নিজস্ব সংবাদদাতা,বর্ধমানঃজরিমানার অর্থ দিতে না পারায় এক মোটরবাইক আরোহীকে পুলিশ বেধড়ক মারধোর করে রাস্তায় ফেলে রেখে দেওয়ার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়াল বর্ধমান শহরের বিরহাটা এলাকায়। মাথায় হেলমেট না থাকায় এবং মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখাতে না পারায় বর্ধমান শহরের বিরহাটায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ার মিলে শিবরাম গৌড় নামে এক ব্যাক্তিকে ২২০০টাকা জরিমানা করেন।
ওই ব্যাক্তি তার কাছে সেই মুহূর্তে অত টাকা নেই বলে জানিয়ে বাড়ি থেকে গাড়ির কাগজপত্র এবং টাকা নিয়ে এসে দেবার কথা বললেও পুলিশ তার বাইকটি চোরাই বলে ওই ব্যাক্তিকে ফাঁড়ির মধ্যেই মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। এমনকি তার শরীরের জামা প্যান্ট খুলেও পেটান হয়েছে বলে শিবরাম গৌড় জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন,মারের চোটে জ্ঞান হারালে তাকে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে যায় সিভিক ভলান্টিয়াররা।প্রায় ৪ঘন্টা পর স্থানীয় এলাকাবাসীর তৎপরতায় ওই ব্যাক্তিকে পুলিশের গাড়ি করে চিকিৎসার জন্য বর্ধমান হাসপাতালে পাঠানো হয়।
যদিও কর্তব্যরত ট্রাফিক এবং ট্রাফিক আধিকারিক চিন্ময় বন্দোপাধ্যায় যুবকের আনা অভিযোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।
এদিকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের এহেন আচরণের প্রতিবাদে স্থানীয় মানুষ বিরহাটা পুলিশ ফাঁড়ির সামনের রাস্তা অবরোধ করে দেয়। বিশেষ করে সিভিক ভলেণ্টিয়ারদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগে রীতিমত সরব হন স্থানীয় বাসিন্দারা। উত্তেজিত জনতার সঙ্গে পুলিশের বচসাও বেঁধে যায়। পরে বর্ধমান থানা থেকে পুলিশ পৌঁছলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। স্থানীয় বেশ কিছু ব্যাবসায়ী এবং এলাকাবাসী জানিয়েছেন, প্রায়ই এই এলাকায় চারচাকা এবং মোটরবাইক আরোহীদের সঙ্গে কর্তব্যরত পুলিশ এবং সিভিক দুর্ব্যবহার করে। এই নিয়ে মাঝে মধ্যেই পুলিশ-পাবলিক বচসা তৈরী হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন দুপুরে বর্ধমানের এগ্রিকালচার ফার্মের ১নং গেট এলাকার বাসিন্দা তথা মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী শিবরাম গৌড় মোটরবাইক নিয়ে বীরহাটা এলাকায় তাগাদায় যাচ্ছিলেন। তাঁর মাথায় হেলমেট ছিল না। বীরহাটায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ তথা সিভিক ভলেণ্টিয়ারের কর্মীরা তাঁকে আটকান। মাথায় হেলমেট না থাকার পাশাপাশি তাঁর কাছ থেকে গাড়ির কাগজপত্রও তাঁরা দেখতে চান। কিন্তু অভিযোগ, শিবরাম গৌড় গাড়ির কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এমতবস্থায় তাঁকে ২২০০ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু জরিমানার টাকা দিতে না পারায় তাঁকে বীরহাটার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। শিবরাম গৌড় জানিয়েছেন, তাঁকে বলা হয়, তিনি চোরাই গাড়ি নিয়ে ঘুরছেন। কিন্তু তিনি জানান, গাড়ির কাগজপত্র তাঁর বাড়িতে রয়েছে। তিনি কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারদের কাছে গাড়ি আটকিয়ে রেখে তাঁকে ছেড়ে দেবার আর্জিও জানান। তিনি জানান, বাড়ি থেকে তিনি কাগজপত্র নিয়ে আসছেন। কিন্তু তাতেও রাজী হননি তাঁরা। এরপরই তাঁকে ফাঁড়ির মধ্যে মাটিতে ফেলে এলোপাথাড়ি বুটে করে মারা হয়। এমনকি তাঁর জামাকাপড় খুলেও পেটানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন শিবরাম গৌড়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584