আব্দুল হামিদ, নিউজফ্রন্টঃ-
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার শ্রীরামপুর এগ্রিকালচার হাইস্কুলে একমাসের ব্যবধানে নবম শ্রেণীর দুই ছাত্র সরিফুল গাজি ও সৌরভ গুড়ির ধারাবাহিক অস্বাভাবিক মৃত্যু যথেষ্ট উদ্বেগ জনক। একটি আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্মম ছাত্রহত্যার ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বলে আজ কলকাতা প্রেস ক্লাবে জানিয়েছেন নিহত সরিফুল গাজির মা তুহিনা বিবি। “একমাস অতিক্রান্ত, তা স্বত্বেও আমার ছেলের খুনিরা গেপ্তার হল না। অথচ, চক্রান্ত করে ‘পোষ্ট মরটেম’ রিপোর্টকে বিকৃত করে খুনিদের আড়াল করার চেষ্টা করছে প্রসাশন। তাই আমরা ‘সিবিআই’ তদন্ত দাবী করছি, বলে জানান সরিফুল গাজি বাবা সফিকুল গাজি ও মা তুহিনা বিবি। ”
যে দিন (২০ এপ্রিল) শরিফুলের মৃত্যুর (আত্মহত্যা) সংবাদ তার বাড়িতে যায়, তার কয়েক ঘন্টা আগে শরিফুল নিজে তার মাকে ফোন করে বলে, “মা আমি পরীক্ষার শেষে বন্ধুদের নিয়ে বাড়ি যাবো ”। এখানে প্রশ্ন থেকেই যায় তার মায়ের সঙ্গে কথোপকথনের পরে শরিফুল কেন আত্মহত্যা করতে যাবে ?
উত্তর ২৪ পরগনার সরিফুল গাজির পরিবারের দাবী, ১৮ মে একই স্কুল থেকে মৃত শরিফুলের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু সৌরভ গুড়ির ঝুলন্ত মৃত দেহ উদ্ধার হয়। রহস্যজনক বিষয় হচ্ছে যে, শরিফুল গাজির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার প্রধান সাক্ষী ছিলো এই সৌরভ গুড়ি। শরিফুল কে গুরুতর অবস্থায় যখন সৌরভ দেখতে পায়, তখন শরিফুল কে বাঁচানোর জন্য হোস্টেল সুপার কলা বরণ বাবুর শরণাপন্ন হয়, কিন্তু তিনি নাকি সৌরভের কথায় গুরুত্ব না দিয়ে নির্দয়তার পরিচয় দেন এবং তিনি ঘটনা জানার পরেও হোস্টেল ছেড়ে পালিয়ে যান। হোস্টেল সুপারের এহেন আচারনের পর সৌরভ হোস্টেলের বাইরে দোকানদার ও আশেপাশের লোকেদের কাছে প্রায় আধঘন্টা ধরে কাতর বিনতি করে।সৌরভের দাবী তখনও শরিফুল জীবিত ছিল।
শরিফুলের মৃত্যুর একমাস না যেতেই তার প্রধান সাক্ষী সৌরভ গুড়ির মৃত দেহ উদ্ধার হয়। সৌরভের যেদিন মৃত দেহ উদ্ধার হয় তার ঠিক দুদিন পরেই সৌরভের কোর্টে সাক্ষী দেওয়ার কথা ছিলো। এসআইও’র রাজ্য সম্পাদক ইমাম হোসেন প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘তাহলে কি ঠাণ্ডা মাথায় শরিফুল গাজির মৃত্যু রহস্যকে ধামাচাপা দিতে সৌরভ কে এই দুনিয়া থেকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়া হলো ? কারন সৌরভের মৃত্যুও কম রহস্যজনক নয়। সৌরভের মৃত দেহ স্কুলের সাময়িকভাবে বন্ধ ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার হয়। সৌরভ আবাসিক ছাত্র না হওয়া সত্ত্বেও বন্ধ ছাত্রাবাসে গেলো কি ভাবে ? এবং যে রুম থেকে সৌরভের দেহ উদ্ধার হয়, রুমটি বাইরে থেকে তালা লাগানো ছিলো। আরও আশ্চার্যজনক বিষয় হলো ঝুলন্ত সৌরভের পা মেঝেতে লেগে ছিল এবং সিলিং ফ্যানের একটি মাত্র ব্লেডের উপর দেহটি ঝোলানো ছিলো। ঘটনা পরম্পরায় যে তথ্য উঠে আসছে তা থেকে এটা পরিষ্কার যে, শরিফুল এবং সৌরভ আত্মহত্যা করেনি।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584