নিজস্ব সংবাদদাতা,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
নিজেদের সমস্যা,চাহিদা বলতে মানুষ পাসে চাই রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রীদের।“মমতা ব্যানার্জীকে সবসময় পাইনা, সোনা পাল মমতা ব্যানার্জীর প্রতিনিধি, তাই জীবনের আপদ বিপদ হলে সোনা পালের কাছে আসি, সোনা পাল না থাকলে আমরা মমতাকে পাব না, মমতাও আমাদেরকে পাবে না।মোশা আলি সহ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর ব্লক এবং হরিরামপুর সংলগ্ন ব্লকগুলির সাধারণ তৃণমূল কর্মী ও সাধারণ মানুষদের বক্তব্য এমনটাই।তাই বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অর্পিতা ঘোষ-এর নির্দেশে ফের তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে ঘর গোছাতে আসরে সোনা পাল, এমনটাই দাবী খোদ তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হরিরামপুরের দাপুটে নেতা সোনা পাল-এর।
পুনরায় রাজনীতির আসরে নেমেই হরিরামপুরে হাজার খানেক মানুষকে নিয়ে সভা করার পাশাপাশি ২০ হাজার মানুষকে নিয়ে হরিরামপুর এলাকায় একটি জনসভা আয়োজনে উদ্যোগী হয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সোনা পাল নামে খ্যাত শুভাশীষ পাল।শুধু জনসভা আয়োজনের প্রস্তুতি গ্রহণই নয়, এদিন সোনা পালের বক্তব্যে উঠে এসেছে হরিরামপুরের যুবকদের ভীন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া প্রসঙ্গ।এদিন তিনি বলেন হরিরামপুরের বেশীরভাগ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা দিল্লী-র উপর নির্ভরশীল।তিনি বলেন হরিরামপুরের হাজার হাজার মানুষ কাজের সন্ধানে দিল্লী, কেরল, পাঞ্জাবে চলে যাচ্ছে এবং সেখানে কাজ করে টাকা পাঠানোর পর তাদের সংসার চলছে।রাজনৈতিক উত্থান হলে হরিরামপুর ব্লকের বাসিন্দাদের আর্থ সামাজিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটানোর অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার কথা ব্যাক্ত করার পাশাপাশি এই প্রসঙ্গে এদিন সোনা পাল বলেন “আমার লক্ষ্য হবে মমতা ব্যানার্জী-র আদর্শিত পথে এই সমস্ত মানুষগুলির জন্য হরিরামপুর ব্লকেই কাজের ব্যবস্থা করা, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে তাদের উন্নতিসাধন করা।” তবে মমতা ব্যানার্জী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি নিজের আনুগত্য প্রদর্শন করলেও তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র প্রসঙ্গে সোনা পাল এদিনও ছিলেন আক্রমণাত্মক।তৃণমূল থেকে সোনা পালকে জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র-র বহিস্কারের কথা উঠতেই এদিনও সোনা পাল বিপ্লব মিত্র-র বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন “আমি বিপ্লব মিত্র-র দল করিনা, আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মমতা ব্যানার্জীর আদর্শে তৃণমূল কংগ্রেস করি।”এদিন টেবিল চাপড়ে সোনা পাল বলেন ‘আমরা হরিরামপুর ব্লকের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে মজবুত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছি। যা আগামী ৫০ বছরেও কেউ নষ্ট করতে পারবে না।’তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিস্কারের পরেও একাধিক তৃণমূল নেতা পাশে দাড়িয়েছে এই দাপুটে নেতার। দলনেত্রীর উদ্দেশ্যে সোনা পালকে তৃণমূল কংগ্রেসের মূল স্রোতে ফেরানোর আর্জি তারাও ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে।তৃণমূল যুব কংগ্রেসের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক শান্তুনু দাস বলেন সোনা পাল হরিরামপুরের মানুষের হ্রদয়ে আছেন।দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব পুনরায় সোনা পালকে দিয়ে হরিরামপুর ব্লকে তৃণমূলের সংগঠন বৃদ্ধিতে ময়দানে আবার নামাবে কিনা সেই বিষয়ে তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র-র সাথে যোগাযোগ করা হলেও উনি কোন প্রতিক্রিয়া দেননি।নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে এরকম অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলির রাজ্য-কেন্দ্রীয় নেতা-নেত্রীদের বারংবার জেলা সফরে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রটি ইতিমধ্যেই পাখির চোখ হয়ে উঠেছে।বিগত ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় নির্বাচনী ফলাফলে তৃণমূল কংগ্রেসের ক্রমাগত জনসমর্থন হ্রাস এবং সাংগঠনিক দূর্বলতা ক্রমশ প্রকাশ পেয়েছে। সুতরাং বামফ্রন্ট এবং বিজেপিকে রুখতে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র-র জারি করা সোনা পাল-কে বহিস্কারের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাহার করে আদৌ ভোটের ময়দানে আবারও সোনা পাল-কে ফুল ফর্মে প্রচারে নামাবে কিনা তার উপর হরিরামপুর এবং হরিরামপুর সংলগ্ন ব্লকগুলিতে তৃণমূলের ফলাফল অনেকটাই নির্ভর করবে বলে জেলার রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারনা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584