পিয়া গুপ্তা,উত্তর দিনাজপুরঃ
একসময় উত্তর দিনাজপুর জেলার মনোরঞ্জনের এক মাত্র মাধ্যম ছিল পুতুল নাচ ।শীতের মরশুমে সেই দাপিয়ে বেড়ানো পুতুল নাচ শিল্পীদের আজ মন খারাপ।কারণ ধীরে ধীরে গ্রাম বাংলায় দাপিয়ে বেরানো পুতুল নাচ আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির যাঁতাকলে পরে ঘরে ঘরে বোকা বাক্সের দৌলতে কাঠ পুতুল নাচ আজ ইতিহাসে পরিনত হতে চলেছে।পশ্চিমবঙ্গ সহ ভিন রাজ্য দাপিয়ে বেরানো উত্তর দিনাজপুর জেলার ”দাদা ভাই” পুতুল নাচের শিল্পীরা আজ অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ শহরের বিখ্যাত বালাস গ্রাম।যারা এক সময় রাজ্য সহ ভিন রাজ্যে কাঠ পুতুল নাচ দেখিয়ে মানুষকে আনন্দ দিতেন, পুতুল গুলিকে সযত্নে রাখতেন, যাতে পুতুলের মুখের রং সহ জামা কাপড় নোংরা না হয়। আজ সেই সকল পুতুল গুলো শিল্পীদের মাটির ঘরের এক কোনে পড়ে রয়েছে অনাদরে অযত্নে।আগে সরকারি প্রচার মূলক কাজে কাঠ পুতুল নাচ প্রচারের অন্যতম মাধ্যম ছিল।
কিন্তু শিল্পীদের আক্ষেপ সরকারি প্রচার মূলক কাজে পুতুল নাচ দেখাতে তাঁদের আর সেভাবে ডাকা হয়না।পুতুল নাচ শিল্পী হরগোবিন্দ দেবশর্মা, বাবলু সরকার, ভাণ্ডারু দেবশর্মা বিগত দিনের স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে জানান, “আমাদের রুজি রোজগারের অন্যতম পথ ছিল পুতুল নাচ খেলা দেখানো।কাঠের গুড়ি কেটে তা দিয়ে পুরুষ ও মহিলা কাঠের পুতুল বানাতাম। সেগুলি পুতুলকে বিভিন্ন পালাতে বিভিন্ন সাজে কখনও রাজা তো আবার কখনও চাষি সাজানো হতো। পশ্চিমবঙ্গের সাথে সাথে বিহার সহ অন্য রাজ্যে গিয়ে আমরা সাধারণ মানুষকে আনন্দ দিয়ে বেড়াতাম এক সময়।মাস গেলে আগে যা উপার্জন হতো তা দিয়ে দিব্যি সংসার চলে যেত।বর্তমানে টেলিভিশন ও মোবাইল গ্রামে গঞ্জে ঢোকার পর মানুষের পুতুল নাচ দেখার প্রতি ঝোঁক কোমে গেছে মানুষের। এখন আমরা লোকের জমিতে লেবারের কাজ করি।
কেউবা নিজের সামান্য জমি চাষ করে সংসার চালায়। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধোপাধ্যায় গ্রাম গঞ্জের শিল্প সংস্কৃতিকে সকলের সামনে তুলে ধরতে ও শিল্পীদের সাহায্যের ক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁর দৃষ্টি যদি আমাদের উপর পড়ে তাহলে আমরা আগামী দিনে নতুন করে পুতুল নাচ শিল্পকে সকলের সামনে তুলে ধরতে পারবো।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584