মনিরুল হক,কোচবিহারঃ
তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতিকে হাতের কাছে পেয়ে দলে যোগদানের আবেদনপত্র নিয়ে হাজির হলেন নির্দল জনপ্রতিনিধি ও তাঁদের অনুগামীরা।আজ রাতে দিনহাটার গীতালদহে একটি রাসমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে যান তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।ওই অনুষ্ঠান শেষে পাশেই একটি জায়গায় নির্দল পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি আবেদনপত্র নিয়ে দেখা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতির সাথে।সেখানে আশ্বাস দিয়ে আসার পথে ভেটাগুড়ির কাছে পুটিমারি খারিজা বালাকুড়া গ্রামে জমায়েত হয়ে থাকা নির্দল জনপ্রতিনিধিদের সাথেও দেখা করেন তিনি।
দুই জায়গাতেই মন্ত্রী আবেদনপত্রকারীদের নাম ঘোষণা করে তাঁদের উদ্দেশ্যে জানান, “আগামী কাল কোলকাতায় যাচ্ছি।সেখানে আপনাদের সকলের আবেদন পত্র নিয়ে কথা বলবো।এরপর ফিরে এসে আনুষ্ঠানিক ভাবে সবাইকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।আর মনের মিল হয়ে গেলে এত কাগজপত্রের দরকার হয় না।” মন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা এক সাথেই ছিলাম।মাঝে কিছু ভুল বোঝাবুঝির জন্য সমস্যা হয়েছিল। এখন আবার আমরা একসাথে বিজেপির মত সাম্প্রদায়িক দলকে কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে উপড়ে ফেলে দেবো।”
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মূলত কোচবিহারের দিনহাটায় তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠী মাদার ও যুব’র মধ্যে লড়াই শুরু হয়। অনেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি হাতে নিয়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।দিনহাটা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির বেশীর ভাগ আসনে জয়ী হন নির্দল প্রার্থীরা। সেখান ১৬ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২ টি নির্দল দখল করতে সক্ষম হয়।ওই এলাকা থেকে জেলা পরিষদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও জয়ী হন একজন নির্দল প্রার্থী। নির্বাচন ও পরবর্তী সময়ে বোর্ড গঠন নিয়ে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ঐ এলাকায়। দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৩ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন বহু কর্মী সমর্থক। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর পর দুবার কোচবিহারে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে দিনহাটার ওই গণ্ডগোল পুলিশকে কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বলেন কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছিল না।শেষ পর্যন্ত যুব আড়ালে ওই নির্দলদের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিশীথ প্রামানিককে দল থেকে বহিষ্কার করার কথা ঘোষণা কড়া হয়। এরপরে সম্প্রতি কোচবিহার রাসমেলার মাঠে সভা করতে এসে সরব ভারতীয় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে কড়া বার্তা দিয়ে যান। এই নির্দলদের যারা পকেট ভরাতে আসবেন না, তাঁদের দলে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে দায়িত্ব দিয়ে যান। ওই সভার পর দিনহাটায় গেলে দলে দলে নির্দলরা যোগদানের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কাছে আবেদন পত্র নিয়ে হাজির হয়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584