মহামারিতে সমাজ কর্মী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ

0
300

প্রীতম সরকার

করোনা আবহে রাজ্য জুড়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী পালন হচ্ছে অনাড়ম্বর ভাবে। কোভিড-১৯ ভাইরাসে বিপর্যস্ত গোটা পৃথিবী।

কবিগুরু নিজেও একসময় এই ধরনের মহামারির সামনে পড়েছিলেন। মহামারি রোগের হাসপাতাল গড়ে তুলতে পথে নেমেছিলেন।

rabindranath tagore | newsfront.co
ছবিঃ প্রতিবেদক

সংবর্ধনার অর্থ দান করেছিলেন ত্রানে। তাঁর ছেলেবেলায় কলকাতায় ডেঙ্গি জ্বরের প্রদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। কলকাতার জোড়াসাঁকো এলাকা এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তবে রবীন্দ্রনাথের বড় ধরনের রোগ বা মহামারির সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটেছিল পূর্ববঙ্গে জমিদারি পরিচালনার সূত্রে।

পাবনার শাহাজাদপুর, পাতিসর, রাজশাহির শিলাইদহ তিনি প্রত্যক্ষভাবে পরিচিত হয়েছিলেন মহামারি কলেরা, বসন্ত, পিলেওঠা রোগের সঙ্গে।

rabindranath tagore | newsfront.co
ছবিঃ প্রতিবেদক

অখন পূর্ববঙ্গে এই রোগগুলী বেশি হতো। জমিদারি পরিচালনার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ যে রোগগুলি প্রত্যক্ষ করেছিলেন, তা অধিকাংশই জলবাহিত।

জমিদারিরিওর্থ দিয়ে তিনি গ্রামের প্রজাদের জন্য কয়ো ও ইঁদারা স্থাপন করে দিয়েছিলেন। রোগের হাত থেকে প্রজাদের বাঁচাতে তিনি বিভিন্ন সময়ে নানারকম সাহায্য করেছিলেন। জমির খাজনা আদায়ের ব্যাপারেও তিনি প্রজাদের অনেকটা করমুক্ত করে দেন।

rabindranath tagore | newsfront.co
ছবিঃ প্রতিবেদক

তাঁর যৌবনকাল ১৮৯৭ সালে কলকাতায় প্লেগ রোগ দেখা দিলে সরকারের কর্তব্য ও সমাজকর্মীদের কিভাবে এগিয়ে আসা উচিত, তা নিয়ে ‘ভারতী’ পত্রিকাতে একটি প্রবন্ধও লিখেছিলেন। ১৯৩১ সালে উত্তরবঙ্গে বিধ্বংসী বন্যা ও দূর্ভিক্ষে সাধারন মানুষ ভীষন সংকতে পড়েছিলেন।

আরও পড়ুনঃ লকডাউন মেনেই পালিত রবীন্দ্র জয়ন্তী

সেবছরই কবির ৭০ তম জনদিন পালন করার নেতৃত্ব দিচ্ছেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। কবি ১২ ই ভাদ্র চিঠিতে তাঁকে লিখলেন, “ শরৎ, শুনেছি তোমরা আমার অর্ঘরূপে কিছু টাকা সংগ্রহের সংকল্প করেছো। দেশে এখন দারুন দুর্দিন। তোমরা জ্যন্তী উপলক্ষে অল্পস্বল্প বা যা কিছু একত্র করতে পারবে আমার হাতে দিলে এ পূণ্যকর্মে আমার সহায়তা করা হবে।

নিজের শক্তিতে কিছু করতে পারি এ বন্যায় সে উপায় রাখিনি।“ আবার অমল হোমকে লিখেছিলেন, “অমল, জয়ন্তী উপলক্ষে আমাকে পার্স দেবার সংকল্প ত্যাগ করো।

সেটাকা তোমরা বন্যার্তদের দাও।” জীবনের প্রান্তসীমায় এসেও যখনই মহামারি বা অতিমারির কথা শুনেছিলেন, কবি বিশ্বভারতীর দল নিয়ে নাচ-গানের অনুষ্টান করে অর্থ সংগ্রহ করে পীড়িতদের সাহায্য করেছেন। যখন কলকাতায় প্লেহ রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছিল, তখন দেশ পরাধীন।

আরও পড়ুনঃ সাদামাটাভাবে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন রায়গঞ্জে

সেই পরাধীন দেশে কবি ভেবেছিলেন, প্লেগ হাসপাতাল তৈরির কথা। সঙ্গে পেয়েছিলেন, ভাইপো, বিখ্যাত শিল্পী অবনীন্দ্রনাথ এবং সিস্টার নিবেদিতাকে। চিকিৎসক, নার্স, ওষুধপত্র, চুন সঙ্গে নিয়ে পারায় পারায় যেতেন কবি। চুন ছড়িয়ে সংক্রমন ঠেকানোর চেষ্টা করতেন।

ভারতে এই ধরনের চেষ্টা এর আগের ইতিহাসে দেখা যায়নি। তাই আজ করোনা আবহের সংকটে রবীন্দ্রনাথকে আলাদাভাবে মনে পড়তে বাধ্য। শুধুমাত্র সরকারের মুখাপেক্ষি হয়ে এই সঙ্কট থেকে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব নয়। এই সময়ের পথ প্রদর্শক তো আমাদের সামনেই রয়েছেন। আমাদের অনন্ত আশ্রয় রবীন্দ্রনাথ।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here