শ্রীরামপুরে সরাকারি অনুমোদনহীন চিড়ে কল বিরোধী অভিযান

0
208

শ্যামল রায়,বর্ধমানঃ

ক্ষুদ্র শিল্পের অন্তর্ভুক্ত একাধিক চিড়ের কল রয়েছে শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। কিন্তু এই চিড়ের কল থেকে ধোঁয়া এবং ছাই এলাকায় যেভাবে  পরিবেশ দূষণ হচ্ছে বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের। শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে শুরু করে চাঁদপুর গ্রামীণ হাসপাতাল পর্যন্ত সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এলাকার প্রতিটি রাস্তা বাড়ির উঠানে চিঁড়ের কলের ছাই ভর্তি হয়ে থাকে। কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়ায় এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। চিঁড়ের কলের  ছাই নিয়ে বহুবার আন্দোলন হয়েছে কিন্তু আজও পর্যন্ত কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
শুক্রবার শ্রীরামপুর গ্রামের উত্তর শ্রীরামপুর মোড় থেকে বেশ কয়েকটি চিড়ে কল পরিদর্শন করে জানা গিয়েছে যে এদের কোন সরকারি ব্যবসায়িক সার্টিফিকেট নেই।

নিজস্ব চিত্র

তবুও বহালতবিয়তে এলাকার একাধিক  চিড়ের কলের মালিক  দিনের পর দিন চিড়ের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রীরামপুর বৈদ্যুতিক অফিস সংলগ্ন সুকুমার দাসের চিড়ে  কলে গিয়ে দেখা গেল যে প্রচুর পরিমাণ চিড়ে তৈরি করা হচ্ছে এবং বস্তা ভরা হচ্ছে। অন্যদিকে মেশিনের পাম্প দিয়ে শুরু করে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। উড়ছে ছাই। চিঁড়ের ছাইয়ে গোটা শরীরটা ভরে যায়। বাড়ির উঠোনে বা যেকোনো ফসলের জমিতে বেশ বোঝা যায় কিভাবে চিড়ের কলের ছাইয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পূর্বস্থলী ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি এই বিষয়ে পরিবেশ দূষণ বন্ধ করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।বিশ্বজিৎ রায় আরও জানিয়েছেন যে পাঁচ বছর আগে এলাকার পাঁচটি চিঁড়ের কলের মালিক ট্রেড লাইসেন্স অর্থাৎ রেজিস্টার করিয়েছিল। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে আজও পর্যন্ত ওই সব রেজিস্ট্রিকৃত চিড়ের কলের মালিক নতুনভাবে রিনিউ করেনি। আমরা সমস্ত চিড়ের কলের মালিকদের জানিয়েছে যে তারা যেন অতি দ্রুত ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেন।আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি ইতিমধ্যে সমস্ত চিড়ে কলের মালিকদের সাথে আলোচনা যেমন হবে তেমনি তাদের ব্যবসায়িক সার্টিফিকেট নেওয়ার কাজ শেষ করতে হবে। যে সমস্ত চিড়ের কলের মালিক ব্যবসায়িক সার্টিফিকেট গ্রহন করবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরো জানা গিয়েছে যে এই এলাকায় কমপক্ষে ২৫ টি বড় ধরনের চিঁড়ের কল রয়েছে। এর মধ্যে এখনো পর্যন্ত ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার ব্যাপারে কোন মালিক এগিয়ে আসেননি। এছাড়াও বিশ্বজিৎ রায় আরও জানিয়েছেন যে চিড়ে কলের দূষণ বন্ধ করার ব্যাপারেও মালিকদের দেখে খুব শীঘ্রই একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ে। কারণ চিড়ের কলের ধোঁয়া এবং ছাই এলাকায় পরিবেশ দূষণ হচ্ছে বলে অভিযোগ এরপর অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
আরো জানা গিয়েছে যে কালনা মহাকুমা জুড়ে বেশ একাধিক মুড়ি ভাজার কল রয়েছে। মহাকুমা জুড়ে অধিকাংশ মুড়ি ভাজার কলের মালিকরা ট্রেড লাইসেন্স নেয়নি।

নিজস্ব চিত্র

তাই আগামী দিন প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে সরকারি অনুমোদন নিয়েই এই সমস্ত ব্যবসায়িক কাজ করতে হবে মালিকপক্ষ দের।
সিরিয়ার কলের শ্রমিকরা জানিয়েছেন যে এই চিড়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা ছাড়াও বাইরে রাজ্যগুলোতে এখানকার চিড়ে চলে যাচ্ছে‌। স্থানীয় সুকুমার দাস এর চিঁড়ের কলে মোট ১৭জন শ্রমিক চিড়ে কলে কাজ করে জীবন জীবিকা অর্জন করে ।
তবে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে মালিকদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের।
যদিও ঐ সমস্ত চিঁড়ের কলের শ্রমিকরা জানিয়েছেন যে তারা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পারিশ্রমিক পান না। অথচ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদের কাজ করতে হয়। ইউনিয়ন থাকা সত্ত্বেও মালিকদের সাথে শ্রমিকদের সমস্যা মেটানোর উদ্যোগ চোখে পারিনি বলে শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ। তবে মালিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে আগামী দিন চিরের কল থেকে পরিবেশ দূষণ যাতে না হয় সে ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে এবং শ্রমিকদের কাজ যাতে না যায় সে ব্যাপারেও নিশ্চিত হবার একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here