলে অনেকেই থাকতে পারেন এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি ঘটবে। রয়েছে একটি মাত্র সরকারি অ্যাম্বুলেন্স এছাড়াও রয়েছে ৯ টি মাতৃ যান।
নবদ্বীপ শহর সংলগ্ন এলাকা জুড়ে যক্ষা রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়লেও বর্তমানে চিকিৎসার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সফলতা অর্জন করেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। যক্ষা রোগে আক্রান্তদের হাসপাতাল ছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গায় নয়টি সেন্টার আছে। এই সেন্টার গুলি থেকে যক্ষা রোগে আক্রান্তরা স্বাস্থ্যপরিসেবা পান এবং ওষুধ খান। প্রতিদিন আউটডোরে পাঁচ শতাধিক রোগী পরিষেবা পান বলে জানা গিয়েছে। রয়েছে রোগী কল্যাণ সহায়তা সমিতির অফিস। হাসপাতালে আসা রোগীরা ও তাদের পরিবার পরিজনেরা বিভিন্নরকম তত্ত্ব জানতে পারেন এই রোগী কল্যাণ সহয়তা কেন্দ্র থেকে।
ঝাঁ-চকচকে হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতি ঘটলেই জেলা রাজ্যের মধ্যে একটি ভালো হাসপাতাল হতে পারে বলে অনেকেই মতামত দিয়েছেন। হাসপাতালে সুপার কর্ম উদ্যোগী মানুষ হিসাবে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন ঘটাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে হাসপাতালে আসা রোগীদের তরফ থেকে জানা গিয়েছে। হাসপাতালে আসা
রোগীদের মধ্যে অনেকেই বলছেন যে হাসপাতালে আল্টাসনোগ্রাফি বিভাগটি বন্ধ থাকায় একটু সমস্যা হচ্ছে। সুপার বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব আল্টাসনোগ্রাফি চালু করার উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করেছেন। তবে হাসপাতালের মেন গেটে অনেকটাই যানজট হয় সে বিষয়টি সুপার বলেছেন মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাবের কারণেই এই ধরনের যানজট হচ্ছে। বিষয়টি আমরা বারবার দেখেছি এবং হাসপাতালে আসা রোগী এবং তাদের পরিবার-পরিজনকে সতর্কতা করলেও একটু সমস্যা হচ্ছে।
তবে হাসপাতালের উন্নয়নমুখী  ঢেলে সাজানোর কাজ দ্রুত হোক দাবি করেছেন রোগীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। হাসপাতালের উন্নয়নে নবদ্বীপ পৌরসভার চেয়ারম্যান বিমান কৃষ্ণ সাহা  ও স্থানীয় বিধায়ক পুন্ডরীকাক্ষ সাহা জানিয়েছেন যে হাসপাতালে আসা রোগীরা যাতে ভালো পরিষেবা পার সে বিষয়ে আমরা বারবার নজর রাখছি এবং দেখছি। ব্লাড ব্যাংকে যাতে রক্ত থাকে তার জন্য মাঝেমধ্যেই রক্তদান শিবির আয়োজন করা হয়। নবদ্দীপ ব্লাডব্যাংকের রক্তের জন্য মুমূর্ষু রোগীদের যাতে অসুবিধে না হয় রক্তের অভাবে মৃত্যু না ঘটে সে বিষয়ক আমরা সতর্ক থাকি সবসময়।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here