হেমন্ত জানা
হরিনাম সংকীর্তনের শব্দ এলে আর রতেকে ঘরে রাখা যায় না। যত দূর হোক যাবেই। কতবার আমিই তাকে ধরে এনেছি। রতে আমার ভাই। একই ঘরে, একই বিছানায় শুই। মা বলে, ‘ছেলেটা পড়াশোনা করে চাকরি পেল না। হরি নিয়ে যদি ভুলে থাকে তো থাক!’ সেদিন দেখি ভাই রসকলি এঁকে ধুতি পরে ঘুরছে। মা বলল, ‘দীক্ষা নিয়ে ফেলছে। সকালে ওঠে এখন মালা জপতে বসে।’
একটা লগ্নিকারী কোম্পানিতে আমি চাকরি করি। টাকা–পয়সা নিয়ে কারবার। রাতেও অফিসের কর্তাদের ফোন আসে। দু–বার বড় চোট হয়ে গেছে। পুলিশ একটারও কিনারা করতে পারেনি! একবার আমার কাছ থেকেই হল। একটা পার্টিকে টাকা দেওয়ার কথা ছিল। হেলমেট পরা চারজন মোটরবাইকে এসে আটকাল। কাপালে বন্দুক ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগ নিয়ে পালাল।
সেদিন বাড়িতে ঢুকতেই মায়ের কান্না। কী হয়েছে খোঁজ নিতে জানা গেল, ভাই সন্ন্যাস নিয়ে চলে যাচ্ছে। শুনে আমারও মনটা রাখাপ। হাজার হোক ছোট ভাই। একই ঘরে রাত কাটানো। ভোরেই গৃহত্যাগ করবে। রাতে আমার ঘরে এসে কেঁদে উঠল ভাই ‘আর সে ডাক অগ্রাহ্য করতে পারলাম না রে দাদা। তিনি বড় টানছেন।’ আমিও ভাইকে জড়িয়ে কেঁদে ফেললাম।
আরও পড়ুনঃ পরিযায়ী
ভাইকে বিদায় জানাতে ভোরে উঠেছি। ঘুমে চোখ টানছে, শুয়ে আছি, এমন সময় ম্যানেজারের ফোন। তাড়াতাড়ি এসো থানায় যেতে হবে। ডাকতির গ্যাংটা ধরা পড়ছে। থানায় ঢুকেই চমকে উঠলাম। এ কাকে দেখেছি! বাকিরাও তো চেনা। সেদিন টাকা নিয়ে পালানোর সময় একজনকে দেখেছিলাম হেলমেট ছাড়িয়ে ঘাড় পর্যন্ত চুল। সে যে আমরাই ভাই বুঝতে পারিনি। পুলিশের সন্দেহ এখন আমার দিকেই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584