সাংবাদিককে নগ্ন করে উলঙ্গ ক্ষমতালোভীরা

0
205

সম্পাদকীয়:-

সাংবাদিককে নগ্ন করে উলঙ্গ ক্ষমতালোভীরা

সংবাদ সংগ্রহ করা সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব। সত্য অন্বেষণ করে সেই সত্যের নির্ভীক প্রকাশ সংবাদমাধ্যমের কাজ।কিন্তু দুর্ভাগ্য এই যে উন্নয়নের এই রাজ্যে এই দেশে সাংবাদিক নিজেই আজ সংবাদে পর্যবসিত হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছেন এই পেশার সবধরনের পেশাদার।কোথাও ক্যামেরা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে,কোথাও শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়েছে।তবে সবচেয়ে ন্যক্কারজনক ঘটনাটি এই যে এক সাংবাদিককে নগ্ন করে তার উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। সাংবাদিকের এই নগ্নতা শুধু সেই সাংবাদিকের ব্যক্তিগত নগ্নতা নয়। এ হলো দুষ্কৃতিদের হাতে সংবাদমাধ্যমের নগ্নতা।আজ লান্ছিত মানবতা।রাজনীতির প্রয়োজনে মানুষ হাসবে,কাঁদবে।রাজা উলঙ্গ তবু হাততালি দেবে তবেই তুমি এই বঙ্গে এই দেশে বিভূষিত হবে।তার অন্যথা হলে তোমায় ওরা নগ্ন করবে।বাহ্ বাহ্, কি অসাধারণ! ভারতের সংসদীয় রাজনীতির প্রতিভুরা আজ প্রতি মুহূর্তে প্রমান করে চলেছেন তারা কত মেরুদণ্ডহীন সরিসৃপ।ওরা ভয় পায় সত্যের মুখোমুখি হতে।ওরা ভয় পায় মানুষের রায়কে।তাই অস্ত্রহাতে সত্যকে ধামা চাপা দেবার কি উদগ্র প্রয়াস!

কিন্তু সত্যকে কি সত্যই স্তব্ধ করা যায়?হাত বাড়িয়ে সূর্যের আলোকে যেমন আটকানো যায় না তেমনি ভাবেই সত্যকে রুদ্ধ করা যায় না।ঘরের সব জানালা বন্ধ করে তমসা আচ্ছাদিত করলে আসলে সূর্যকিরণের কোন ক্ষতি করা যায় না বরং এক বিরল অসুস্থতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে আলোকহীনরা।আজ ঠিক তেমনই ভাবে ক্ষমতার মদমত্তে শাসক আচ্ছন্ন।হীনতার সীমারেখা অতিক্রান্ত হয়েও যে দন্ত তারা বিকশিত করছে, তা একদিন বুমেরাং হয়ে তাদেরই দংশন করবে।

শারীরিক নির্যাতনের উপশম একদিন হবে কিন্তু যে উলঙ্গ সংস্কৃতির সৃষ্টি করছেন সেই সৃষ্টিকর্তারা তারা তাদের সৃষ্ট খাদে পড়বেন না তো?পশুর সামনে মানুষের নগ্নতায় কোন লজ্জা নেই।আক্রান্ত সাংবাদিককে নগ্ন করেছে যে পাশবিকতা তাতে সেই সাংবাদিকের লজ্জা যতখানি তার চেয়ে লজ্জিত হওয়া উচিৎ সেই পাশবিকতার জন্মদাতাদের।

অবশ্য এ কথাও সত্য যে সভ্য সংস্কৃতি পাশবিকতার বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে মনুষ্যত্ব পাশবিকতায় পর্যবসিত হবে।তাই আজ কলকাতার রাজপথে সাংবাদিকরা পথে নেমেছেন কিন্তু সর্বস্তরের সাংবাদিকদেরও ভাবতে হবে হীন স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমরাও কোথাও না কোথাও সত্যের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে মিথ্যার সাথে আপোষ করে চলছি না তো। আমাদের প্রকাশ মাধ্যমগুলি নত হচ্ছে না তো সেই পাশবিকতার কাছে? যদি হয় তবে সত্য কিন্তু আমাদের প্রতিও ক্ষমাহীন আচরণ করবে।আসুন সত্য প্রকাশে নির্ভীক হয়ে হাতে হাত দিয়ে পথে নামি।গণতন্ত্রের এ দুর্দিনে সংবাদমাধ্যমই পারে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে।না থাকুক প্রশাসন না থাকুক ঠ্যাঙ্গারে বাহিনী হাতে আছে কলম আছে ক্যামেরা।করুক ওরা নগ্ন তবু আমরা উলঙ্গকে উলঙ্গই বলবো এই হোক শপথ।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here