নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
মাত্র ৪ বছর হল তৈরি হয়েছে মন্দির তার আগে খোলা আকাশের নীচেই প্রায় ১৫০ বছর ধরে পূজিতা হচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়নগড় ব্লকের গনুয়ার কালী মা। দেবীর বহু জাগ্রত ঘটনার কারনে লক্ষ্যাধিক মানুষের সমাগম হয় এই পুজোকে কেন্দ্র করে।
এই দেবী নাকি সবং থানার বেলকি-র সাউ পরিবারের অর্থাৎ সাউ বাড়ির জায়গাতেই মায়ের আবির্ভাব। কথিত আছে সাউ পরিবারের এক মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে যা দুরারোগ্য কঠিন ব্যাধিতে পরিনত হয়। মেয়ের চিকিৎসার জন্য তৎকালীন প্রতিপত্তিশালি সাউ পরিবার মেয়েকে কলকাতা থেকে শুরু করে রাজ্যের বহু জায়গায় নিয়ে যান কিন্তু কোন লাভ হয়নি। অবশেষে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় ট্রেনেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে মেয়েটি। কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে শোকে ভেঙ্গে পড়ে পরিবারের লোকেরা। তখনই সাউ পরিারের তৎকালীন কর্তা স্বপ্নাদেশ পায় যে কোথাও গিয়ে কোনও লাভ হবে না মেয়েকে যদি সুস্থ করতে হয় তা হলে গনুয়া যাও। ওখানে তোমাদের জায়গায় মাটি চাপা হয়ে আছি আমি সেখান থেকে আমাকে বের কর। আমার পুজো শুরু কর। এই স্বপ্নাদেশ পেয়ে তৎক্ষণাৎ সাউ পরিবারের লোকজনেরা গনুয়ার আজকে যে জায়গায় মন্দির স্থাপিত হয়েছে সেখানে যান।
গভীর জঙ্গল কেটে শুরু হয় খনন কার্য। যা পাওয়া যায় তা হল দুটি কালো পাথর আর একটি ত্রিশূল। আর তাতেই ভক্তি ভরে মায়ের পুজো শুরু করেন সাউ পরিবারের লোকজনেরা সঙ্গে থাকে অসুস্থ মেয়েটিও। পুজো শুরু হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত মেয়েটি। এতো ডাক্তার বৈদ্য যে মেয়েকে সুস্থ করতে পারেনি দুটো পাথরের পুজো করার পরেই সুস্থ হয়ে ওঠে মেয়েটি। এই খবর যখন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে তখনই মানুষ নিজেদের অসুবিধার কথা জানিয়ে মায়ের কাছে মানত করতে ছোটে। সকলেরই মনোস্কামনা পূর্ণ করেন গনুয়ার কালী মা। সেই থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে মায়ের কাছে পুজো দেওয়ার ভীড় আজ সেই পুজো লক্ষাধিক মানুষের ভীড়ে পরিণত হয়েছে।
বহু দিন ধরে পারিবারিক পুজো থাকলেও মানুষের অতিরিক্ত ঢলের কারণে এই পুজোকে সার্বজনীন রূপ দিতে হয়।
আরও পড়ুনঃ দশম বছর পদার্পণে ‘গাছ বাঁচাও, প্রাণ বাঁচাও’ থিম মহেশতলার কালীপুজোয়
বিগত দশ বছর ধরে সার্বজনীন পুজো হিসেবে পূজিতা হচ্ছেন গনুয়ার কালী মা। পুজো সার্বজনীন রূপ পাওয়ার পর গ্রামের মানুষ পুজো কমিটি প্রশাসনের কাছে খোলা আকাশের নিচে মায়ের পুজো যাতে করতে না হয় তার জন্য মন্দির তৈরি করার আবেদন জানান। অবশেষে প্রশাসন এবং গ্রামবাসীদের উদ্যোগে মায়ের মন্দির নির্মিত হয়। বিগত চার বছর ধরে সেই মন্দিরেই পূজিতা হচ্ছেন গনুয়ার জাগ্রত কালীমা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584