শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
রামমন্দিরের শিলান্যাসের কারণ দেখিয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের পর পর দু’বার অনুরোধের পরেও পাল্টায়নি ৫ আগস্ট বাংলায় লকডাউনের দিন। রাজনীতিকে সবার উর্ধ্বে রেখে মুখ্যমন্ত্রী যুক্তি দেন, ২৮ আগষ্টও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। তবু ওই দিন লকডাউন রাখা হয়েছে।
যদিও এই কথায় কাজ হবে বলে মনে করছেন না খোদ নবান্নের শীর্ষকর্তারাই। সেই কারণেই তাঁদের নির্দেশে বুধবার রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই এলাকাভিত্তিক সতর্ক নজর রাখতে শুরু করেছেন রাজ্যের গোয়েন্দা শীর্ষকর্তারা। বিষয়টি নিয়ে চাপে রয়েছেন পুলিশ শীর্ষকর্তারাও।
আর কয়েকঘন্টা পরেই অযোধ্যায় হবে রাম মন্দির ভূমি পূজা। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিষয়টি নিয়ে হিন্দু আবেগকে হাতিয়ার করে রাজনীতির জমি শক্ত করতে বিপুল পরিকল্পনা ছিল বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের। কিন্তু সেই আশায় কিছুটা হলেও জল ঢেলে দিয়েছে রাজ্যের ঘোষিত লকডাউন।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, রামমন্দির ভূমি পূজার দিন তারা লকডাউন মানবেন না। পাল্টা বিজেপিকে সোমবার হুঁশিয়ারি দিয়ে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও পরিস্কার জানিয়েছেন, আইন ভাঙলে প্রশাসন তার মতো করে ব্যবস্থা নেবে। দুই যুযুধান পক্ষের বক্তব্য ও পাল্টা বক্তব্যে রাজনীতির মাটি ক্রমশই উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুনঃ রাম মন্দিরের সঙ্গে লকডাউনের কোনও সম্পর্ক নেইঃ ফিরহাদ হাকিম
নবান্ন সূত্রের খবর, শিলান্যাসের উৎসবের অছিলায় বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করতেই পারে বিরোধী রাজনৈতিক দল। তাই বুধবার যাতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রশ্ন না ওঠে তার জন্য সতর্ক গোয়েন্দারা। প্রত্যেক জেলার পুলিশ সুপারদের বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে। জেলার গোয়েন্দা বিভাগকে সতর্ক করা হয়েছে। ডিআইবির কর্তাদের বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনে রাত থেকেই বিশেষ নজরদারি রাখার কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ উচ্চ প্রাথমিকের জন্য প্রকাশিত হল বিকল্প অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার
অন্যদিকে, সিআইডির পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকেও সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। শহরে যে কোনও রকম অশান্তি এড়াতে সতর্ক করা হয়েছে থানাগুলিকে। নবান্নের কর্তারা মনে করছেন রামমন্দির ইস্যু রাজ্য বিজেপির অন্যতম হাতিয়ার। তাই আগামীকাল রাম মন্দির নিয়ে সকাল থেকেই মাঠে নামতে চাইবেন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সমর্থকেরা। তারা চাইবেন যাতে সরকার পক্ষের সঙ্গে তাদের অশান্তি হয় এবং প্রশাসন তাদের যেন গ্রেফতার করে।
তাহলেই রাজ্য সরকারকে হিন্দু বিরোধী তকমা লাগিয়ে বিধানসভার আগে প্রচার করা সম্ভব হবে। গোয়েন্দা মারফত উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের এমন কৌশল অজানা নয় রাজ্যের কাছেও। সেই কারণে যে কোনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোয়েন্দা সূত্র তো বটেই, নিজেদের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে কড়া সমন্বয় রাখার জন্যও জোর দেওয়া হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584