নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ারঃ
মারন মোবাইল গেম ‘পাবজি’ আসক্ত ছেলের হাতে খুন হয়েছিলেন বাবা। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে কর্নাটকের সেই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। এবার পাবজি’ আসক্ত কিশোরের সন্ধান মিলল এই রাজ্যেও। বাংলার প্রান্তিক শহর আলিপুরদুয়ারে এক ১৬ বছরের কিশোর এই মারন খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। সেই মারন গেমের আসক্ত থেকে ছেলেকে সারিয়ে তুলতে বুধবারই পাবজি গেম আসক্ত একমাত্র ছেলে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়েছে আলিপুরদুয়ার জংশনের এক দম্পতি।
আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া লিচু তলা এলাকার একটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ওই কিশোরের বাবা রেলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। মাও অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। একমাত্র ছেলের এই দশায় দিশেহারা দুই জন। কিশোরের বাবা বলেন, “ আমরা এলাকার সমাজ সেবার কাজের সাথে যুক্ত একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তার সহায়তায় তাকে অবশেষে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। ছেলে কোন চিকিৎসকের কাছে যেতে চাইতো না। একবার চিকিৎসকের কাছে নিয়েও গিয়েছিলাম কিন্তু ওষুধ খায় না। শুধু অন্ধকার ঘরে মোবাইলে গেম খেলে।”
জানা গিয়েছে, ছেলেটি বন্ধ ঘরে থাকতে ভালোবাসতো। দিনের আলো দেখতে পছন্দ করতো না। খাওয়া দাওয়ার কোন টাইম টেবিল ছিল না। চার পাঁচ দিন পর পর কখন খুব ভোরে আবার রাতে সামান্য খাবার খেত। মহালয়ার আগের দিন শেষবার স্নান করেছিল। তার পর আর স্নান করে নি। প্রায় এক বছরের বেশি সময় থেকে পাবজি খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ে ১৬ বছরের এই কিশোর।
এদিকে কোচবিহার জেলার খাগরাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ডোডেয়ারহাট এলাকায় কোচবিহার ফেইথ ফাউন্ডেশনের পুনর্বাসন কেন্দ্রে রয়েছে ১৬ বছরের ওই কিশোর। এই ফাউন্ডেশনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দে বলেন, “ হার জিরজিরে চেহারা হয়ে গেছে ছেলেটির। শুনেছি পাচ ছয়দিন পর পর খেত ছেলেটি। শুধু মোবাইলে ঘরে শুয়ে পাবজি গেম খেলত। ছেলেটিকে খাওয়া দাওয়া শুরু করাই আমাদের কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ। তবে বুধবার রাতেও সামান্য খেয়েছে। আশা করছি সমাজের মুল স্রোতে ফিরবেও।”
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশি বন্দী নাবালকদের মুক্তির ঘোষনা, স্বস্তি ফিরল ‘শুভায়ন হোমে’
জানা গিয়েছে, ‘পাবজি’ এক ধরনের মোবাইল অ্যাপ। এই অ্যাপ স্মার্ট ফোনে ডাউনলোড করে এক ধরনের খেলা খেলা যায়। যেই খেলায় বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে একসঙ্গে বেশ কয়েকজন মিলে লাইভ খেলা যায়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584