হাসপাতালের বেড থেকে পড়ে ক্যান্সার আক্রান্ত কিশোরীর অকাল মৃত্যু!

0
56

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে এসে যে এরকম মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হবে, তা ভাবতে পারেনি উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের মহিষপোতার বাসিন্দা বছর তেরোর ফাল্গুনী দেবনাথের পরিবার। হাসপাতালের গাফিলতির দিকেই অভিযোগ পরিবারের।

Falguni Debnath | newsfront.co
ফাল্গুনী দেবনাথ

জানা গিয়েছে, সোমবার এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ওই সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে। অভিযোগ, ক্যান্সার বিভাগ বা ফিমেল মেডিসিন বিভাগে কোনও বেড ফাঁকা না থাকায় জরুরি বিভাগের পাশে এমার্জেন্সি অবজারভেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় ফাল্গুনীকে।

এদিকে ভর্তির পর একবারের জন্য চিকিৎসকরা ফাল্গুনী দেখেনি বলে অভিযোগ মা শিখা দেবনাথের। রাতভর মেয়ের পাশে থাকার পর সকালে সাত’টা নাগাদ বাথরুমে গিয়েছিলেন মা। সেই সময় মেয়ের আর্ত চিৎকার শুনতে পান। ছুটে গিয়ে দেখতে পান বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে মেয়ের মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে।

আরও পড়ুনঃ বউবাজারে রূপান্তরকামীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার পুলিশ অফিসার

তিনি নার্সদের জানান, চিকিৎসকদেরও জানান। অভিযোগ, কোনও চিকিৎসক একবারের জন্য দেখতে আসেনি মেয়েকে। ১৩ বছরের কিশোরী ৫ ঘন্টার ওপর মায়ের কোলেই বেলা সাড়ে ১২ টার সময় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।

শিখা দেবনাথের কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘এতটা পাষাণ হৃদয় কী করে হয়! মেয়ে আমার চোখের সামনে আস্তে আস্তে নেতিয়ে পরছিল, তবুও কোনও ডাক্তার এল না। আমাদের জন্য বড় হাসপাতাল বা নার্সিংহোম নেই, আমাদের জন্য কেউ নেই।

আরও পড়ুনঃ গরু পাচারের বিরুদ্ধে কলকাতা থেকে রায়পুর তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই

গত বছর থেকে ফাল্গুনীর তীব্র মাথা যন্ত্রণা হতে শুরু করে আর এই বছরের শুরুতে ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে। লকডাউনের সময় মাসখানেক ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল ফাল্গুনী।

অত্যন্ত গরিব পরিবারের মেয়েটির চিকিৎসার খরচ তোলার জন্য পাশে দাঁড়ায় পাড়ার ক্লাব। আত্মীয় স্বজনের থেকে ধার করে বাকি টাকা জোগাড় করে পরিবার। মেধাবী ছাত্রীর চিকিৎসার জন্য সমস্ত কিছু করতে রাজি ছিল পরিবার, তবুও শেষ রক্ষা হল না।

যদিও এনআরএস হাসপাতালের দাবি, হাসপাতালে বক্তব্য রোগীকে ভর্তি করার পর দুই ইউনিট রক্তের রিকুইজিশন দেওয়া হয়েছিল, রোগীর পরিবার সেই রক্ত জোগাড় করেনি।

এমনকি রক্ত যে তারা যোগাড় করতে পারেনি সেই বিষয়টাও চিকিৎসক, নার্স কাউকে জানায়নি। এমনকি সকালবেলা বেড থেকে পড়ে যাওয়ার পর ডাক্তার এসে তার সিটিস্ক্যান করার জন্য লগবুকে লিখে দিয়ে যায়। মৃত ফাল্গুনীর পরিবারের কেউ সিটি স্ক্যান করার জন্য নিয়ে যায়নি।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here