মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
ঘরের ভেতর থেকে উদ্ধার মা ও মেয়ের নিথর দেহ।চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার তুফানগঞ্জ ১ নং ব্লকের ধলপল ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের নদীভাংতি এলাকায়। মৃত ওই গৃহবধূর নাম কণিকা বিশ্বাস দাস (৩৮) ও বছর ১০-এর মেয়ে পৌলমী দাস।
ঘরের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ আসায় স্থানীয়রা এদিন খবর দেয় পুলিশকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ। পরে তারা ওই মহিলার ও তার কন্যার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ওই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পরে ওই ঘটনায় জেরে মৃতের তিন ভাশুরকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ আনন্দপুর কাণ্ডে নির্যাতিতার হবু স্বামীই ধৃত অভিযুক্ত!
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আলিপুরদুয়ারের বারোবিসার ভালুকা এলাকার মেয়ে কণিকা বিশ্বাসের বিয়ে হয় তুফানগঞ্জ ১ নং ব্লকের ধলপল ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের নদীভাংতি এলাকার সূর্যমোহন দাসের সঙ্গে। প্রায় ১২ বছর আগে বিয়ে হলেও ৮-৯ বছর থেকে স্বামী নিখোঁজ।
স্বামীর আরেক ভাইও ১২-১৩ বছর থেকে নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। স্বামীর অবর্তমানে মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন কণিকাদেবী। কিন্তু বেশ কিছুদিন যাবৎ শ্বশুর বাড়ির লোকজন কণিকা বিশ্বাস ও তার কন্যার উপর মানসিক ভাবে অত্যাচার করতে থাকেন বলেও জানা যায়। গত ১ সেপ্টেম্বর তার মায়ের সঙ্গে মোবাইলে শেষ কথা হয় কণিকার। তারপর মঙ্গলবার রাতে ফোন পেয়ে বুধবার সকালে এসে মেয়ে ও নাতনির পচাগলা দেহ দেখতে পান কণিকাদেবীর মা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শনিবার ওই ঘর থেকে পচা গন্ধ বের হচ্ছিল। কিন্তু বাইরে থেকে ঘরে তালা বন্ধ করা ছিল। পচা গন্ধ পেয়ে মঙ্গলবার মৃতার বাপের বাড়িতে খবর দেন এলাকাবাসী। তারা ভেবেছিলেন, হয়তো মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি গিয়েছেন কণিকা।
আরও পড়ুনঃ ঝাড়গ্রামে নতুন করে ১৫ জনের করোনা পজেটিভের হদিশ মিলল
কিন্তু বাপের বাড়ি থেকে যখন জানা গেল মেয়ে তাদের বাড়িতে আসেনি। তখনই সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে। গত পাঁচদিন যাবৎ ওই বাড়ি থেকে একটি দুর্গন্ধ ছড়াতেই স্থানীয়রা তুফানগঞ্জ থানার পুলিশকে খবর দেয়। পরে খবর পেয়ে তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের তালা ভেঙে মা ও মেয়ের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে এবং মৃতের তিন ভাসুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে তুফানগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।
মৃত কণিকার পরিবারের দাবি, যারা আমার মেয়েকে নৃশংসভাবে পরিকল্পিত মাফিক খুন করেছে তাদের শাস্তি চাই।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘরের তালা ভেঙে মা ও মেয়ের পচাগলা দেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার জেরে মৃতের শ্বশুরবাড়ির তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য কোচবিহার এমজেএম হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584