পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
মুখোশের মেলা। কোন অভিনেতা অভিনেত্রীর মুখোশ নয়। অন্যায়ের প্রতিবাদে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মুখোশ পরে অহিংস আন্দোলনের ডাক দিল মেলার মাঠ বাঁচাও কমিটি। শুক্রবার ধর্না মঞ্চ থেকে ব্যবসায়ী সমিতির ডাকে বোলপুরের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশ্বভারতী ছাত্রছাত্রীরা শামিল হল পদযাত্রায়।
কয়েক হাজার মানুষের পদযাত্রা শেষ হলো বোলপুর শহরের চিত্রামোড়ে।ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ সুব্রত ভকত জানিয়েছেন, মহাত্মা গান্ধী ভারতের স্বাধীনতা আনার জন্য অহিংস আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিলেন সেই অহিংস আন্দোলনের পথ ধরেই বোলপুরের সাধারণ মানুষ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর হিটলারি শাসনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে আগামী দিনে।
আরও পড়ুনঃ করোনা আবহে নিজেদের ঠিক রাখতে ফিট ইন্ডিয়া ফ্রিডম রান জওয়ানদের
গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষার আশ্রম কে উপাচার্যের হাত থেকে মুক্ত করতে এই বিশাল পদযাত্রায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। পদযাত্রায় শামিল ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি প্রয়োজনে সত্যাগ্রহ আন্দোলন করা হবে। পরনে সাদা পাঞ্জাবি মুখে গুরুদেবের মুখোশ লাগিয়ে দীর্ঘ এক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে পদযাত্রা। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে গলা মেলায় পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা। এদিনের পদযাত্রায় পা মিলিয়েছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী ডঃ প্রলয় নায়েক।
আরও পড়ুনঃ কোচবিহার জেলা জুড়ে পালিত হল গান্ধী জয়ন্তী
তিনি বলেন, এত করুণ অবস্থা এর আগে কখনো বিশ্বভারতীতে আসেনি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আদর্শের পরিপন্থী নয় এমন কর্মকাণ্ড বর্তমান বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ক্রমাগত গায়ের জোরে করছেন। প্রাচীর নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে সেই বিতর্কের সম্পূর্ণ দায়ভার উপাচার্যের। দু’চারটে বই পড়ে কখনও গুরুদেবকে বোঝা সম্ভব নয়। অনেকেই বিশ্বভারতী নিয়ে যে ধরনের মন্তব্য পোষণ করছেন তা কখনো কাম্য নয়।
আরও পড়ুনঃ বহরমপুরে তৃণমূলের গান্ধী জয়ন্তী উদযাপন
বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য গরিমা আদর্শ এবং গুরুদেবের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে মহাত্মা গান্ধীর এই পূর্ণ জন্মতিথি থেকে আমরা শপথ নিয়েছি হিটলারি শাসন থেকে বিশ্বভারতী কে মুক্ত করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশ্বভারতীর উদ্বিগ্ন প্রাক্তনীরা উপাচার্যের মনোভাবের নিন্দা জানাচ্ছেন। এদিকে রতন পল্লীতে আশ্রমিকরা গান গেয়ে প্রতিবাদ শুরু করেছে।
প্রবীন আশ্রমিক সুবীর বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গাজোয়ারির সীমা পেরিয়ে গেছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী৷ কিসের স্বার্থে বলপূর্বক বিশ্বভারতীর বিভিন্ন জায়গায় প্রাচীর তুলে কারাগারে বন্দি করে ফেলতে চাইছে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আদর্শকে,সেটাই বোধগম্য হচ্ছে না। যদিও মানুষের অহিংস আন্দোলনের সুর কানে তুলছেন না বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
আরও পড়ুনঃ শারদোৎসব উপলক্ষ্যে শিশুদের নতুন পোশাক বিতরণ
মানুষের ভাবাবেগে আঘাত দিয়ে প্রাচীর তোলার কাজ তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্বভারতীর একাধিক কর্তা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, উপাচার্যের গোয়ার্তুমির কারণে আগামী দিনে বিশ্বভারতী কে বড় মূল্য চোকাতে হতে পারে। অধ্যাপকদের দাবি বিশ্বভারতী জুড়ে যে ভয়াবহতা কায়েম করে রেখেছে উপাচার্য তাতে ছাত্র-শিক্ষক প্রত্যেকের সম্পর্কের অবনতি ঘটছে। মানসিকভাবে বিদ্রোহী হয়ে উঠছে সবাই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584