জনবসতিপূর্ণ এলাকায় পাশাপাশি দেওয়ালে পাঁচিলহীন করোনা হাসপাতাল

0
39

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

কলকাতা শহরে প্রত্যেকদিন বিপুল সংক্রমণের ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে স্বাস্থ্যভবনকে। তার সঙ্গে ভিনরাজ্য ও জেলার একাধিক করোনা আক্রান্ত রোগী শহরের হাসপাতালে ছুটে আসায় শুরু হয়েছে শহরের হাসপাতালের শয্যা-সঙ্কট। এই পরিস্থিতিতে বি কে পাল অ্যাভিনিউয়ে একটি মেটারনিটি হোমকে কোভিড হাসপাতাল বানাতে গিয়ে রীতিমত বাধার মুখে পড়তে হল পুলিশকে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পাশাপাশি দেওয়ালে পাঁচিলহীন করোনা হাসপাতাল হলে উলটে তারাই সংক্রমণের বিপদে পড়বেন, এমন পোস্টার লিখে তাঁরা টাঙিয়ে দিয়েছেন ওই হাসপাতালের সামনেই।

notice | newsfront.co
সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত ৪১ শতাংশ শয্যা ভর্তি হলেও তার সিংহভাগই শহরের হাসপাতালেই ভর্তি হয়ে গিয়েছে করোনা শয্যা। তাই কলকাতায় করোনা পরিষেবা আরও বাড়াতে নার্সিংহোম থেকে মেটারনিটি হোমগুলিকেও করোনা হাসপাতাল তৈরি করার চেষ্টা করছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।

ইতিমধ্যেই রাজ্যের ৮৩ টি করোনা হাসপাতাল, ২৮ টি সরকারি এবং ৫৫ টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১১২৯৯ টি বেড নিশ্চিত করা হয়েছে। লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল উত্তর কলকাতার বি কে পাল অ্যাভেনিউর অবিনাশ দত্ত মেটারনিটি হোমের ১২০ টি বেডকেও করোনা শয্যা হিসাবে ব্যবহার করা হবে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সাল থেকে আর জি কর হাসপাতালের অতিরিক্ত ভবন হিসেবে চিকিৎসার কাজ শুরু করেছে এই মেটারনিটি হোম।

আরও পড়ুনঃ সাগরদত্ত হাসপাতালের সুপারকে বদলি

কিন্তু এই কথা ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই রীতিমত আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। একে তো হাসপাতালের দেওয়াল আলাদা নয়, তার ওপর এলাকা জনবসতিপূর্ণ। সেখান দিয়ে করোনা রোগী নিয়ে যাতায়াত করলে সংক্রামিত হওয়ার ভয় পাচ্ছেন তারা সকলেই। এর মধ্যেই মঙ্গলবার আউটডোর টিকিট দেওয়া বন্ধ হওয়ায় স্থানীয় মানুষ আরও আতঙ্কিত।

আরও পড়ুনঃ করোনা উপসর্গ থাকা ধৃতদের জন্য ‘আইসোলেশন লকআপ’-র পরিকল্পনা পুলিশের

হাসপাতালের পাশের বাড়ি ১১৭ নং বি কে পাল অ্যাভিনিউ। ওই বাড়িতে একাধিক পরিবারের বাস। তার মধ্যে এক বাসিন্দা এস কে আগরওয়ালের অভিযোগ, ” কিসের ভিত্তিতে আমার বেড রুমের ৬ ফুট দূরত্বে কোভিড হাসপাতালের দেওয়াল থাকবে ? সরকার বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার করছে , করোনা রুখতে দুই ব্যাক্তির মধ্যে দূরত্ব হবে ৬ ফুট। সেখানে ৬ ফুট দূরত্বে ১০০-র বেশি বেডের কোভিড হাসপাতাল? আমার পরিবারের করোনা সংক্রমণ রুখতে নিরাপত্তা কোথায়?”

এলাকায় ওষুধ ব্যবসায়ী মনোরম পাল দে বলেন, “হাসপাতালের পিছনের দিকে আমাদের বাড়ি। যে হাসপাতালের কোনও পাঁচিল নেই সেই হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা কীভাবে সম্ভব ? করোনা বায়ুবাহিত হয়েও ছড়াচ্ছে। কোভিড হাসপাতালের আমরা বিরোধিতা করছি না,কিন্তু আমরা নিরাপদ এই গ্যারান্টি কে দেবেন ?”

মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয়দের প্রতিবাদ পোস্টার বি কে পাল অ্যাভিনিউ ছাড়িয়ে রবীন্দ্র সরণি পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। এই ‘নিরাপত্তা’-র গ্যারান্টি ছাড়া কোভিড হাসপাতাল হলে কড়া আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় যুবকরা। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য ভবন থেকে রাজ্যপালের কাছে প্রতিবাদপত্র পাঠানো হচ্ছে। তারপরেও সমাধান না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবেন বলে জানিয়েছেন।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here