মেদনীপুর শহরে জেলা কংগ্রেসের বিক্ষোভ কর্মসূচি

0
59

নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ

ভারতবর্ষের সুরক্ষা ও অখন্ডতা জাতীয় কংগ্রেসের কাছে বরাবরই সর্বোচ্চ গুরুত্ত্ব পেয়ে এসেছে।জাতীয় সুরক্ষা ও অখন্ডতা রক্ষায় ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের আত্মত্যাগ এবং তৎপরতা স্বাধীনোত্তর ভারতে কার্যত নজিরবিহীন। ১৯৪৭ সালের পর থেকে প্রত্যেক কংগ্রেস সরকার দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারও তার ব্যতিক্রম ছিল না।ভারতীয় বিমান বাহিনীকে শক্তিশালী এবং স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে ড.মনমোহন সিং এর সরকার ২০১২ সালে ফ্রান্সের যুদ্ধবিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা রাফেলের সাথে এক চুক্তি করে।সেই চুক্তি অনুযায়ী ঠিক হয় ভারত সরকার রাফেলের কাছ থেকে একশ ছাব্বিশটি (১২৬) যুদ্ধ বিমান ক্রয় করবে চুয়ান্ন হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে।এর মধ্যে আঠারটি বিমান সরাসরি ফ্রান্স থেকে আমদানি করবে।বাকি একশ আট(১০৮) টি বিমান ভারত সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্তান এরোনটিক্যালস (হ্যাল) তৈরি করবে। বিমান বানাবার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি হ্যালকে হস্তান্তরিত করবে রাফাল।অর্থাৎ ২০১২ সালের ভারত সরকার এবং রাফালের চুক্তি অনুযায়ী চুয়ান্ন হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে ভারতের শুধু একশ ছাব্বিশটি যুদ্ধ বিমান পাওয়ার কথা ছিল না,তার সাথে সাথে যুদ্ধবিমান তৈরির আধুনিক প্রযুক্তিও ভারতের করায়ত্ত হত। যে কোন প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ব্যাপারেই প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ণ ব্যাপার তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

নিজস্ব চিত্র

কিন্তু পুরো চিত্রটাই বদলে গেল ২০১৬ সালের ২৩ শে সেপ্টেম্বর।ততদিনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার ক্ষমতায় এসেছে।নরেন মোদী দেশের স্বনিযুক্ত চৌকিদার হয়ে উঠেছেন।তিনি উল্লিখিত তারিখে ফ্রান্স সফরে ছিলেন। এই তারিখেই ২০১২ সালে ইউ পি এ সরকারের সাথে করা রাফেলের চুক্তি বাতিল করে তিনি নতুন চুক্তি করেন। দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত এতবড় চুক্তি মোদীজি সেরে ফেললেন অথচ তাঁর সাথে সেই সফরে ভারতবর্ষের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ই ছিলেন না। যাঁরা ছিলেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম শ্রী অনিল আম্বানি। কেন উল্লেখযোগ্য তার উত্তর আমরা পাব, আগে দেখে নেওয়া যাক নতুন চুক্তির শর্তাবলী। ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ তে ভারত সরকারের সাথে রাফালের নতুন চুক্তি অনুযায়ী ভারত সরকার ফ্রান্সের সংস্থার কাছ থেকে ছত্রিশ (৩৬) টি যুদ্ধ বিমান কিনবে আটান্ন (৫৮) হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে। অর্থাৎ যে টাকায় ড. মনমোহন সিং এর সরকার একশ ছাব্বিশটি(১২৬) যুদ্ধ বিমান কেনার চুক্তি করেছিল ৫৬ ” ছাতির চৌকিদারের সরকার তার থেকে চার হাজার কোটি টাকা বেশী খরচ করে কিনবে মাত্র ছত্রিশটি (৩৬)বিমান। শুধু তাই নয়,নতুন চুক্তি অনুযায়ী কোন প্রযুক্তি রাফাল ভারত সরকারকে দেবে না। পরিভাষায় যাকে ওফফসেত অব্লিগাতিওন্স বলে সেই অনুযায়ী তিরিশ হাজার কোটি টাকা তারা বিনিয়োগ করবে রিলায়েন্স ডিফেন্স লিমিটেড নামক এক ভুঁইফোড় বেসরকারি কোম্পানিতে,যাদের যুদ্ধ বিমান তৈরির ক্ষেত্রে কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।এই কোম্পানির মালিকের নামই অনিল আম্বানি, যিনি প্রধানমন্ত্রীর ফ্রান্স সফরের সঙ্গী ছিলেন,প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বদলে।

কংগ্রেস দেশের প্রতিরক্ষা নিয়ে সস্তা রাজনীতি করতে চায় না। কিন্তু মোদী সরকারের রাফাল চুক্তি একাধারে আর্থিক বেনিয়ম এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুনমানের সাথে আপোষের নিদর্শন।তাই দেশের প্রতিটি কোনায় এর বিরোধিতা করে প্রকৃত তথ্য জনসাধারণের কাছে পৌছে দিতে কংগ্রেস বদ্ধপরিকর। জেলা সভাপতি শ্রীসমীর রায়ের নেতৃত্বে এবং এ আই সি সি সম্পাদক শ্রী শারদ রাউতের উপস্থিতিতে জেলা কংগ্রেসের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হল মেদিনীপুর শহরের কালেক্টর মোড়ে।

আরও পড়ুনঃ বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে উদ্যোগী পশ্চিমবঙ্গ বনবিভাগ

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here