নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
“প্রদীপের নিচে অন্ধকার”। এই বাক্যটির প্রকৃত উদাহরণ আজ প্রদীপ তৈরির কারিগররা। দীর্ঘদিন করোনার থাবাতে ব্যবসায় টান মৃৎশিল্পীদের। দুর্গাপুজাে বা লক্ষ্মী পুজােতেও লক্ষ্মী সদয় হয়নি তাদের বলে জানান তারা। অপরদিকে ভারত চিন সীমান্ত অঞ্চলের পরিস্থিতি খারাপের জন্য, পড়শি চীনের সঙ্গে সু-সম্পর্ক নেই বললেই চলে। ফলে ভারতে বাতিল হয়েছে চিনা দ্রব্যের বিক্রি।
তাই এবার দীপাবলিতে চিনা বাতির প্রভাব কিছুটা কমতে পারে বলে অনুমান মাটির প্রদীপ কারিগরদের। তাই “আশায় বাঁচে চাষার” মতন আপ্তবাক্যটিকে সম্বল করে এবারে মাটির প্রদীপ তৈরি করছেন তারা। যদি চিনাবাতির প্রভাব কমে, মাটির প্রদীপের ঝোঁক বাড়ে মানুষের। এমনিতেই সারাবছর তারা মাটির বিভিন্ন দ্রব্যাদি তৈরি করে থাকেন। সামনে আর কিছুদিনের মধ্যেই কালীপুজো অর্থাৎ আলোর উৎসব দীপাবলি। তাই জোর কদমে প্রদীপ তৈরির কাজে নেমেছেন বেলদা থানার কেদার এলাকার মৃৎশিল্পীরা।
প্রদীপ কারিগর ভানু চরণ বেরা বলেন-“করোনা পরিস্থিতির জন্য সারা বছর বিক্রি-বাট্টা নেই। কঠিন পরিস্থিতি আমাদের মৃৎশিল্পীদের। সামনেই দীপাবলি। এবার চিনাবাতির প্রভাব কিছুটা কমতে পারে বলে মনে হচ্ছে।তাই একটুকু ব্যবসার মুখ দেখতে কিছু প্রদীপ তৈরি করছি। এখন দেখা যাক কী হয়!”
অপর এক কারিগর সুবল বেরা জানান-“এই মৃৎশিল্পের কাজ বহুদিন থেকেই করছি। মাটির হাঁড়ি, কলসি, ঘট, প্রদীপ, সরা, খোল যাবতীয় মাটির জিনিস সারাবছর ধরে তৈরি করি। এবছর করোনা পরিস্থিতির জন্য গত কয়েক মাস একেবারেই রোজগার বন্ধ। তবে এবার ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনা থাকায় ভারতে চিনা দ্রব্য বাতিলের ফলে , সামনের দীপাবলিতে মাটির প্রদীপের চাহিদা বাড়তে পারে বলে মনে করছি। তাই এখন আমরা খুব বেশি পরিমাণ মাটির প্রদীপ তৈরি করছি।”
আরও পড়ুনঃ রকমারি চায়না আলোয় ব্রাত্য চিরাচরিত ‘স্বর্গবাতি’
এ বছর তাহলে সীমান্ত অঞ্চলের উত্তেজনার প্রভাব কী পড়তে পারে দীপাবলীতে? করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দিনের অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে প্রকৃত আর্থিক রসদ সংগ্রহ করতে পারবেন প্রদীপ কারিগররা? নাকি চিনাবাতি “টুনি বাল্ফ” তার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখবে!যদিও এত সব প্রশ্নের মাঝে প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতোই থেকে প্রদীপ কারিগরেরা আশায় বাঁচছেন।হয়তো এবার লাভের মুখ দেখবেন তারা !
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584