করোনা ভাইরাসে ফ্যাকাসে সিনেমা হলের রঙিন দুনিয়া

0
45

শিবশঙ্কর চ্যাটার্জ্জী, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

রাস্তায় ভিড় বাড়ছে। বাসে, অটো, টোটোতেও দেখা যাচ্ছে গাদাগাদির ছবি! তবু এখনও লকডাউনে আবদ্ধ সিনেমা হল গুলি। সিনেমা হল গুলোকে দেখলে এখন মনে হয় যেন ভূতের হানাবাড়ি। কবে খুলবে জানা নেই কারোর, সমস্যায় হল কর্মীরা।

Cinema Hall | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

একেই মাল্টিপ্লেক্সের দাপটে পুরোনো সিঙ্গেল স্ক্রিনের সিনেমা হলগুলো সংকটের মধ্যে পড়ে খাবি খাচ্ছে। তবু এর মধ্যেও মফস্বল এবং আধা মফস্বল ও জেলা সদরের সিঙ্গেল স্ক্রিনের সিনেমা হল গুলি কোন ক্রমে বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে আসছিল। এই লড়াইয়ে অনেক সিনেমা হল নিজেদের লড়াই জারি রাখতে না পারার দরুন বন্ধ করে দিতেও বাধ্য হয়েছিল। কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে ঘরে বসে রয়েছেন বহু কর্মী।

তবুও কোনক্রমে দাঁতে দাঁত চেপে কিছু সিনেমা হল এখনও মাথা উঁচু করে বেঁচে ছিল।কিন্তু এবার গোদের উপর বিষ ফোড়ার মত মাথা চাড়া দিল করোনা। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউনের কোপে সেই বেঁচে ওঠার লড়াই দূর অস্ত। অস্তিত্বই টেকে কিনা সেটাই দেখার। দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে বন্ধ হলের ঝাঁপ। সংকট বাড়ছে হল কর্মীদের।

আরও পড়ুনঃ ঝাড়গ্রাম জেলাশাসককে ডেপুটেশন না দিয়েই ফিরতে হল সায়ন্তনদের

বালুরঘাটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হল কর্মীর অভিযোগ, সবই ধীরে ধীরে খুলে যাচ্ছে। কোথায় মানা হচ্ছে সোশ্যাল ডিস্টেন্স? কোনও বালাই নেই। কী বাস, কী অটো বা টোটো, বাজারে, একই হাল সর্বত্র। অথচ বন্ধ করে রাখা হয়েছে সিনেমা হল। আক্ষেপের স্বরে তাকে বলতে শোনা গেল এখনও পর্যন্ত সরকার খোঁজই নেয়নি তাদের। দেখা মেলেনি নেতা, মন্ত্রীদের। এখনও মালিকেরা ক্ষেপে ক্ষেপে কিছু কিছু করে বেতন দিয়ে আসছে। তা দিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে সঙ্কট বাড়ছে।

কিন্তু মালিকের ও তো দেওয়ার একটা শেষ আছে। তারও তো কোন রোজগার নেই অথচ বিদ্যুৎ বিল থেকে সিনেমা হলের আনুষঙ্গিক খরচ মেটাতে হচ্ছে। তিনিই বা পাবেন কোথায়। তাই হয়তো সেদিন আর বেশি দূর নয় যেদিন মালিককে থেমে যেতে দেখবে সিনেমা হল কর্মীরা। তারপরের অন্ধকারের দিনের কথা চিন্তা করলেও পরিবার নিয়ে শিউরে উঠতে হয় বলে তিনি প্রায় কেঁদেই ফেললেন।

আরও পড়ুনঃ বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচিকে ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড আলিপুরদুয়ারে

লকডাউনের জেরে গত ১৭ মার্চ থেকে পাঁচ মাস ধরে বন্ধ রাজ্যের সিনেমা হলগুলি। দিন দিন আর্থিক ক্ষতির বহর বেড়েই চলেছে। কর্মীদের বেতন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন অনেক হল মালিক। অনেকে আবার হলের বিদ্যুতের বিল দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়ে এই বাংলার বিভিন্ন জেলার সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হলগুলি। শুধু সিনেমা হল খোলাই নয়, দর্শক কবে থেকে আগের মতো সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখার সুযোগ করতে পারবেন তা নিয়েও প্রচুর সংশয় রয়েছে।

সম্প্রতি টুইটারে ৬ হাজার ৪০০ জনের মধ্যে একটি সমীক্ষা করে দেখা হয়। যেখানে তাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে সিনেমা হল খোলার কতদিনের মধ্যে তারা হলে যাবেন? সেক্ষেত্রে ১৪ শতাংশ বলেছেন এক সপ্তাহের মধ্যে, ৪ শতাংশ বলেছেন ১৫ দিন পর, ১৭ শতাংশ ভোট দিয়েছেন এক মাসে। বাকি ৬৬ শতাংশ এর কোনওটাই করতে রাজি নন বলে ভোট দিয়েছেন। অর্থাৎ সিংহভাগ দর্শকই এখন হলে যেতে চাইছেন না।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here