পূর্ব মেদিনীপুরে প্রার্থী হিসাবে পিতা-পুত্র জুটিতে উদ্দীপিত কর্মীরা

0
95

নিজস্ব সংবাদদাতা,পূর্ব মেদিনীপুরঃ

Purba Medinipur election candidate father and son
দিব্যেন্দু অধিকারী।নিজস্ব চিত্র

তৃণমূল সরকারের উত্থানের শুরু থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ছিল তৃণমূলের এক শক্ত ঘাঁটি।আর এই শক্ত ঘাঁটিকে ভবিষ্যতেও নিজেদের হাতের মুঠোয় ধরে রাখতে বাবা শিশির অধিকারী ও ছেলে দিব‍্যেন্দু অধিকারী জুটিকেই আগামী লোকসভা নির্বাচনের দুই কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Purba Medinipur election candidate father and son
শিশির অধিকারী।নিজস্ব চিত্র

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এইরূপ পদক্ষেপে কার্যত খুশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা।গত মঙ্গলবার তৃণমূল-কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আগে পর্যন্ত বাবা-ছেলেকে এবারও জেলার দুই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে পাবেন কিনা এনিয়ে উদ্বেগে ছিলেন জেলার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।

আরও পড়ুন: জটেশ্বরে বাম প্রার্থীর সমর্থনে কর্মী সভার আয়োজন

মঙ্গলবার বিকেলে টেলিভিশনের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে শুনতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন কর্মী-সমর্থকরা।এরপর পছন্দের প্রার্থীকে জয়ের মুখ দেখানোর জন্য নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়ে জেলার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট লোকসভা কেন্দ্রের সংখ্যা দুটি।যার মধ্যে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল-কংগ্রেসের এবারের প্রার্থী ওই কেন্দ্রেরই বিদায়ী সাংসদ দিব‍্যেন্দু অধিকারী এবং কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল-কংগ্রেসের এবারের প্রার্থী প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা ওই কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ শিশির অধিকারী।তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে ২০১৬ সালে দাদা শুভেন্দু অধিকারী সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরই ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে সাংসদ হয়েছিলেন দিব‍্যেন্দু অধিকারী।

এর আগে তার প্রথম রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় কলেজের ছাত্র রাজনীতি থেকে।দিব‍্যেন্দুবাবু বহুবার পুরভোট ও বিধানসভা ভোটেও জয়লাভ করেছেন।এরপর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে শুভেন্দু অধিকারী তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়ক পদে নির্বাচিত হওয়ার পরই ২০১৬ সালে তমলুকে লোকসভা ভোটের উপনির্বাচনে দাঁড়ান দিব‍্যেন্দুবাবু।

সেই ভোটে ৫৯.৭৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন তিনি।এরপর ফের ওই লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল-কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে এখন দিব‍্যেন্দুবাবু।অপরদিকে,কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল-কংগ্রেসের এবারের প্রার্থী পোড় খাওয়া রাজনীতিক শিশির অধিকারী।সেই ১৯৫৮ সাল থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ শিশিরবাবুর।এরপর ধিরে ধিরে তিনি পঞ্চায়েত,পুরসভা,বিধানসভা ভোটে নির্বাচিত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলে এসেছেন।

২০০৯ সালে তিনি প্রথম কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল-কংগ্রেসের প্রতীকে দাঁড়ান।সেই ভোটে তিনি জয়লাভ করে কেন্দ্রের রাষ্ট্রমন্ত্রীও হয়েছিলেন।এরপর ২০১৪ সালে আবারও ওই লোকসভা কেন্দ্রে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হওয়া শিশিরবাবুর।তবে এবারও লোকসভা নির্বাচনে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র থেকেই দাঁড়াচ্ছেন শিশিরবাবু।

জয়ের ব‍্যাপারে আশাবাদী শিশিরবাবু জানান,“বছরের ৩৬৫দিন সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছি তাই সাধারণ মানুষ ভোটবাক্সে ভালো প্রভাবই ফেলবে”।লোকসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে শিশিরবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি পরিষ্কার ভাষায় জানান,“ওরা মুছে যাওয়া নিকৃষ্টতম দল ওদের সম্পর্কে আমার বলার কিছু নেই।”সবমিলিয়ে তৃণমূল-কংগ্রেসের প্রতীক নিয়ে এখন জয়ের লক্ষ্যে শিশির-দিব‍্যেন্দু উভয়েই।

১৪ই মার্চ নন্দীগ্রামে শহিদ তর্পনের পরেই শুরু হয় দিব‍্যেন্দুবাবুর নির্বাচনী প্রচার।আবার কাঁথিতেও শিশিরবাবুর সমর্থনে জোরকদমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্বরা।শনিবার সকল থেকে কাঁথি ৩নং অঞ্চলের কুসুমপুরে মনসা পুজো উপলক্ষে ভোগ বিতরণের অনুষ্ঠান চলছিল।

সেখানে বেঞ্চের ওপর বসে পুজোয় আগত দর্শনার্থীদের নিয়ে দিলখুশ ভাবে শিশিরবাবুর সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার সারেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কণিষ্ক পন্ডা।তিনি জানান,“সাধারণ মানুষ আমাদের পাশে আছেন।যার প্রমাণ মিলবে লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিনই।”সবমিলিয়ে জেলার দুইপ্রান্তে তৃণমূলের হয়ে জোরদার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বাবা শিশির ও ছেলে দিব‍্যেন্দু উভয়েই।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here