নিউজফ্রন্ট, ওয়েবডেস্কঃ
মারণ ভাইরাসের হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করতে যখন বিশ্বের সকল স্তরের মানুষের উদ্বেগের পারদ চরমে, বিভিন্ন বেসরকারি কর্পরেট সংস্থার কর্মীদের ছাঁটাই প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে ঠিক এমন সময় এই যাবতীয় বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ইনফোসিস প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণ মূর্তি বলেন, এই ভাইরাসকে স্বাভাবিক হিসাবে গ্রহণ করেই জীবনে ফিরতে হবে সকলকে। দেশের সর্বনিম্ন দুর্বল স্তরের মানুষদের সর্বাধিক সুরক্ষা এবং এই লড়াই জয় করে সুস্থ ভাবে ফিরে আসার শক্তির যোগান দিতে হবে।

বুধবার তিনি ওয়েবিনারে একটি ব্যাবসায়ি নেতাদের বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থার সাপেক্ষে জানান,’ যে বিষয়টি আমাদের বোঝা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো এই অবস্থা বেশিদিন চলতে পারেনা। কারণ এরপর এক পর্যায়ে মানুষ ক্ষুধার কারণে মারা যাবে।‘ তিনি জানান, ‘ ১৯০ মিলিয়ন ভারতীয় যারা বেসরকারি ও অসংগঠিত খাতে নিযুক্ত দীর্ঘদিন ব্যাপী লকডাউনের ফলে এই জনসংখ্যার একটি বড়ো অংশ যারা ইতিমধ্যেই কর্মহীন হয়ে পরেছেন।’
লকডাউন আরও দীর্ঘায়িত হলে এই সকল মানুষে মানুষ যারা জীবন ও জীবিকা হারাবেন। মূর্তি এ বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে, ‘ ইটি আনওয়ার্ড – রিম্যাজাইনিং বিজনেস ইভেন্টে উদ্যক্তা ও শিল্প অধিকর্তাদের ভার্চুয়াল ও দর্শকদের উদ্দেশ্যেও বক্তব্য রাখেন।
কর বা রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে তিনি জানান, বেশির ভাগ ব্যাবসায় তাদের ১৫ – ২০ % হ্রাস পেয়েছে। যা সরকারের কর ও জিএসটি –র ওপর একটা প্রভাব ফেলবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল অনুযায়ী যা অনুমান করা যায় তাতে করে গতবারে ৪.৫ % জিডিপি যা এবছর বৃদ্ধি পাবে ১.৯%।
ইনফোসিস প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণ মূর্তি বলেন , ভারতে ভাইরাসের প্রকোপ কমিয়ে আনতে লকডাউন বাড়িয়ে ৩ মে পর্যন্ত করা হয়েছে , ৩১,০০০ এরও বেশি সংখ্যক করোনার পরীক্ষা করা হয়েছে। যেখানে জানুয়ারিতেই ৩০,০০০ পজিটিভ সংক্রামিত হওয়ার পর থেকেই ১,০০৮ জন মারা গেছেন।
মূর্তি জানান প্রতি বছর ভারতে ৯ মিলিয়নের ও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে যার এক চতুর্থাংশই দূষণের কারণে। যখন দেখাই যাচ্ছে ৯ মিলিয়নের মতো মানুষ প্রতি বছর মারা যাচ্ছে এবং ভাইরাস সংক্রমনের ফলে গত দুই মাসে এক হাজার মানুষের মৃত্যুর তুলনায় কিছুই না। সুতরাং, স্পষ্টতই এটি এতোটাও আতঙ্কের নয় যা আমরা মনে করি।
মূর্তি জানান ” ভারতে পরীক্ষা পদ্ধতির হার এখনো অনেক কম। বিশ্বব্যাপী ভাইরাসকে রোধ করার জন্য যে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের প্রচেষ্টা চলছে তা আদৌ ভারতীয় জীনের সাথে মিলবে কিনা জানা নেই। তাই, এই নতুন ভাইরাসকে স্বাভাবিক মেনেই নিয়েই চলতে হবে।‘
এমনকি ভাইরাস প্রসঙ্গে তিনি একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী মন্তব্য ও প্রকাশ করেন, ‘এখনও পর্যন্ত ভারতীয় উদ্যোগক্তাদের কাউকেই চীন দ্বারা নির্ধারিত কোনো চিকিৎসা ব্যাবস্থাও আনতে দেখেননি যাতে করে পরীক্ষা ব্যাবস্থা বৃদ্ধি পেতে পারে।
উষ্ণ আবহাওয়া ও তার সাথে বিসিজি টিকা করণের দিকে ও তিনি ঈঙ্গিত করে। এবং এই বিষয়টির জন্য তিনি গবেষণার আহ্বান করেন।
প্রবীণদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষার্তে বিশেষত যাদের শরীরে বিভিন্ন রকম সমস্যা সংক্রামণ রয়েছে তাদের পরীক্ষামূলক পোশাক পরিধান ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখান কথা বলেন। তিনি আরও বলেন , ” এইরকম জটিল পরিস্থিতিতে আমাদের সবচেয়ে ভালো যা করা উচিত নতুনকে ধরে এগিয়ে চলা। করোনা ভাইরাস নিয়েই বেঁচে থাকুন। করোনার আগে আমরা যা করছিলাম তাই আবার শুরু করা উচিত, আমাদের সবচেয়ে দূর্বলদের রক্ষ করা উচিত।‘
ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যাণ্ড সার্ভিসেস কোম্পানির (নাসকম) প্রতিষ্ঠাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মুর্তি সফটওয়্যার লবি গ্রুপকে তিনি সদস্যদের মধ্যে একটি সুরক্ষা প্রোটোকল শুরু করেন অফিসে পৌঁছে দেবার জন্য ও সরকারের সাথে একটি নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষা ভাগ করে নেওয়ার জন্য। তিনি বলেন,”একটি শিফ্টের জায়গায় আরও তিনটি শিফ্ট করুন যাতে লোকেরা সামাজিক দূরত্ব অনুসরণ করে চলতে পারে। ”
এন আর মূর্তি পরীক্ষার জন্য একটি ডেটা এপ্রোচ পদ্ধতি শুরু করেন। যেখানে গণিত মডেলিং ও পরিসংখ্যানগত ব্যাবহার বিশ্লেষণ করে। এবং সরকারকে ইনপুট সরবরাহ করার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন যাতে এটি “আবেগের নয়”, ডেটা ভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ‘ নাসকমের প্রধান টেকনিক্যাল প্রধান সঙ্গীতা গুপ্ত জানান, তারা ১০ – ১৫ % লোককে নিয়ে অফিস খোলার পরামর্শ দিয়েছেন যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে। ডেটা চালিত পদ্ধতির মাধ্যমেই এই কাজ বজায় রাখার ভাবনা – চিন্তা তৈরি করা হয়ছে। এটি শিল্প ও দেশের জন্য উপকারী।
মহামারী জনিত কারণে ব্যাপক পরিমাণে সংস্থাগুলির ব্যায় হ্রাস ও প্রযুক্তিবিনিয়োগের দিকে নজর দিতে হবে। দেশীয় সংস্থাগুলিকে তাদের ব্যাবসা বৃদ্ধিতে এই মুহূর্তে করতে হবে কঠোর পরিশ্রম।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584