শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
ভর্তুকি ঘোষণা করেও বরফ গলল না! রবিবার জয়েন্ট ফোরাম অফ বাস সিন্ডিকেট বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিল, ভাড়া না বাড়ালে ওই অনুদান নিয়ে বাস চালানো সম্ভব নয়। বাস মালিকদের সংগঠন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সোমবার থেকে তারা রাস্তায় বাস নামাবেন না। ফলে সোমবার থেকে রাস্তায় ফের বাস সংকটে ভুগতে চলেছেন মহানগরীর যাত্রীরা।
লকডাউনে লোকসানের খতিয়ান দেখিয়ে বাস মালিকরা বার বার ভাড়া বৃদ্ধির জন্য আবেদন করলেও প্রথম থেকেই তাতে সায় ছিল না পরিবহণ দফতরের। লকডাউনে জর্জরিত সাধারণ মানুষের ওপর আরও আর্থিক বোঝা চাপাতে চাইছিল না রাজ্য সরকার। সেই কারণে আগামী তিন মাস ১৫ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি চালক ও কন্ডাক্টরদেরও স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আনার কথা বলেছেন।
আরও পড়ুনঃ অভিনব পন্থায় পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ তৃণমূলের
কিন্তু সরকারের দেওয়া এই প্যাকেজ নেবে না বলে জানিয়েছে অধিকাংশ বাস মালিক সংগঠন। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাস ভাড়া বাড়াতেই হবে। ভর্তুকি কোনও সমাধান নয়। বাস চালাতে তাদের ১২ হাজার টাকা খরচ হয় ঠিকই, কিন্তু এতদিনের লোকসানের ক্ষতিপূরণ কে দেখবে? কম যাত্রী নিয়ে, বাস স্যানিটাইজ করে এই ভর্তুকিতে চালানো সম্ভব নয়। আর কোনও স্থায়ী সমাধান না করে তিন মাস ভর্তুকি ঘোষণায় কোনও লাভই হবে না।’
ফলে নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেল। রবিবার জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। তপনবাবু জানান, “আমাদের বাস পিছু পাঁচ জন করে কর্মী। তাঁদের টাকা দিয়ে, ৩৪ জন যাত্রী নিয়ে, বাস স্যানিটাইজ করে, পুরোনো ভাড়া জারি রেখে আমরা বাস চালাতে পারব না। তার ওপর পেট্রোল, ডিজেলের দাম রোজ বাড়ছে। রাজ্য সরকারের ১৫ হাজার টাকা ভর্তুকিতে আমাদের কী হবে? আমরা কী পকেটের পয়সা দিয়ে বাস চালাব?”
আরও পড়ুনঃ থমকে নদী ভাঙন রোধের কাজ, উদ্বেগে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা
বাস মালিকদের তরফে এদিন বলা হয়েছে, পুরনো ভাড়ায় যত সিট তত যাত্রী নিয়ে বাস চালালে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। আর মুখ্যমন্ত্রী যে অনুদানের কথা বলেছেন তা হিসাব কষলে দেখা যাবে প্রতি দিন ৫০০ টাকা করে ঘাটতি মিটবে। তাঁদের প্রশ্ন, তাহলে বাকি টাকাটা আসবে কোথা থেকে? আর এভাবে লোকসানের খতিয়ান আরও লম্বা হতেই থাকবে। তাই বাস না চালানোই সবচেয়ে ভাল।
এদিকে সরকারি বাস বেশি করে চালালেও এত চাপ নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ কলকাতা শহরে মেট্রো না চলা এবং অল্প সংখ্যায় বেসরকারি বাস চলার ফলে পুরো চাপটাই সরকারি বাসের ওপর এসে পড়ছে। যদিও সরকারের সঙ্গে আলোচনা পর্বে অনেক বাস মালিক রুটে গাড়ি নামিয়েছিলেন। কিন্তু এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল, প্রতিদিন ক্ষতির বোঝা মাথায় নিয়ে বাস চালানো সম্ভব নয়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584