মোহনা বিশ্বাস, হুগলিঃ
সালটা ২০১৪। বলাগড়ের জিরাটের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে খুন করে গণধর্ষণ করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ৩ জন অভিযুক্তকে। অভিযুক্তদের নাম গৌরব মণ্ডল ওরফে শানু, কৌশিক মালিক ও স্বরূপ মজুমদার। এদের মধ্যে নাবালক ছিল একজন। ধৃতদের বিরুদ্ধে ৩৬৩, ৩৬৪/এ, ৩৭৬(২), ৩০২, ২০১, ৩৪ ও ৬ পকসো ধারায় মামলা রুজু হয়। অপরাধ প্রমাণ হওয়ার পর ২৭ জানুয়ারি দুই অপরাধী গৌরব মণ্ডল ও কৌশিক মালিকের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করল চুঁচুড়া আদালত। ছ’বছর ধরে মামলা চলার পরে গত ২২ জানুয়ারি চুঁচুড়া আদালতের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সেশন জাজ (সেকেন্ড কোর্ট) মানসরঞ্জন সান্যাল ওই দুজন অপরাধীকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
২০১৪ সালের ১২ই ডিসেম্বর সন্ধ্যেবেলায় টিউশন পড়ে ফেরার পথে অপহৃত হয় ১১বছরের ওই ছাত্রী। মেয়ে বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন নাবালিকার বাবা ও প্রতিবেশীরা। এরপরই মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে ছাত্রীর বাবার কাছে। ঘটনার পরের দিন ১৩ই ডিসেম্বর বলাগড় থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন নাবালিকার বাবা। ১৪ ডিসেম্বর ইটভাঁটার পিছনে গঙ্গার পাড়ে মাটি খুঁড়ে ছাত্রীর মৃতদেহ ও ঐ ছাত্রীর সাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর নাবালিকার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতেই ৩জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তদন্তকারী অফিসাররা জানান, ছাত্রীকে জোর করে কাছেই একটি জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ওই অপরাধীরা। চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে তারা। আর এরপরই খুনের সমস্ত প্রমাণ লোপাট করার জন্য নাবালিকার দেহ ও তার সাইকেলটি একটি বাইকে চাপিয়ে নদীর চরে নিয়ে যায় অপরাধীরা। তারপর নাবালিকার মৃতদেহটিকে তারা নৃশংসভাবে গণধর্ষণ করে। গণধর্ষণের পর ওই ছাত্রীর পা ভেঙে দিয়ে গঙ্গার পাড়ে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দেয় তারা।
মেয়ের খুনের অপরাধীদের এহেন শাস্তিতে খুশি নাবালিকার বাবা মা। এই ঘটনাকে বিরলতম ঘটনা বলে জানিয়ছেন বিচারক। দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর পর চুঁচুড়া আদালতের ইতিহাসে অন্যতম উল্লেখযোগ্য হয়ে থাকবে এই নৃশংস খুনের ঘটনা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584