ভাস্কর ঘোষ, নিউজফ্রন্ট,ফারাক্কাঃ সোমবার বিয়ের দিনেই বিয়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শম্পা মন্ডলের। ফারাক্কা থানার নয়ন সুখ গ্রামের ছেলে বিকাশ মন্ডলের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল তাঁর। কিন্তু বিয়ের দিনে ছেলের বাড়িতে যখন বিয়েবাড়ির তোরজোড় চলছে সেই সময় বাড়ির কাছেই এক লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় ছেলের কাকিমা লতা মন্ডলের (৬২)।করবী মন্ডল নামে ছেলের আর এক কাকিমাকে ওই দূর্ঘটনায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাপাতলে ভর্তি করা হয়। নিমেষে এই দুঃসংবাদ পোঁছে যায় ১৫ কিলোমিটার দুরে ঝাড়গ্রামের কাছে সুদনা গ্রামেও। আচমকা এই দুঃসংবাদে দুই পরিবারেই নেমে আসে শোকের ছায়া। উভয় পরিবারেই বিয়ে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই খবর পেয়ে তড়িঘড়ি মেয়ের বাড়িতে ছুটে আসেন ফারাক্কা থানার আই সি উদয় শঙ্কর ঘোষ। তিনি মেয়ের বাবাকে বুঝিয়ে মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি করান। শোকস্তব্ধ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে “পথের সাথী” নামে এক অনুষ্ঠান বাড়িতে মঙ্গলবার শম্পা ও বিকাশের বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেন উদয় বাবু। স্থানীয় বিভিন্ন স্তরের প্রায় ১০০ জন মানুষকে এই বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিয়ের আসরে উপস্থিত থাকের বিডি ও কেশাং ধেনডুপ ভুটিয়া ।ফারাক্কা থানায় করা হয় রান্নার আয়োজন। রাতে পথের সাথী অনুষ্ঠান বাড়িতে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। মেনু বলতে ডাল, বেগুন ভাজা, পাঁচ তরকারি, মাছ, মাংস, চাটনি, পাঁপড়, দই আর মিষ্টি। শেষে পান।
আর যার উদ্যগে এই যুবক যুবতীর চার হাত মিলে গেল সেই আই সি উদয় বাবু বলেন, “ছেলের বাড়িতে বুঝিয়ে রাজি করিয়ে বিয়ের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।“ তবে স্থানীয় মানুষ পুলিশের এই মানবিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। মেয়ের বাবা সুজিত মন্ডল বলেন, “এত বড় বিপদের জন্য আমি মেয়ের বিয়ে বন্ধ করে দিই। কিন্তু আমাদের থানার আইসি আমার অবিভাবক হয়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে বিয়ের সবরকম ব্যাবস্থা করে দেন। আমরা উদয়শঙ্কর বাবুর কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।“ মা অর্চনা বলেন, ‘‘মেয়ের ভাগ্য সত্যি ভাল। না হলে কাল যা ঘটেছে, তার পরে বিয়ের কথা আমরা ভাবতেও পারছিলাম না।“ বিয়ের আসরে বসেও চোখের জল বাঁধ মানছিল না শম্পার।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584