নিজস্ব সংবাদদাতা,পূর্ব মেদিনীপুরঃ
১১৩৯ বার পুশ আপ মেরে ইন্ডিয়ান বুক অফ রেকর্ডে নাম তুলল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকের কাকগেছিয়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ আজিজুর রহমান। জানা গিয়েছে বাবা শেখ রুহুল আমিন, পেশায় রাজমিস্ত্রি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশেই তমলুকের কাকগেছিয়া এলাকার বাসিন্দা আজিজুর ।
সংসার চালিয়ে কোনরকমে একখান নির্মীয়মাণ পাকা বাড়িতে দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে বাস শেখ রুহুল আমিনের। বড় ছেলে আজিজুর স্থানীয় স্কুলে উচ্চমাধ্যমিক পঠন-পাঠনের পর চেন্নাইতে একটি বেসরকারি সংস্থার কাজে যোগ দিয়েছিল। জানা গিয়েছে তমলুকের মানিকতলায় প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার অন্তর্গত তিন মাসের একটি মোবাইল রিপেয়ারিং ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ট্রেনিং শেষে পাড়ি দিয়েছিল চেন্নাইয়ে।
সেখানে মাত্র ৯ হাজার টাকা বেতনে কাজ করার তিন মাস পরেই কোম্পানির শাটডাউন হয়ে যায় । ফলে ফের পেশার টানে সিকিউরিটি গার্ডের কাজ নেয়। এরপর লকডাউনের আগেই বাড়িতে এসে আর কাজে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাই স্কুলেরই এক বন্ধুর পরামর্শে শুরু হয় বাড়িতে শারীরিক কসরত। বাড়িতে ফেরার সময় ট্রেনে থাকা বন্ধু সুমন ভক্তার পরামর্শ মেনে বাঁশ কেটে বললি, দড়ি দিয়েই নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয় জিমখানা।
আর সেখানেই চলে নিয়মিত কঠোর অনুশীলন । আর তাতেই এসেছে এই অভাবনীয় সাফল্য। মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যবধানে পর্যায়ক্রমে ১১৩৯ বার পুশ আপ দিয়ে সারা দেশের মধ্যে রেকর্ড গড়ে আজিজুর। স্বভাবতই গ্রামের ছেলের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রা। জানা গিয়েছে শেখ আজিজুর রহমানের ২১ বছর বয়স । এদিন বাড়িতে ঢুকেই দেখা গেল লোহার পরিবর্তে চিপস সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন ওজনের ওয়েট লিফটিং।
বাড়ির ঠিক পেছনেই রয়েছে আজিজুরের জিমখানা। আজিজুলের কথায়, সংসারে বড়ই অভাব। তাই শহরের জিম খানায় গিয়ে প্র্যাকটিস করার সুযোগ নেই। কিন্তু মনের ইচ্ছাটা ছিল খুব প্রবল। এরপর মূলত বন্ধুর সেই প্রেরণা থেকেই নিজেকে আজ তৈরি করতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে। তবে আমার এই সাফল্যের সমানভাবে ভাগীদার ছোটবেলার বন্ধু কাম ট্রেনার সুমন ভক্তা।
আরও পড়ুনঃ মাদ্রাসা শিক্ষকরা ঠিকমত বেতন পাচ্ছেন না, অভিযোগ অধীরের
তারই নির্দেশনায় কাজ হারিয়ে ও মানসিক অবসাদ ঝেড়ে ফেলে দীর্ঘ এই লকডাউন টাকে কাজে লাগাতে পেরেছি।লক্ষ্য তো তাই এবার গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের দিকেই। বন্ধু সুমন ভক্তা বলেন, একটা দিন দুজন বাজি ধরে পুশআপ মারছিলাম। আর তখনই ওর এই অসাধারণ প্রতিভা জানতে পারি। টানা ৮০ বার পুশ আপ মেরে সেদিন ও আমাদের চমকে দিয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ মেদিনীপুর মেডিকেলে ফের বন্ধ করোনা পরীক্ষা
আর তখন থেকেই বন্ধুকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। কিন্তু কিভাবে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তুলতে হবে তা জানতাম না। অবশেষে গুগল সার্চ করে এবং ইউটিউব ভিডিও দেখে আমরা আজ এই জায়গায়।মা আফ্রি জা বিবি বলেন, নিজের চেষ্টায় ছেলের এই অসাধারণ সাফল্যের আমরা সকলেই খুব খুশি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584