শুভদীপ ভট্টাচার্য্য, মুর্শিদাবাদঃ
আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন মেধা তৈরির কারিগর প্রশান্ত কুমার প্রামানিক। নগর কলেজের আংশিক সময়ের শিক্ষক ছিলেন প্রশান্তবাবু। মাড়গ্রাম থানা এলাকায় নিজের বাড়িতে কীটনাশক খেয়ে আজ আত্মহত্যা করেন তিনি।
বয়স্ক বাবা-মা, স্ত্রী, সন্তানকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন প্রতিমাসেই। প্রতিবন্ধী কন্যার চিকিৎসার প্রয়োজন, কিন্তু একইসাথে প্রয়োজন বিপুল অঙ্কের টাকা। পারেননি জোগাড় করতে। একদিকে অবিরত পাঠদান,বাড়তি আয়ের অনুসন্ধান, অন্যদিকে সংসারের ব্যায়ভার ও প্রতিবন্ধী মেয়েকে সারিয়ে তোলার ভাবনা। জীবনের এই দ্বিমুখী লড়াইয়ের চাপে মাস কয় আগে হয়ে যায় সেরিব্রাল স্ট্রোক। সামলে ওঠেন সেইবারে। যতটুকু সরকারের তরফ থেকে মেলে, তাতে এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে মাস শেষে অবস্থা হয় শিরে সংক্রান্তি। তার ওপর বয়স্ক বাবা মায়ের চিকিৎসা, প্রতিবন্ধী মেয়েকে সারিয়ে তোলা। অথচ রোজগারের অঙ্ক সীমিতই। বাড়ছিল মানসিক বোঝা। দেনার ভার ভারী হচ্ছিল ক্রমশ। বাড়ছিল পাওনাদারদের চাপও। দায় এড়ানোর ভাবনাও রীতিমত যন্ত্রণাদায়ক ছিল প্রশান্তবাবুর তরফে। আর্জি জানিয়েছেন বারবার সরকারকে। তুলে ধরেছেন আংশিক সময়ের শিক্ষকদের জীবনের অসহনীয় চিত্রও। কিন্তু উত্তর মেলেনি। অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হন প্রশান্ত প্রামানিক। কিন্তু ‘মর্গে কি হৃদয় জুড়োলো’?
একবুক যন্ত্রণা, না পারা, অক্ষমতা নিয়ে দায় এড়িয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন প্রশান্ত। কিন্তু পৃথিবীর আলো বাতাস থেকে প্রশান্ত বাবুদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মূল দায় কার?
প্রশান্তরা জন্মে এবং মারা যায়। প্রশ্ন রয়ে যায় প্রচুর, বোবা হয়ে থাকা উত্তরদাতাদের মুখ ফোটবার আশাতে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584