নিজস্ব সংবাদদাতা,আলিপুরদুয়ারঃ
সংরক্ষণ আর গবেষণার অভাবে বিলুপ্ত হতে বসেছে কয়েক শতক আগের ঐতিহাসিক নলরাজার গড়।জলদাপাড়া বনবিভাগের চিলাপাতার জঙ্গলে ধ্বংসের মুখে প্রাচীন এই স্থাপত্য।
জনশ্রুতি আছে, কোচবিহার রাজার প্রধান সেনাপতি চিলা রায়ের নাম অনুসারে ওই অরণ্যের নামকরণ হয়েছিল ‘চিলাপাতা’। আর ওই অরণ্যের এক কোনেই লুকিয়ে আছে উত্তরবঙ্গের এক পৌরাণিক ইতিহাস। জঙ্গলের গভীরে বানিয়া নদীর ধারে গেলে চোখে পড়ে নলরাজার গড়ের ধ্বংসাবশেষ।
ঐতিহাসিকদের দাবি, গড়টি গুপ্তযুগে নির্মিত হয়েছিল।কারণ, গুপ্ত স্থাপত্যের সাথে প্রচুর মিল রয়েছে মাটির গর্ভে বলীন হতে বসা ওই ঐতিহাসিক গড়ের। পরবর্তীকালে পাল যুগেও ব্যবহার করা হয়েছে ওই গড়। ষাটের দশকে প্রত্নতত্ত্ববিদ পরেশ চন্দ্র দাশগুপ্তের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছিল খননকার্য ও গবেষণা। এমনকি সবুজে ঢাকা ওই গড়ের গুরুত্ব অনুধাবন করেছিলেন খোদ সুনীতি চট্টোপাধ্যায় পর্যন্ত।
গবেষণায় জানা গিয়েছে, নলরাজার গড়ের ইটগুলি ব্ল্যাক ব্যাসল্ট।তবে গড়টি ঠিক কীভাবে ধংস হয়েছিল তার কোনো তথ্য প্রমাণ আজও নেই। ষাটের দশকের পর ওই গড় নিয়ে আর কোনো গবেষণা বা খননকার্য হয়নি।লোকশ্রুতি আছে, পৌরাণিক উপাখ্যান নল-দময়ন্তীর নল রাজার নামেই নাকি ওই গড়ের নামকরণ।
তবে আদৌও কী এই গড়ের কোনো সংরক্ষণ হবে, নাকি চরম অবহেলায় বনের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে একটি আস্ত ইতিহাস? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে চিলাপাতা অরণ্যের আকাশে বাতাসে। নল রাজার গড় স্থাপত্য ও নিদর্শন দিক দিয়ে বিচার করলে ভারতবর্ষের দূর্গ নগরীর মধ্যে নল রাজার গড় একটি উল্লেখযোগ্য বলে জানান ভূপ্রত্নবিদ্যার গবেষক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ রায়।
আরও পড়ুনঃ পরিযায়ী শ্রমিক জব কার্ডের মাধ্যমে ১০০ দিনের কাজ পাবেনঃ রাজীব
তিনি জানান, “নল রাজার গড় নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা করা প্রয়োজন রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পুরাতাত্ত্বিক দফতরের নির্দেশনায় ১৯৬০-৬১ সালে এবং ১৯৬৬-৬৭ সালে দুটি অভিযান এই নলরাজার গড়ে হয়েছিল। এইসময় যেসমস্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গিয়েছিল তার ভিত্তিতে সুস্পষ্ট ভাবে বলা যায় এর স্থাপনকাল গুপ্ত যুগে।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584