পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
অপহরণের নাটক করে বাবার কাছ থেকে টাকা হাতানোর চেষ্টা করেছিল ছেলে। কিন্তু চেষ্টা সফল হয়নি। অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় সে। অভিযুক্ত ছেলে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের সিউড়ি থানার গরুঝাড়া গ্রামে। অপহরণ কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার অভিযুক্ত যুবকদের আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
সিউড়ি থানার পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার রাতে গরুঝড়া গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ খানের মোবাইলে তার ছেলে আমির খানকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ফোন আসে। অপহরণকারীরা জানায়, ছেলেকে ফেরত পেতে হলে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। একটুও সময় নষ্ট না করে সিরাজ সিউড়ি থানায় ছেলের অপহরণের অভিযোগ জানায়। সিউড়ি থানার পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত তদন্ত শুরু করে।
রবিবার সকালে অপহরণ কান্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অপহরণকারীদের সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পুলিশের হাতে আসে। এর পরেই পুলিশ অপহরণকারীদের হাতেনাতে ধরার জন্য ফাঁদ পাতে। পুলিশের নির্দেশেই টাকার জন্য দ্বিতীয়বার অপহরণকারীদের ফোন এলে সিরাজ খান যেন তাদের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময়ে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডেকে নিয়ে আসে।
আরও পড়ুনঃ চিন-বিরোধীতায় সংস্থার টি-শার্ট পোড়ালেন জ্যোমাটো কর্মীরা
মুক্তিপণের টাকা নিতে অপহরণকারীরা পুলিশের ফাঁদে পা দেয়। রবিবার রাত আটটা নাগাদ অপহরণকারীদের মুক্তিপণ দেওয়ার জায়গায় পুলিশ সাদা পোশাকে আগে থেকেই পৌঁছে যায়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর মুক্তিপণের টাকা সিরাজ খান যখন অপহরণকারীদের হাতে তুলে দিতে যায়, তখন চারিদিক থেকে অপরাধীদের ঘিরে ধরে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে তিনজন যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশ তিন যুবককে গ্রেফতার করার পর তাজ্জব বনে যায়। তিনজনের মধ্যে একজন সিরাজ খানের নিজের ছেলে আমির খান, যার অপহরণ করা হয়েছে বলে সিরাজ খানের কাছে ফোন আসে। ছেলের এই কীর্তি জেনে ভেঙে পড়েছেন বাবা।
আরও পড়ুনঃ মন্দারমনি সমুদ্র সৈকতে উদ্ধার বিশাল আকারের তিমি
বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জানিয়েছেন, আমির খান কেন এরকম করল, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। সিরাজ খান জানান, ‘শনিবার সন্ধ্যায় তার স্ত্রীর সঙ্গে টাকা চাওয়া নিয়ে একপ্রস্থ অশান্তি হয়েছিল আমিরের। তারপরে ছেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে যায়। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো এমনি রাগ করে গেছে, আবার চলে আসবে। কিন্তু তো মনের মধ্যে এ ধরনের অপরাধ করার প্রবণতা ছিল তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584