আদিবাসীদের পায়ে জড়িয়ে ধরলেন এক পদস্থ সরকারি আধিকারিক

0
222

নিজস্ব সংবাদদাতা ,ঝাড়গ্রাম:

অধুনা ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড় । পরিবর্তন আগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার লালগড় ছিল খবরের শিরোনামে । ফের আবার খবরের শিরোনাম লালগড় । জঙ্গলমহল এলাকার মাওবাদী আন্দোলনের প্রাণ কেন্দ্র। সেখানে আন্দোলনের শুরুর দিকে তৎকালীন পুলিশ সুপারকে এলাকায় এসে নাকে খত দিয়ে তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন আদিবাসিরা। তা করেন নি পুলিশ কর্তারা। তার জেরে আন্দোলন ছড়িয়ে পরে জঙ্গল মহল এলাকাতে।

তার দশ বছর পরে, সেখানে যখন বাঘ আর হাতি ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই সময় আদিবাসীদের পায়ে জড়িয়ে ধরলেন এক পদস্থ সরকারি আধিকারিক। যিনি আদিবাসী মানুষের পা ধরলেন তিনি মেদিনীপুর বন বিভাগের সহকারী বিভাগীয় আধিকারিক পূরবী মাহাত।

লালগড়ে এখন বাঘের আতঙ্ক, এলাকার ঘুরে বেড়াচ্ছে হাতির দলও । তারই মাঝে মঙ্গলবার থেকে শিকারে যেতে শুরু করেছেন এলাকার আদিবাসীরা। তাদের নিরস্ত করতে পা ধরলেন পুরবী মাহাত নামে এই আধিকারিক।
মার্চ-এপ্রিলের এই সময়টাতেই জঙ্গলে দল বেঁধে শিকারে বের হন আদিবাসীরা। এটাই তাঁদের পরম্পরা। সেই পরম্পরা মেনে মঙ্গলবার সকাল থেকেই আদিবাসীরা শিকারে বেরিয়ে পড়েন লালগড়, শালবনী , গোয়ালতোড় এলাকার জঙ্গলমহলে। এলাকায় বাঘ ও হাতি থাকার কারণে নিষেধ করা হয়েছিল জঙ্গলে যেতে। তাছাড়া বন্যপ্রাণী হত্যা বেআইনি। কিন্তু কে শোনে কার কথা ! মঙ্গলবার সকাল থেকেই দলবেঁধে আদিবাসীদের জঙ্গলে শিকার করতে যাওয়ার খবর পৌঁছয় লালগড় বনাঞ্চলের অফিসে। সেই খবর পেয়ে পুলিশ ও বন নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে আদিবাসীদের বোঝাতে যান পূরবী মাহাতো।

আরও পড়ুন  নবদ্বীপ ভারতী চতুষ্পাঠী সংস্কৃতি মহাবিদ্যালয়ের রৌপ‍্য জয়ন্তী

বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে প্রথমে তিনি আদিবাসীদের জঙ্গলে গিয়ে বন্যপ্রাণীদের হত্যা না করার জন্য অনুরোধ করেন। তা সত্ত্বেও আদিবাসীরা শিকারের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় এক আদিবাসী দলনেতার পায়ে পড়ে যান পূরবীদেবী । একটাই অনুরোধ, শিকারে গিয়ে বনের প্রানীদের মারবেন না।

সরকারি আধিকারিক এভাবে পায়ে পড়ে যেতে শিকারে বেরনো আদিবাসীরাও কিছুটা হকচকিয়ে যান। কিছুটা কাজের কাজও হয়। অপ্রস্তত হয়ে গিয়ে বৃদ্ধ ওই আদিবাসী নেতা পূরবীদেবীকে উঠিয়ে নেন। শেষ পর্যন্ত আদিবাসীদের ওই দলটি শিকার না করেই ফিরে যায়।

বন দপ্তরের কর্তারা বলছেন যেভাবে এই আধিকারিক তার কর্তব্য পালন করতে গিয়ে যেভাবে এক বয়স্ক ব্যক্তির পা ধরে তাদের বুঝিয়ে নিরস্ত করলেন তা এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here