মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
রাজনৈতিক সংঘর্ষের কারণে কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গা বেশ উত্তপ্ত। গতকাল জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদককে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ তৃণমূল বিরুদ্ধে। যদিও ওই গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর এই নিয়ে গতকাল দুপুরে থানা ঘেরাও কর্মসূচী গ্রহণ করে বিজেপি।
সেই কর্মসূচী ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মাথাভাঙ্গা। ভাঙচুর করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়। তারই প্রতিবাদে আজ মাথাভাঙ্গা মেলার মাঠে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হয়। সকাল ১১টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচী চলে। এদিন ওই কর্মসূচীতে যোগ দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয় মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগার পাশাপাশি কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে সোনার দোকানের বিভিন্ন ডাকাতির ঘটনায় আসামি হিসেবে আখ্যা দেন। তার নামে নাকি অনেক গুলো ননবেল সেকশনে অভিযোগ আছে পুলিশের কাছে।
আরও পড়ুনঃ মনোরঞ্জনের উপর হামলার প্রতিবাদে মিছিল তৃণমূলের
এদিন তিনি বলেন,”বিজেপিতে সব নাককাটা, কানকাটা, পেটকাটা, গলাকাটারা নেতৃত্ব দিচ্ছে। আর কোচবিহার জেলার বর্তমান বিজেপির সাংসদ নিশীথ প্রামানিক অস্ত্রের ডিলার। তার বাড়িতে অস্ত্র, বোমা তৈরীর কারখানা রয়েছে। এদের কোন নীতি আদর্শ নেই। ২০২১ এ ব্যালটে মানুষ তার জবাব দেবে।”
কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন,”আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই আমরা সবাই এক। কিন্তু কিছু কিছু সাংবাদিক আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়।” তিনি আরও বলেন, বিজেপি যেন না ভাবে আমাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে। এই ঘটনার পর কোন বিজেপি নেতা কর্মীকে ছাড়া হবে না, যারাই বদমাইশি করবে তাদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ফ্লেক্স ছেঁড়া ঘিরে তরজা দাঁতনে
এই বিক্ষোভ অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলার চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মন, জেলা সভাপতি পার্থ প্রতিম রায়, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, জেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল আহমেদ, আবু তালেব আজাদ, বিধায়ক হিতেন বর্মন সহ দলীয় নেতৃবৃন্দ।
এদিন এই বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেই কারণে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকেন মাথাভাঙ্গার অ্যাডিশনাল এসপি সিদ্ধার্থ দর্জি, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুরজিৎ মন্ডল, মেখলিগঞ্জ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক চন্দন দাস, মাথাভাঙ্গা থানার আইসি তপন পাল সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতে মাথাভাঙ্গা শহরে বিজেপি নেতা অভিজিৎ বর্মনকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। গুলি যদিও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। ওই ঘটনায় তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলে শুক্রবার মাথাভাঙ্গা থানা অভিযানের ডাক দেয় বিজেপি। বিজেপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এদিন সকাল থেকে থানার সামনে ছিল কড়া পুলিশি পাহাড়া। শুক্রবার দুপুরে বিজেপি কর্মীরা মিছিল করে থানার দিকে এগোতেই তার ওপর তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুনঃ দিনহাটার নাজিরহাটে বিজেপি পার্টি অফিসে হামলার অভিযোগ তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে
বিজেপির মিছিল লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। এরপর পাল্টা ভাঙচুর শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। একাধিক গাড়ি, মোটরসাইকেল ও টোটোতে ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুর চালানো হয় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের একটি কার্যালয়ে। বেশ কিছুক্ষণের তাণ্ডবের পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। এর পর দুপক্ষকেই এলাকা থেকে সরিয়ে দেয় তারা। তার প্রতিবাদের আজকের এই প্রতিবাদ সভা বলে জানা গেছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584