নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
১৯৬৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দিয়েছিলেন লালবাহাদুর শাস্ত্রী। তারপর থেকে গত সাড়ে পাঁচ দশকের মধ্যে আর কোনও প্রধানমন্ত্রীকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা যায়নি। সেই দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ যোগ দিলেন এএমইউয়ের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে।
এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আবারও ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’ শ্লোগান তুললেন প্রধানমন্ত্রী। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন,ভারত আজ এমন এক রাস্তায় চলছে, যেখানে ধর্মের ভিত্তিতে কোনও বিভেদ নেই।
এই অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি আরও একবার ছাত্রসমাজকে তাদের দায়িত্ব, কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বললেন, ভারতের শক্তি, সৌন্দর্য বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তের ছাত্রদের কাছে তুলে ধরাটা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তব্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তাঁদের কাঁধে এখন জোড়া দায়িত্ব। নিজেদের সম্মান বাড়ানো এবং দেশের প্রতি নিজেদের কর্তব্য পালন। দেশের সমৃদ্ধির জন্য সর্বস্তরে উন্নতি হওয়া বাধ্যতামূলক। প্রত্যেক নাগরিকের উচিত বিভেদ ভুলে দেশের উন্নয়নে অংশগ্রহণ করা।
দেশ এখন এমন এক পথে এগোচ্ছে, যেখানে সমস্ত নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার সুনিশ্চিন্ত। আজ শুধু ধর্মের ভিত্তিতে কোনও নাগরিককে বঞ্চনা করা হয় না। এটাই ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’ মতবাদের ভিত্তি।
আরও পড়ুনঃ আন্দোলনের সমর্থনে নোট লিখে দিল্লি সীমানায় আত্মহত্যার চেষ্টা কৃষকের
প্রধানমন্ত্রী বললেন, সরকার গরিবদের জন্য যে প্রকল্পগুলি গ্রহণ করছে সেগুলি কোনও ধর্মের ভিত্তিতে দেওয়া হয় না। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি সব ধর্মের মানুষ পেয়েছেন, উজ্বলা যোজনার গ্যাস সব ধর্মের মানুষ পেয়েছেন। করোনার সময় সরকারের দেওয়া খাদ্যশস্য সব ধর্মের মানুষ পেয়েছেন।
মোদীর দাবি, মুসলিম মহিলাদের শিক্ষার দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত ৬ বছরে ১ কোটি মুসলিম মহিলাকে বৃত্তি দেওয়া হয়েছে, বলেও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্বচ্ছ ভারত যোজনার আওতায় সব স্কুল-কলেজে নতুন টয়লেট তৈরি হওয়ায় মুসলিম মেয়েদের মধ্যে স্কুলছুটের সংখ্যা কমেছে।”
আরও পড়ুনঃ অযোধ্যায় বিকল্প জমিতে প্রস্তাবিত মসজিদ-হাসপাতালের নক্সা প্রকাশ
প্রধানমন্ত্রী ভাষণে এদিন উঠে এল তিন তালাক প্রথার কথাও। তাঁর দাবি, ১০০ বছর আগে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের হাত ধরে যে আধুনিক মুসলিম সমাজ গঠনের কাজ শুরু হয়েছিল, তিন তালাক প্রথা বাতিল করে তাঁর সরকার সেই সংকল্পকেই আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কার্যত, এদিনের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি নিজের একাত্মতা জাহির করার চেষ্টা করলেন।
একই সঙ্গে বোঝাতে চাইলেন তাঁর সরকার ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশে’র মাধ্যমে ‘সবকা বিশ্বাস’ অর্জন করতে চায়। পাশাপাশি সতর্কতা মূলক বার্তাও দিলেন তিনি; প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন ভারতের উন্নতিতে কিছু শক্তি বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ধর্ম সমাজের একটা অংশ, কিন্তু একমাত্র অংশ নয়। রাজনীতি পরেও হতে পারে কিন্তু রাজনীতির জন্য উন্নয়ন থেমে থাকতে পারেনা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584