মনিরুল হক,কোচবিহারঃ
বিবাদ ভুলে দলের ঘুরে দাঁড়ানোর কর্মসূচী ‘জনসংযোগ যাত্রা’য় যোগ দিতে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের সব গোষ্ঠীর নেতৃত্বকে।আজ কোচবিহার শহর তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ‘জনসংযোগ যাত্রা’ কর্মসূচী উপলক্ষে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। ওই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, দলে তাঁর বিরোধী শিবিরের নেতা হিসেবে পরিচিত বিধায়ক মিহির গোস্বামী, দলের জেলা কার্যকারী সভাপতি পার্থ প্রতিম রায় ও যুব নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিক।
লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২ টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৮ টিতে জয়লাভ করে বিজেপি। এর মধ্যে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে।ওই পরাজয়ের পর জেলায় তৃণমূলের সংগঠন মারাত্মক ভাবে ভাঙতে শুরু করে।দলে দলে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বরা বিজেপিতে যোগদান করেই চলেছেন। তৃণমূল মন্ত্রী, বিধায়করা গ্রামে গেলেই ক্ষোভ বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন। পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিরা এলাকায় থাকতে পারছেন না। যারা রয়েছেন, তাঁদের অনেককেই প্রতিনিয়ত কাটমানির টাকা ফেরত দেওয়ার বিক্ষোভ তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
এই অবস্থায় সংগঠনকে শক্তিশালী করতে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি কোচবিহারেও ‘জনসংযোগ যাত্রা’ কর্মসূচীর নেয় তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিন কোচবিহারে ওই কর্মসূচীর মিছিলে অংশ নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের হাত ধরেই তৃণমূল কংগ্রেস ফের তার ভিতকে শক্ত করবে। গত লোকসভা নির্বাচনে ধর্মীয় উন্মাদনার কারণে এরাজ্যে কিছুটা ধাক্কা খেয়েছিল দল। এই বিপর্যয় সাময়িক। মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে বিজেপির প্রতি। রাজ্যে কয়েকটি লোকসভা আসন জেতার পরই সন্ত্রাসের বাতাবরন তৈরি তারা।” বাংলা নামকরণ নিয়ে কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি এরাজ্যের সাথে বৈমাতৃসুলভ আচরণ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
কোচবিহার জেলা তৃণমূলের কার্যকারী সভাপতি পার্থ প্রতিম রায় বলেন, ‘গ্রামগঞ্জে বিজেপির লুঠেরারা সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার করছে। ওই অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ‘ব্যলট ফেরাও গণতন্ত্র বাঁচাও’ আন্দোলনকে সামনে রেখে জনমত গঠন করতে উদ্যোগী হয়েছি আমরা।’
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। দিন যত এগোতে থাকে সেই কোন্দল চরম আকার নিতে থাকে।গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে লোকসভা পর্যন্ত কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের মাদার বনাম যুব’র লড়াই মারাত্মক আকার নেয়। টানা গোষ্ঠী সংঘর্ষে সাধারণ মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সাথে লড়াই অনেক কঠিন জেনেও তৃণমূলের অনেকেই সেভাবে প্রচারে নামে নি। কোচবিহারের মত শক্ত ঘাঁটিতে দলের ওই পরাজয়ের জন্য গোষ্ঠী কোন্দলকেই বেশী দায়ি করে আসছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অনেকেই।
আরও পড়ুনঃ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে পুলিশ,অভিযোগে থানা ঘেরাও তৃণমূলের
পরাজয়ের পর জেলার সাংগঠনিক রদবদল হয়েছে। এবার সব গোষ্ঠীর নেতৃত্বকেও এক সাথে মিছিল করতে দেখা গেল।এই চিত্র কতটা সময় জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ধরে রাখতে পারে,এখন সেটাই দেখার।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584