তপন চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুরঃ
উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ভারত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী গ্রাম, মনোহরপুরের পান্ডারা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্কুলের ছোট ছোট কচিকাঁচা, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে একটি পিকনিকের আয়োজন করল। কনকনে ঠান্ডার মধ্যেও কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক তপন দেবসিংহ বিদ্যালয়ের কচিকাঁচদের সাথে দীর্ঘক্ষণ সময় কাটিয়ে বলেন এটা সত্যিই ভালো পদক্ষেপ। আমরা কোন দিন বিদ্যালয়ের শিশুদের সাথে মেশার সময় পাইনা। আজকে সত্যি সত্যিই শিশুদের সাথে জমিয়ে আড্ডা মারতে পাড়ায় খুব আনন্দ পেলাম।
অসীম ঘোষ বলেন বিদ্যালয়ের উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানালাম।কালিয়াগঞ্জ ব্লকের যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক পরিমল দাস বলেন ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা যেভাবে যত্ন সহকারে বনভোজনের আয়োজন করেছে তা প্রশংসার দাবি রাখে।
কনকনে শীতের আমেজকে উপভোগ করতে কেই বা না চাই। সে ছোটরা হোক বা বড়রা। আনন্দ কারোর বাধা মানে না। তাই কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ভারত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী গ্রাম, মনোহরপুরের পান্ডারা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্কুলের ছোট ছোট কচিকাঁচা, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে একটি পিকনিকের আয়োজন করল স্কুল চত্বরেই। এদিন ছিল না বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে কোন বই-এর ব্যাগ, ছিল না মাষ্টারমশাইদের কাছে বকুনি খাওয়ার ভয়। কচিকাঁচাদের কাছে ছিল কেবল বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাস ও আনন্দ। তাই সকাল থেকে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেরাই নিজেদের সাধ্যমত একদিকে যেমন বেলুন নিয়ে এসে সাজিয়ে রাখেন, তেমনিই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বঙ্কিম সরকার নিজেই একটি মিড ডে মিলের বই হাতে নিয়ে উপস্থিত হয়। দেখা যায় সেই শিক্ষক নিজেই ব্যস্ত হয়ে পরেন রান্নার কাজে। ব্যস্ত তো স্বাভাবিকভাবে তাকে হতেই হবে, কারন আজকে মিড ডে মিলের মেনু তে ছিল নতুনত্ব পালং ডাল যেমন ছিল তেমনই মুরগির মাংস, চাটনি, খেজুর গুড়ের রসগোল্লা।
এছাড়া যারা মাংস খাবে না তাদের জন্য ডিমের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শুধু তাই নয় সঙ্গে ছিল মাংস, চাটনি আলুর চিপস ভাজা ও মিষ্টি। ৯০ জন বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য রান্নার সমস্ত দায়িত্ব ছিল মাষ্টারদের হাতেই। তাঁর বক্তব্য, কোন মেনুতেই যাতে লবন বেশী না হয় তার জন্য সে তদারকি করছিলেন, কারন রাধুনিতো ছিল সব স্বনির্ভর গোষ্টীর মহিলারা। শুধু তার দায়িত্ব ফাইনাল টেষ্টটিং। কারন তার বক্তব্য লবন কম হলে খাওয়া যায় কিন্তু বেশি হলে ছোট ছোট ছেলে মেয়েগুলো খাবে কি করে। অন্যদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভব্রত চক্রবতী ব্যস্ত থাকেন কখনো ছাত্র ছাত্রীদের একত্রিত করে পিরামিড তৈরী করে ভারত মাতার হাতে ভারতের জাতীয় পতাকা তুলে দিতে। আবার কখনো তিনি অতিথি আপ্যায়ন থেকে, স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সবাই ঠিকঠাক মত আনন্দ করতে পারছে কিনা সে ব্যাপারে দেখভাল করার। এদিন স্কুলের ছাত্রীদের দেখা যায় নৃত্য করতে। পান্ডারা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শুভব্রত চক্রবতী জানান, এই ধরনের পিকনিকের আয়োজন তারা প্রত্যেক বছরই করে থাকেন।তাদের খুব বেশি উৎসাহ দেয় কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মিড-ডে-মিল বিভাগ। তাছাড়া স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা সবাই মিলে একসাথে মিলে এই পিকনিকের আয়োজন করা হয়। এই পিকনিককে কেন্দ্র করে বিপুল উৎসাহ থাকে স্কুলের কচিকাঁচা ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে। তিনি বলেন এবার তাদের পিকনিকে যে সমস্ত মেনু করা হয়েছে তার মধ্যে ছিল পালং ডাল, বাঁধাকপির ঘন্ট, চাটনি, চিকেন এছাড়া যারা চিকেন খাবে না তাদের জন্য ডিমের ব্যবস্থাও রাখা ছিল। শেষে ছিল খেজুর গুড়ের রসগোল্লা।তিনি বলেন বিগত ২০১৫ সাল থেকে তারা এই পিকনিক আয়োজন করে আসছে প্রতিবছরই স্কুলে। তিনি বলেন প্রতিদিন স্কুলে মিড ডে মিলের রান্না খাওয়ানো হয় বাচ্চাদের গতানুগতিক ভাবে । তিনি জানান, গ্রামের কোন বাচ্চা যাতে স্কুল ছুট না থাকে তার জন্য নিয়মিত ভাবে স্কুলে পড়াশুনার পাশাপাশি মিড় ডে মিল খাওয়ানো হয় তাদের স্কুলে। ফলে প্রতিদিনই স্কুলে প্রায় সব বাচ্চারাই উপস্থিত থাকে।
আজকের এই অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গিয়েছিল স্কুল ছাত্রের মধ্যে স্কুলের বাচ্চাদের মধ্যে যেমন তেমনি তাদের অভিভাবকদের মধ্যে। আর এই অনুষ্ঠানে আজকের উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক তপন দেব সিংহ, জেলা পরিষদের কো-মেন্টর অসীম ঘোষ, কালিয়াগঞ্জ ব্লক যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক পরিমল দাস ছাড়াও কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মিড ডে মিল বিভাগের আধিকারিকরা। এদিন সকলকে দেখা যায় নিজেরাই বালতি হাতে নিয়ে পরিবেশন করতে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন খাওয়া-দাওয়ার আইটেম গুলো। এছাড়া এদিন অনুষ্ঠানে স্কুলের মাস্টারমশাই এবং শিক্ষকদের উদ্যোগে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের কিছু শিক্ষা সরঞ্জাম তুলে দেওয়া হয়।যেগুলোর তুলে দেন বিধায়ক তপন দেব সিংহ এবং কো-মেন্টর অসীম ঘোষ ও যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক পরিমল দাস। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন স্কুলের শিক্ষক বঙ্কিম সরকার।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584