শুভশ্রী মৈত্র, ওয়েব ডেস্কঃ
দেরাদুনের অন্তত ১৫০টি মন্দিরে অ-হিন্দুদের প্রবেশে ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি করে ঝোলানো হল নির্দেশিকা। হিন্দু যুব বাহিনী নামে এক অতি দক্ষিণপন্থী সংগঠনের সদস্যরা ওই নির্দেশিকার নথি ঝুলিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি প্রশাসনের বক্তব্য।
আগামী দিনে উত্তরাখণ্ডের সমস্ত মন্দিরেই এমন ব্যানার লাগানো হবে বলে সংগঠনটির তরফে জানানো হয়েছে। তারা আরো জানিয়েছে যে, সেখানে স্পষ্ট করে বলা থাকবে সনাতন ধর্মের মানুষ ছাড়া আর কেউ মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবে না।
সম্প্রতি গাজিয়াবাদের দাসনায় দাসনাদেবী মন্দিরে এক মুসলিম যুবকের জল খেতে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়। দাসনার ওই মন্দিরে ‘মুসলিমদের প্রবেশ নিষেধ’ লেখা একটি বোর্ড ছিল। অভিযোগ, বোর্ডটি থাকা সত্বেও মন্দিরে প্রবেশ করে মন্দিরের কল থেকে জল খেয়েছিলেন ওই যুবক।
আরও পড়ুনঃ প্রথম ক্যাবিনেট মিটিং- এই কার্যকর হবে সিএএ
এর শাস্তিস্বরূপ মন্দিরের পুরোহিতের নির্দেশে নিগ্রহ করা হয় ওই যুবককে। সোমবার সকালে দেরাদুনের চাকার্তা রোড, শুদ্ধওয়ালা, প্রেম নগর এলাকার মন্দিরগুলিতে এই নির্দেশিকা ঝোলানো হয়। মনে করা হচ্ছে, মন্দিরে ঢুকে মুসলিম যুবকের জল খাওয়ার ঘটনার জেরেই এমন সিদ্ধান্ত।
হিন্দু যুব বাহিনীর রাজ্য সম্পাদক জিতু রান্ধওয়া জানিয়েছেন, দাসনার মন্দিরের পুরোহিত জাতি নরসিংহানন্দর সমর্থনেই এই পোস্টার লাগানো হয়েছে। বিএসপির এক বিধায়ক, ধৌলানা আসলাম চৌধুরী দাসনা দেবী মন্দিরে মুসলিম যুবককে নিগ্রহের ঘটনায় পুরোহিতের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন ।
আরও পড়ুনঃ সরকারি পরিবহণে টিকিট লাগবে না মহিলাদের, ঘোষণা বিজেপির ইস্তেহারে
দাসনাদেবীর মন্দিরকে তাঁর পূর্বপুরুষের সম্পত্তি বলে দাবি করে আসলাম বলেছিলেন, তিনি দাসনার মন্দির থেকে অবিলম্বে ওই পোস্টার সরানোর ব্যবস্থা করবেন। যাতে অ-হিন্দুদের মন্দিরে প্রবেশে কোনও বাধা না থাকে। হিন্দু যুব বাহিনীর জিতু জানিয়েছেন, আসলামের ওই হুমকির প্রতিবাদে এবং দাসানার মন্দিরের পুরোহিতের সমর্থনে উত্তরাখণ্ডের সমস্ত মন্দিরের বাইরে এই নির্দেশিকা ঝোলাবেন তাঁরা। জিতু বলেন, ‘‘মন্দির সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী মানুষজনের শ্রদ্ধার স্থান। তাই শুধু সনাতন ধর্মের মানুষজনেরই মন্দিরে প্রবেশের অধিকার থাকা উচিত।’’
উত্তরাখণ্ডে রয়েছে অজস্র মন্দির। হিন্দুধর্মের চার ধাম কেদারনাথ, বদ্রিনাথ, গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রীও এই উত্তরাখণ্ডেই। দেশ বিদেশ থেকে বিভিন্ন ধর্ম ও জাতির মানুষ আসেন এই তীর্থদর্শন করতে। ‘অ-হিন্দুদের প্রবেশ নিষেধ’ ব্যানার লাগিয়ে কি তাদেরও আটকানো হবে? মন্দির কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে কোন বক্তব্য জানায়নি। সর্বোপরি, গোটা ঘটনায় এখনো নীরব প্রশাসন। ব্যক্তিগত ধর্ম পালনের পরিসর কি এবার দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে চলেছে? প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584