শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
ইন্টারনেটের দৌলতে এখন প্রতারণার ফাঁদ ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বজুড়ে। আর সেই ফাঁদকে হাতিয়ার করেই কলকাতায় বসে ইংল্যান্ডে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি করে ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল এক যুবক।
বেসরকারি ব্যাঙ্কের তরফে এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয় শেক্সপিয়র সরণি থানায়। বুধবার রাতে বেহালায় অভিযুক্ত গৌরব শেঠওয়ানির বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় প্রায় ৭ কোটি টাকা।
বেসরকারি ওই ব্যাঙ্কের কাছে এই জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ্যে আসে গত আগস্ট মাসে। তাদের কলকাতা দফতর থেকে ওই প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছিল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে।
আরও পড়ুনঃ একবালপুর হত্যাকান্ডঃ সাত দিনের লড়াই শেষ, মৃত্যু আহত তাইবার
কলকাতা পুলিশ শেক্সপিয়র সরণি থানায় ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। বুধবার রাতে পুলিশ গৌরবের বাড়িতে হানা দেয়। উদ্ধার হয় জালিয়াতির ৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
কিন্তু কি ভাবে এই বিপুল মাপের প্রতারণা একা বাড়িতে বসে করল গৌরব? বেসরকারি ব্যাঙ্কটিকে জন্মসূত্রে ভারতীয় কিন্তু ইংল্যান্ডের নাগরিক অভিযোগ জানান, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ভারতীয় অর্থমূল্যে প্রায় ৮৭ লাখ টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ অক্টোবরের শুরুতে তিন দিন বন্ধ থাকবে শিয়ালদহ উড়ালপুল
এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাকে ফোন করে তাকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলেন। ওই অ্যাপ ডাউনলোড হওয়ার পরেই গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েক দফায় মোটা অঙ্কের টাকা উধাও হয়ে যায়।
তদন্তকারীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, ওই লিঙ্কে ক্লিক করা মাত্র গ্রাহকের মোবাইলের সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণ চলে যায় প্রতারকের হাতে। আর সেই নিয়ন্ত্রণ নিয়েই মোবাইল ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা লোপাট করেছে জালিয়াতরা।
আরও পড়ুনঃ হাথরাস গণধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে সরব মমতা
অ্যাকাউন্টগুলোর পুরনো লেনদেন খতিয়ে দেখতে গিয়ে তাজ্জব হয়ে যান তদন্তকারীরা। দেখা যায়, বছর দুয়েক ধরে প্রতিটি অ্যাকাউন্টই ব্যাঙ্কিং পরিভাষায় ‘ডরম্যান্ট’ বা নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেই একটি অদ্ভুত মিল খুঁজে পান তদন্তকারীরা।
দেখা যায়, প্রতিটি অ্যাকাউন্টই একটি নির্দিষ্ট সময়ে হঠাৎ সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং সেখানে ইংল্যান্ড থেকে মোটা অঙ্কের টাকা জমা পড়েছে। টাকা জমা পড়ার পর পরই তা আবার চলে গিয়েছে অন্য অ্যাকাউন্টে।
ওই সূত্র ধরে তদন্ত করতে গিয়েই গোয়েন্দারা একাধিক এটিএমের হদিশ পান, যেখান থেকে ওই ‘ভাড়া’-র অ্যাকাউন্টে আসা টাকা তোলা হয়েছে। সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে প্রাথমিক ভাবে সনাক্ত করা হয়। তাদের সূত্র ধরেই গৌরবের হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584