বদরুল আলম, নিউজফ্রন্ট:
ছোটবেলায় শেখা সাঁতার ৬১ বছর বয়সে যে তার প্রাণ বাঁচাবে ভাবতেও পারেননি তপতি দেবী। পেশায় শিশুশিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকা। সারা রাত ৫০ কিলোমিটার জলে সাঁতার দিয়ে বেঁচে রইলেন তিনি।
ছোটবেলায় শেখা সাঁতারের জোরে প্রবল স্রোতকে উপেক্ষা করে শরীরটাকে ভাসিয়ে রাখেন। হাত তুলে কয়েকবার পাড়ের লোকজনের প্রতি ইশারাও করেন তিনি। কিন্তু অন্ধকারে কেউই তাঁকে দেখতে পাননি। স্রোতের টানে ভেসে যেতে থাকেন তপতীদেবী। দামোদর নদ হয়ে স্রোতের বেগ তাঁকে টেনে নিয়ে যায় মুণ্ডেশ্বরী নদীতে। বাড়তে থাকে রাত। ভাসতে থাকেন তপতীদেবী। বর্ধমান, রায়না, জামালপুর, হয়ে হুগলি জেলায় প্রবেশ করেছেন কখন, বুঝতেই পারেননি। পাড়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পারেননি। জলের সঙ্গে লড়তে লড়তে কখন যে ভোরের আলো ফুটে গিয়েছে টের পাননি বৃদ্ধা। হাত-পা অসাড় হয়ে এসেছে তখন। দম ধরে রাখতে পারছেন না। কিন্তু কথায় আছে রাখে হরি মারে কে। সকলের আলো ফুটতেই নজরে পড়ে কিছু মানুষ । কোনওক্রমে হাত দিয়ে ইশারা করেন তপতীদেবী। পাঁচ-ছয়জন মিলে তাঁকে টেনে তোলেন জল থেকে। ঘটনাস্থল হুগলির পুড়শুরার মারকুণ্ডা ফেরিঘাট। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান হুগলী জেলা পরিষদের সভাধীপতি হাজী মেহেবুব রহমান । তিনি একটা ভুটভুটিতে করে স্থানীয় গ্রামীণ হসপিটালে নিয়ে যাওয়ারও ব্যবস্থা করেন ।ভুটভুটিতে ওঠার পর প্রায় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তিনি। নাক দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। তাঁকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় ডাক্তার দেখে ওষুধ ইনজেকশন দেন। গরম দুধ, চা খেতে দেওয়া হয় । তাঁকে উদ্ধার করে তারকেশ্বরে তাঁর বোনের ঠিকানায় খবর দেন উদ্ধারকারীরা। তার পর বর্ধমানের বাড়িতেও যোগাযোগ করা হয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তপতীদেবীকে এদিনই বর্ধমানে নিয়ে আসেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584