‌কল‍্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতর্কিত বিভাগ পরিদর্শনে নাজেহাল অধ‍্যাপক-অধ‍্যাপিকাগণ

0
1560

নিজস্ব প্রতিনিধি, কল‍্যাণী:

কল‍্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতর্কিত বিভাগ পরিদর্শনে বেশ চিন্তিত বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক-অধ‍্যাপিকাগণ। কিছুদিন আগেই উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের এ পি জে আবদুল কালাম অডিটোরিয়াম উদ্বোধন করতে এসে শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে খোভ প্রকাশ করেন। আর দু’মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ম সংস্কৃতি উন্নয়নের জন্য বেশ কড়া ভাষায় আদেশ দেন। ওই দিন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। তাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যে মন গলেনি তা তাঁর বক্তব্যেই পরিস্কার। ন‍্যাকের মূল্যায়নে এ পেলেও, অনেক সমস‍্যা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরিস্কারভাবে তিনি নির্দেশ দেন শিক্ষকদের কাজ কেবল পঠন-পাঠনে মনোনিবেশ করা। টোল খুলে বসা নয়।

নিজ আসনে।

উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীর এই কথাগুলো উপাচার্যের ভাল লাগার কথাও নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকের ধারণা উপাচার্যের অতর্কিত বিভাগ পরিদর্শনে সে কারণেই। তিনি গতকাল কলাবিভাগের ডিন তপন কুমার বিশ্বাসকে সাথে নিয়ে বিভাগগুলি ভিজিট করেন। অনেক বিভাগে গিয়ে দেখেন ১১ টার পরেও বেশিরভাগ শিক্ষকই অনুপস্থিত। উপাচার্য কারণ জানতে চাইলে অনেক অধ‍্যাপক সহকর্মীদের পক্ষ নিয়ে বলেন ”আজকে তো অফ ডে স‍্যার।” একথা বলে উপাচার্যকে সন্তুষ্ট করা যায়নি। তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের “কোনও অফ ডে হয় নাকি? এমন নক্বারজনক কাজ আমি বরদাস্ত করবো না। ছাত্রদের কোন ক্লাস অফ যেন না যায়। কোনো সমস্যা হলে আমাকে জানান।”

কাল বেশ কয়েকটি বিভাগে দু’দুবার করে পরিদর্শন করেন। সরাসরি ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেন। রানিং ক্লাশে ঢুকে ছাত্রদের মতামত চান। জানতে চান সমস‍্যার কথা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিহাস বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা উপাচার্যকে তাদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছে। ঠিক সময়ে ক্লাস হয় না, অথচ পরিক্ষার সময় ভোগান্তি পোহাতে হয় ছাত্রদের। উপাচার্য যখন তিনটের সময় দ্বিতীয় বার লোকসংস্কৃতি বিভাগে ভিজিটে ঢোকেন, একটা সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের সক্বলেই ছুট দিয়েছে। শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা। অধ্যাপকদের কাছে উপাচার্য কারণ জানতে চাইলে যথাযথ কারণ উপস্থাপন করতে পারেন নি তাঁরা। বলাবাহুল্য কলা বিভাগের ডিন প্রফেসর তপন কুমার বিশ্বাস এই বিভাগেরই বিভাগীয় প্রধান। তাঁর বিভাগের ক্লাস ছুট দেখে উপাচার্যও নাখুশ। ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার প্রথম সেমিস্টারে মাত্র ৬ জন ছাত্র ভর্তি হয়েছে। তার পর পঠন-পাঠনের এই হাল উপাচার্যকে বেশ চিন্তায় রেখেছে। কলা বিভাগের ডিন তপন কুমার বিশ্বাসও পড়াশোনার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য বেশ চড়া গলায় নিদান দিয়েছেন। সমাজতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকেও বেশ কড়া ভাষায় বলে এসেছেন। উপাচার্য ইতি মধ্যে বিজ্ঞানের বিভাগগুলিতেও পরিদর্শন করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তিনি অভিভাবকসুলভ ভাবেই তাঁদেরও অনুরোধ করেছেন পঠন-পাঠনের মান উন্নয়নের করার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের যাঁরা কর্মসংস্কৃতিকে ভালোবাসেন, উপাচার্যর এই উদ্যোগে বেশ খুশিই হ‌য়েছেন বলে জানা গেছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here