হরষিত সিং,মালদা:-
খোকা রবিদাসের দেহ কধে নিয়ে শ্মশানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন বাবলু শেখরা। হিন্দু মুসলিম ভেদাভেদ ভুলে গ্রামের এক মাত্র অসহায় হিন্দু পরিবারের পাশে এই ভাবেই দাঁড়াল স্থানীয় মুসলিম যুবকেরা।
মুসলিম ভাইদের হাত ধরে আদায় করা চাঁদার টাকাতেই গঙ্গা লাভ করলেন অসহায় ওই বৃদ্ধ। সম্প্রতি এমনি এক নজির বিহীন ঘটনার সাক্ষী রইল মালদার কালিয়াচক থানার পাগলাটোলা গ্রাম। শনিবার সন্ধ্যায় মারা যান পয়ষট্টি বছরের বৃদ্ধ খোকা রবিদাস। তার তিন ছেলে থাকলেও বৃদ্ধ খোকা ও তাঁর স্ত্রী বেদন রবিদাসকে ছেড়ে চলে য়ায় সকলে। বাড়ি ছাড়ার পর কোন ছেলেই আর ফিরে দেখেনি বৃদ্ধ বাবা মার দিকে। পেটের দায়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতেন বৃদ্ধ এই দম্পতি। অবশেষে প্রকৃতির নিয়মে শনিবার সন্ধ্যায় জীবন যুদ্ধ থেকে অবসর নেয় খোকা রবিদাস। স্বামীর মৃত্যুর পর দেহ নিয়ে চরম সমস্যায় পড়েন বেদন রবিদাস। তিন ছেলে আগেই সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, নেই কোন আত্মীয় পরিজনদের খোজ। পাগলাটোলা গ্রাম মুসলিম পাড়া হিসাবে পরিচিত। সেখানে একটি মাত্র ঘরে বাস এই বৃদ্ধ দম্পতির। এমন অবস্থায় স্বামীর কাজ কে করবে এই নিয়ে চিন্তায় পড়েন বৃদ্ধা। তবে কোন সমস্যা হয়নি। হিন্দু অসহায় বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়ি পৌঁছে যায় একদল স্থানীয় যুবক। তারাই উদ্যোগ নেয় শ্মশান যাত্রার। বৃদ্ধার মুখে রীতি রেওয়াজ শুনে সকলে মিলে শুরু কর আযোজন। শ্মশান খরচের টাকা জোগাড় করতে বাড়ি বাড়ি তোলা হয় চাঁদা। স্থানীয় যুবকদের উৎসাহ দিতে এগিয়ে আসেন স্থানীয় পঞ্চায়েৎ সদস্য বাবলু শেখ। ব্যবস্থা করে দেন সমব্যথী প্রকল্পের টাকা। চার মুসলিম যুবক দেহ কাধে নিয়ে হাজির হয় স্থানীয় পাগলা শ্মশানে। সমস্ত নিয়ম মেনে শব দাহ করা হয় শ্মশান ঘাটে। সমাজের এক শ্রেণীর মানুষের শত চেষ্টাতেও হিন্দু-মুসলিম সম্প্রতি যে এখনো অক্ষুন্ন- তারই প্রমান কালিয়াচকের এমন মানবিক কাজ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584