বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরাম-এই অরাজনৈতিক সংগঠনটি মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন রক্ষার্থে পশ্চিমবঙ্গ ব্যাপী আন্দোলন করছে বিগত তিন বছর ধরে।সুপ্রিমকোর্টৈও তারা আইনি লড়াই করছে একই উদ্দেশ্যে। আগামী ২১শে সেপ্টেম্বর তাঁরা কলকাতা অভিযানের ডাকও দিয়েছেন।
এই আন্দোলনের আগে ফোরামের সভাপতি ইসরারুল হক মন্ডল একান্ত ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার দেন আমাদের নিউজফ্রন্টের প্রতিবেদক আনিসুর রহমানকে।
সেই সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হল পাঠকদের সামনে।
প্রশ্ন:সুপ্রিমকোর্ট বিচারাধীন মামলায় হাইর্কোটে কিভাবে রায় হোল?
উ: ১১/৯/১৭ তারিখে হাইকোর্টে যে রায় হয়েছে,তা মাদ্রাসা সার্ভিস কমিসনের 6th SLST সিলেকশন প্রসেস সংক্রান্ত।মাদ্রাসা সার্ভিস কমিসনের বৈধ্যতা সংক্রান্ত ৯/১২/২০১৫ হাইকোর্টের ডিভিসন বেঞ্চের রায়ের উপর মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট ১৪/৩/২০১৬ স্হগিতাদেশ দেন।
সুতারাং হাইকোর্টের রায়ে কমিসনের কাজ করতে যে বাধা ছিল তাতে সামায়িক ভাবে কাজ করা অনুমতি মেলে সুপ্রিমকোর্ট ১৪/৩/২০১৬ স্টে অর্ডারের মাধ্যমে।কিন্ত কমিসন কোনভাবে এই আইন উপযোগিতা গ্রহন করছিলেন না।তাদের অন্যায় অবদার সম্পূর্ণ বৈধ্য হলেই অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করবে।কমিসনের এই মানসিকতা বহুবার ডেপুটেশন দেওয়ার পরও পরিবর্তন হয়নি,তাই অবশেষে আইনের আশ্রয় গ্রহন করতে হয়।মহামান্য হাইকোর্টে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে মামলা করার পর বিচারপতি অরজিৎ ব্যানার্জী বলেন এই যাবৎ সুপ্রিমকোর্ট কমিসনের পরীক্ষার সিলেকসন প্রক্রিয়ার উপর স্হহিতাগাদেশ দেইনি এবং পূর্বে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিসন বেঞ্চে ২০১৪সালে 6th SLSTপরীক্ষা নিতে অনুমতি দেয়।সুতারাং কমিসন কাজ চালিয়ে যাবার আইনগত বাধা দেই নেই তা তিনি উল্লেখ করেছেন।
প্রশ্ন: হাইকোর্টে মামলা টা কি আপনারা করেছিলেন?
উ: হাইকোর্টে যিনি কেস করেছেন, তিনি মাদ্রাসা সার্ভিস কমিসনের 6th SLST এর গনিত বিষয়ে উর্ওীন পরীক্ষার্থী মো: জাবিউল্লাহ।ইনি বর্তমানে ফোরামের হুগলি জেলার সভাপতি
প্রশ্ন:সুপ্রিমকোর্ট মামলা চলছে, তো আপনারা হঠাৎ হাইকোর্টে কেন মামলা করলেন?
উ: দেখুন সুপ্রিমকোর্টে যে মামলা চলছে তা হলো কমিসনের বৈধ্যতা নিয়ে।কিন্ত দূর্ভাগ্য, কমিসন ২০১৬ সালে ১৪ই মার্চ কাজ করার অনুমতি পেলেও, কমিসনের একজেদী,না কাজ করার মানসিকতা এবং সুপ্রিমকোর্ট কমিসনের বৈধ্যতা সংক্রান্ত মামলায় কমিসন শরিক না হওয়ায় পরিস্হতি জটিল হয়।১লা আগস্ট ২০১৬ সালে এই মামলায় শুনানিতে সুপ্রিমকোর্ট কমিসনকে কাজ চালিয়ে যাবার জন্য সরকারি আইনজীবিকে পরার্মশ প্রদান করেন। কিন্ত দিন-মাস অতিবাহিত হলেও কমিসন পূর্বে সিন্ধান্তে অটল থাকে,বিষয়টা পরবর্তী কালে শুনানিতে বিষয়টা সুপ্রিমকোর্ট বিষয়টা উপস্হাপিত হলে উপযুক্ত জায়গায় অর্থাৎ হাইকোর্টে জানাতে বলেন সুপ্রিমকোর্টৈর বিচারপতিগণ।
প্রশ্ন:সুপ্রিমকোর্ট এতদিন মামলা চলছে তার কারন কি?
উ: সুপ্রিমকোর্টৈ এই যাবৎ ২৫ বার শুনানি হয়েছে। মামলার গুরত্ব বুঝে সুপ্রিমকোর্ট ২৫/৪/১৭ ‘লিভগ্রান্ট’ দিয়েছেন। কাঁথি মাদ্রাসা কমিটি মূল মামলা ছেড়ে বিভিন্ন মাদ্রাসার কমিটিকে নিয়ে গিয়ে মামলা করাছেন আর কোর্টে গিয়ে বলছেন-‘হুজুর কাজ করছি বেতন পাইছিনা ইত্যাদি’। মূল বিষয়টাকে ঘুরিয়ে দিচ্ছে। এখনতো আবার মাদ্রাসা বোর্ডের বৈধ্যতা নিয়ে মামলা করেছে। প্রতিটা শুনানিতে একের পর এক নতুন করে মামলা করছেন।এখন পর্যন্ত ৪৪টা কেস করেছেন কমিটিরা।তাই বিষয়টায় অযথা জঠিলতা বাড়ছে।
প্রশ্ন:সুপ্রিমকোর্টে সরকারের ভূমিকায় আপনারা কি সন্তষ্ট?
উ: এই প্রশ্নের উত্তর সোজাসোজি হয় না।প্রথমত সরকারের কমিসন, সরকারের সুপ্রিমকোর্ট মামলা করা উচিতছিল।যাইহোক পরর্বতীকালে মানুষের দাবীকে গুরত্ব দিয়ে আমাদের করা মূল মামলায় অংশগ্রহন করেছেন। তবে আমাদের একটা ধারনা জন্মেছে -মাননীয়া মমতা ব্যানাজীকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে কমিটির সঙ্গে যোগসাজশ হয়ে আছে আমলাতন্ত্রের একটা শ্রেণীর।তার ফলে সরকারের ততটা ইচছা প্রতিফলন হচ্ছেনা। উপরন্তু সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়ছে। সুপ্রিমকোর্টৈ সরকার নিযুক্ত আইনজীবীর ভুমিকা হতাশজনক।কোন শুনানিতে সর্দথক ভূমিকা পালনে কোন একটা নস্টালজিয়া কাজ করে আমরা উপলব্ধি করেছি।
প্রশ্ন: হাইকোর্টের রায় কি সুপ্রিমকোর্টে ইতিবাচক না নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে?
উ: অবশ্যই ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
প্রশ্ন: স্কুল সার্ভিস কমিসন নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় নিয়োগের উপর স্হহিতাগাদেশ থাকা সত্বেও কমিসন কাজ করছে কিন্ত মাদ্রাসা ক্ষেত্রে সরকারের দ্বিচারিতা নীতির কারন কি?
উ: বিষয়টা খুবই জঠিল।আসল রহস্য অন্য জায়গায়।সেটা এখন থাক।মাদ্রাসার কেসটা এবং আমাদের আন্দোলন , সংখ্যালুঘু মানুষ কি চাইছে প্রকৃত তথ্য মমতা ব্যানাজীকে জানাচ্ছে। আগে বিকৃত এবং ভুল তথ্য পরিবেশন হয়ছে। তার জন্য এত বিলম্ব হয়েছে।বিশ্বাসী মানুষ অবিশ্বাসে কাজ করছেন।সঠিক তথ্য গেলে আশাকরি দিদি শীঘ্রই সমস্যা সমাধান করবেন।
প্রশ্ন: আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আপনারা কাঁথির মাদ্রাসা শরিক করেন এটা কতটা সত্য ?
উ: হাস্যকর প্রশ্ন।কাঁথি মাদ্রাসা কি মাদ্রাসা সারভিস কমিসনের পরীক্ষা নিয়েছিল।জানিনা, কোন দিন হয়তো বলে বসবে আমরা মাদ্রাসা নিয়োগ সংক্রান্ত শাখা।যতটুকু জানি ওদের কমিটি আইনগত বৈধ্যতা হারিয়েছে।তাই নিজেদের বৈধ্য হওয়া কি জরুরি নয়?
প্রশ্ন:মাদ্রাসার শূন্যপদ বতর্মানে কত?
উ:এটা কমিসন বলতে পারবে কিংবা সরকারে শিক্ষাদপ্তর বলতে পারবে।তবে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও জেলা পরিদর্শক দপ্তর থেকে খোঁজ নিয়ে জেনেছি প্রায় সাড়ে ছয় হাজারে মত।
প্রশ্ন:২১তারিখে আন্দোলনটা কোন একটা রাজনৈতিক দল পালন করেএবং নতুন বোর্ড সভাপতি যোগদান করছেন। তাই কি দিনটা নির্বাচন করলেন?
উ: হয়তো আপনি লক্ষ্য করেনি, আমরা অরাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলার চেষ্টা করছি, তাই রাজনৈতিক বিষয়টা অপ্রাসঙ্গিক। তবে হাঁ আপনি যে দিনটার গুরত্ব বোঝাবার চেষ্টা করছেন সেই দিন যেন পশ্চিমবঙ্গে আর না আসে,অত্যন্ত বেদনাদায়ক দিন।তবে নতুন মাদ্রাসা বোর্ডের সভাপতি যোগদান দিয়ে আমাদের ডেপুটেশন গ্রহন করলে আমরা খুব খুশি হবে।উনাকে আমাদের তরফ থেকে শুভেচ্ছা জানাই।
প্রশ্ন: আপনাদের বিপক্ষদের সম্পর্কে আপনার পরার্মশ..
উ: এটা কি একান্তই বলা উচিত?তবে এইটুকু,মিথ্যা কেস করছেন অসুবিধা নেই।ব্যক্তি স্বার্থ না দেখে সমগ্র জগতের মানুষের স্বার্থ,দৃষ্টিভঙ্গি,চাহিদাকে প্রধান্য দিন।
প্রশ্ন:শেষ প্রশ্ন আপনাদের আন্দোলনে রসায়ন কি?
উ:সততা,বিশ্বাস,ত্যাগ,দায়িত্ব পালন করা।সর্বপরি সৃষ্ঠির্কতার ন্যায় বিচারের প্রতি ধৈর্য ধরা।রাজনৈতিক বিষয়গুলি সঙ্গে এই ইস্যুটাকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র রাখা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584