শিবশঙ্কর চ্যাটার্জ্জী, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য দফতর অনুমোদিত একটি এম.আর.আর ডিলারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রেশন না গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিল গ্রামবাসীদের একাংশের। এদিন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের একাংশের পক্ষ থেকে চৌরাস্তায় রীতিমত মাইক বাজিয়ে দিনভর প্রচার চলানো হয়।
বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ থানার দিওড় এলাকার। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। তবে বিডিও মারফত অভিযোগ পেয়ে ওই রেশন দোকানের বিরুদ্ধে তদন্তে নামতে চলেছে খাদ্য দফতর। পাশাপাশি অভিযোগ প্রমানিত হলে কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে খাদ্য দফতর।
আরও পড়ুনঃ দশ দফার দাবিতে চোপড়ায় বিডিওকে ডেপুটেশন সিপিএমের
যদিও রেশন দোকানের মালিকের দাবি, তিনি সরকারি নির্দেশ মতই কাজ করেছেন। পাশাপাশি ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলা হয়েছে বলে জানান তিনি। এমনিতেই লকডাউনের জেরে এলাকায় মানুষজনের কাজ কর্ম তেমন নেই। যা সঞ্চয় আছে সেই শেষ সম্বলটুকু দিয়ে রেশনে খাদ্য সামগ্রীর পাশাপাশি কেরোসিন তেল নিতে এসেও তাদের ঠকতে হচ্ছে বলে, অভিযোগ তুলে রেশন দোকান বয়কট করার ডাক দিয়েছে স্থানীয়রা।
তবে দিওড় এলাকার গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ স্থানীয় এম.আর.আর ডিলার প্রদীপ কুমার গুহ গ্রামবাসীদের পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক বরাদ্দ খাদ্য সামগ্রী দিচ্ছেন না। এমনকি বরাদ্দ আটাটুকুও মিলছে না তাদের। শুধু তাই নয় লিটার পিছু কেরোসিন তেলের দামও একেক জনের কাছ থেকে একেক রকম নেওয়া হচ্ছে।
এই সব ঘটার পরেই গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ এদিন চৌরাস্তায় দিনভর মাইকের মাধ্যমে প্রচার চালাতে শুরু করে। একই সঙ্গে স্থানীয় এম.আর.আর ডিলার প্রদীপ কুমার গুহ-র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অভিযুক্ত ডিলারের লাইসেন্স বাতিলেরও দাবী তোলেন তারা।
পাশাপাশি রেশন দোকানের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ঘিরে এদিন ছাই চাপা উত্তেজনাও দেখা যায় দিওড় গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে। ঘটনাকে ঘিরে যাতে কোনরূপ বিশৃঙল পরিস্থিতি তৈরী না হয়, সে কারনে এদিন পুলিশ সহ প্রচুর সিভিক ভলেন্টিয়ারও মোতায়ন ছিল এলাকায়।
যদিও স্থানীয় একাংশের দাবী গুটিকয়েক জন গ্রামবাসী ছাড়া, এদিন দিওড় ও সংলগ্ন পাঁচ পুকুর, দিঘি পাড়া, তিরইল, মলকাহার, ধাপ পাড়া, ছাতমা গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দারাই অভিযুক্ত এই ডিলারের কাছ থেকে রেশন সামগ্রী না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে।
এমনকি অভিযুক্ত এম.আর.আর ডিলার প্রদীপ কুমার গুহ স্থানীয় কয়েক জনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ তুলেছেন। তবে প্রদীপবাবুর বক্তব্য ঈর্ষাগত কারনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। একই সঙ্গে নিজের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ অস্বীকার করে প্রদীপবাবু বলেন, “আমার কাছে দু রকম দামের তেল ছিল। আর সেই দু রকম দামের তেলই দিয়েছি। আর আটা দেওয়া বন্ধ করতে অফিস বলেছিল, আবার অফিসই আটা দিতে বলেছে,তাই আমরা দিচ্ছি”।
পাশাপাশি এ বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোলার জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, “বিডিও-র পক্ষ থেকে আজকে একটা মাস পিটিশন এসেছে। বিকালবেলায় এর উপরে একটা আমাদের তদন্ত হবে। তারপর তদন্ত করে সেই মত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন”। সেই সঙ্গে তিনি এও জানান, “রেশন দোকানদার কাকে কতখানি মাল দিয়েছে তারও তদন্ত হবে, এবং তারপরে তিনি এই বিষয়ে মন্তব্য করবেন”।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584