পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বিশ্বভারতীর। এবার বিশ্বভারতীর কর্মসচিবের সুবিচার চেয়ে আদালতে মামলা করল বিশ্বভারতীর শিক্ষক সংগঠনের অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য্য। প্রাক্তন উপাচার্য সবুজ কলি সেন সহ তিন আধিকারিকের বিরুদ্ধে বর্তমান বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের শাস্তির কোপের জেরের রেশ না মিটতেই, ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের বোলপুর মুখ্য বিচারবিভাগীয় অতিরিক্ত দায়রা আদালতে।
চলতি বছরের ২৯ অগাস্ট দায়ের করা মামলাটি মূলতঃ মামলাকারীর অভিযোগকে এফআইআর হিসেবে থানায় নিবন্ধিত করার জন্য আদেশ চেয়ে একটি পিটিশন দেওয়া হয়। যেখানে স্পষ্ট অভিযোগ করে ভিবিউফা নামে বিশ্বভারতীর শিক্ষক সংগঠনের সদস্য তথা অর্থনীতির অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেছেন, একটি অসত্য অন্যায় অভিযোগ করে তাঁর চাকুরী জীবনকে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
এব্যাপারে মামলাকারী অধ্যাপক জানান, কর্তৃপক্ষের বশংবদ না হলেই মিথ্যা অভিযোগ করে, একের পর এক শিক্ষকের উপর শাস্তির কোপ নেমে আসছে।
আরও পড়ুনঃ জাপানি লেখকের চরিত্রের দ্বারা ‘অনুপ্রাণিত’ হয়ে মা-দাদাকে খুন করল কিশোরী!
তাই, বিশ্বভারতীর স্বেচ্ছাচারিতার আশঙ্কা থেকেই সুবিচার চেয়ে এই মামলা। মামলাকারী অধ্যাপক আদালতে জানিয়েছেন, চলতি বছরের ২১ জুন তিনি ভিবিউফা শিক্ষক সংগঠনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পৌষমেলা চলাকালীন উপাচার্যের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ শান্তিনিকেতন থানায় দায়ের হওয়ার পর, “মোমবাতি মিছিল ডাকা হলে, সেই মিছিলে হাঁটলে বিশাখা কমিটির গাইড লাইন ভাঙা হবে কিনা, সেটা ভাবতে হবে।“
সংগঠনের নিজস্ব গ্রুপে সেই ব্যক্তিগত মেসেজ কেউ বিশ্ব ভারতীর গোচরে আনেন। তার পর ১ জুলাই ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব আশা মুখোপাধ্যায় তার প্রেক্ষিতে অভিযোগকারী সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে একটি রেজিস্ট্রার্ড মেমো নং সম্বলিত চিঠি দিয়ে ৩ জুলাইয়ের মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইবার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বভারতী কাণ্ডে চাই সিবিআই তদন্ত! মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে
ওই চিঠিতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ফেসবুকে তাঁর এই পোস্ট, শুধু কোন ব্যক্তি নয়, বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কুৎসার অভিযোগ। যদিও, মামলাকারীর দাবি, ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব, মিথ্যাচার করেছেন। ফেসবুকের মতো কোন পাবলিক ডোমেইন বা জনসমক্ষে এই পোস্ট হয় নি।
আরও পড়ুনঃ অজানা জন্তুর আক্রমণে জখম তিনজন! আতংক গড়বেতায়
যা হয়েছে বিশ্বভারতীর কর্মী অর্থাৎ একটি শিক্ষক সংগঠনের নিজস্ব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে, যার সদস্য কর্মসচিব নন। তাই এই ব্যক্তিগত বিষয় তাঁর জানার কথা নয় এবং এর জন্য কোন কৈফিয়ত দিতে তিনি আইনতঃ বাধ্য নন। ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে তিনি চিঠি দিয়ে বলেন, দু’দিনের মধ্যে অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা না চাইলে, তাঁর বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ করা হবে।
পাশাপাশি, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্থা যাঁরা এই সমস্ত অভিযোগ দেখেন, কড়া পদক্ষেপ চেয়ে বিষয়টি তাঁদের গোচরে আনা হবে।
কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই অতিরিক্ত নজরদারি শুধু ব্যক্তি বা সংগঠন নয়, বিশ্বভারতীর মত প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকার ভঙ্গের নামান্তর বা সুনামের পরিপন্থী বলে মনে করছেন, শিক্ষকদের একাংশ। যা ইতিপূর্বে কখনও ঘটেনি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584