শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
করোনা সংক্রমণ রুখতে রাজ্যে পালন করা হচ্ছে সাপ্তাহিক লকডাউন। আর এই লকডাউনের ফাঁসে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে জখম সন্তানকে ভ্যানে চাপিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য ঘুরলেন অসহায় বাবা-মা। গিরীশ পার্ক থানার রাম মন্দির এলাকার রাস্তায় এই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছেন অনেকেই। শেষ পর্যন্ত আরজিকরে ভর্তি করা হয় ওই বাচ্চাটিকে।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত আটটায় বাড়ির লোকের জন্য দুধ কিনতে বেরিয়েছিল ১৪ বছরের কার্তিক সর্দার। সেই সময়ে বেপরোয়া মোটর বাইকের ঢাকায় মহাজাতি সদনের সামনে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে রাস্তার ওপর লুটিয়ে পড়ে। লোকজন ছুটে এলে বাইক চালক পালিয়ে যায়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তাকে এলাকার একটি ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয় নীলরতন সরকার হাসপাতালে।
অভিযোগ, সেখানে কার্যত বিনা চিকিৎসায় তাকে ভোর চারটে পর্যন্ত ফেলে রাখা হয়। এরপর শয্যার অভাব দেখিয়ে অন্য হাসপাতালে রেফার করে দেয় এনআরএস।
আরও পড়ুনঃ নবান্ন থেকে স্থানান্তর হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর
কিন্তু তারা কোন অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে দেয়নি। এমনকি লকডাউনের জেরে সরকারি সহায়তাতেও কোনও অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করা যায়নি। কিছু বুঝতে না পেরে কার্তিককে বাড়ি নিয়ে চলে আসার পরিবারের সদস্যরা। তারপর আরো চার ঘন্টা কেটে যাওয়ায় যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে জ্ঞান হারায় ওই ১৪ বছরের বালক।
শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গার চেষ্টা করেও কোনও অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে উঠতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। শেষ পর্যন্তকার্তিককে এলাকার এক ভ্যান চালকের সাহায্যে সাইকেল ভ্যানে করে শুরু হয় হাসপাতাল যাত্রা।
আরও পড়ুনঃ প্রতি কেজি আলু বিক্রি করতে হবে ২৫ টাকা দরে, নির্দেশ নবান্ন’র
রক্ত ও স্যালাইন চলা অবস্থাতেই ভ্যানে দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকে আহত বালক। সাড়ে ন’টায় ভ্যান গিরিশপার্ক থেকে আরজিকর পৌঁছয়। এরপর সেখানে বলা হয়, নথিতে পুলিশের সই নেই। দুর্ঘটনার মামলা তাই পুলিশের সই দরকার। একথা শুনে আহত শিশুকে আবার ভ্যানে করেই জোড়াসাঁকো থানায় নিয়ে আসা হয়।
সাড়ে ১১টায় আরজিকর-এর ট্রমা কেয়ার ইউনিটে অবশেষে ঠাঁই হয় ওই বালকের। নবান্নে মুখ্য সচিব অ্যাম্বুলেন্সের সহজলভ্যতার কথা দাবি করলেও এই ঘটনা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা রয়েছে সেই তিমিরেই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584