নিজের হাতে চা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, পুনর্বাসনের আশায় তীর্থের কাক পরিমল

0
90

নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব মেদিনীপুরঃ

‘দিদি আমার দোকানে চা বানিয়ে খেলেন, কিন্তু আমার জন্য কিছুই করলেন না, বরং কয়েক মাসের মধ্যেই উচ্ছেদের শিকার হলাম’– বললেন চা দোকানি পরিমল জানা।

চার মাস আগে মুখ্যমন্ত্রীর দোকানে আসা। ফাইল চিত্র

গত চার মাস আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘাতে প্রশাসনিক বৈঠক শেষ করার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দিঘা বিজ্ঞান কেন্দ্রের সামনের একটি চায়ের দোকানে ঢুকে নিজের হাতে চা তৈরি করে প্রশাসনিক আধিকারিক এবং হাজির থাকা জনপ্রতিনিধিদের চা খাইয়েছিলেন।

চা দোকানি পরিমল জানা। নিজস্ব চিত্র

মাত্র চার মাসের ব্যবধানে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের শিল্প সম্মেলন উদ্বোধন করতে আসছেন আগামী ১০ ডিসেম্বর। কিন্তু এই কয়েক মাসের মধ্যেই বিজ্ঞান কেন্দ্রের সামনে ‘রাধারানী স্টোরস’ নামে ওই চায়ের দোকান অনেকটাই ছোট হয়ে গিয়েছে। কারণ
খুঁজতে জানা গেল শিল্প সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে গত নভেম্বর মাসে সৈকত শহর দিঘায় উচ্ছেদ অভিযান করেছিল জেলা প্রশাসন। রাস্তার পাশে ফুটপাতে দোকান করে থাকা ওই ব্যবসায়ীকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের নির্দেশ মেনেই রাস্তার পাশে থাকা নিজের দোকানের কিছুটা অংশ নিজেই ভেঙে দিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। বাকি অংশটুকু রাস্তা থেকে কয়েক ফুট পেছনের দিকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।

গত চার মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী এসে চা তৈরি করার নানা মুহূর্তের ছবি দোকানের ভিতর এবং রাস্তার পাশে বাঁধিয়ে ঝোলানো রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর স্পর্শে সৈকত শহরে রাতারাতি যে চায়ের দোকান নিয়ে পর্যটকদের মধ্যে তুমুল হইচই পড়ে গিয়েছিল, সেই দোকানের এখন হতশ্রী দশা।

পরিমল জানা। নিজস্ব চিত্র

পরিমল জানা বলেন, দিদি আমার দোকানে পা রাখার পর আমাদের কিছু হবে বলে আশা করেছিলাম । কিন্তু এভাবে উচ্ছেদ অভিযানের শিকার হব, ভাবতেই পারিনি। তাছাড়া এখন পর্যন্ত পুনর্বাসনের সুযোগটুকুও পাইনি। বড় মেয়ে স্থানীয় স্কুলের একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। ছোট মেয়ে একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। পরিমল এবং তাঁর স্ত্রী দুজনে সকাল থেকে চা বানিয়ে কোনও রকমে একটা ছোট্ট দোকান করে সংসার চালাতেন । কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি, তাতে আর কতদিন চালাতে পারবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। উচ্ছেদের ভয়ে কাটছে দিন।

তিনি আরও জানান, উচ্ছেদ অভিযানের পর পুনর্বাসনের জন্য ‘দিদিকে বলো’তে একাধিকবার ফোন করে দাবি জানিয়ে পাশে থাকার আশ্বাসও পেয়েছিলেন পরিমল। কিন্তু পূনর্বাসনের সুযোগ এখনও জোটেনি। তবে এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, দেশ-বিদেশের অতিথিদের যাতে কোনও অসুবিধায় না পড়তে হয়, তার জন্য দিঘায় ফুটপাতে বসে থাকা উচ্ছেদ অভিযান, বিধি মেনেই করা হয়েছে। তবে পরিমলের দোকান কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে যেসব অস্থায়ী দোকানদারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের পুনর্বাসনের ব্যাপারটি দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ দেখছে বলেই জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here