আর উপায় ছিল না! বিরল দৃষ্টান্ত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে

0
73

উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ

সোনারপুরের কুণাল হালদারের ডান হাত ভেঙে চার টুকরো। ডান হাত প্লাস্টারে মোড়া। বাম হাত দিয়ে একটি স্ট্রেচারে হাওড়ার গুলজার মল্লিক ( পয়ষট্টি) নামে প্রৌঢ় রোগীকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। স্ট্রেচারে ভাঙা পা নিয়ে শুয়ে গুলজার। দু’জনে পরস্পরের অপরিচিত হলেও পরিস্থিতির শিকার দুজনেই।

man struggle | newsfront.co
বাঁচার লড়াইয়ে পাশাপাশি। নিজস্ব চিত্র

বুধবার এমন অকল্পনীয় ছবিই দেখা গেল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে!বাম হাত দিয়ে স্ট্রেচারের উপরে তুললেন পা ভেঙে যাওয়া পয়ষট্টি বছরের গুলজারকে। দু’জনেরই অস্ত্রোপচার দরকার। অথচ করোনা পরীক্ষা না করলে ওটিতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। সে কারণেই ডাক্তারের নির্দেশমতো সকাল থেকে তাঁরা করোনা পরীক্ষার অপেক্ষা করছিলেন। হাত-পা ভাঙা দুই রোগীই স্ট্রেচারেই নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এগিয়ে আসেননি হাসপাতালের কোনও কর্মী। ওদিকে, আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষার সময় পার হয়ে যাচ্ছে। বুধবার পরীক্ষা না হলে ফের অনিদিষ্ট সময় ধরে অপেক্ষা করতে হবে। পিছিয়ে যাবে অস্ত্রোপচার।

man | newsfront.co

সোনারপুরের বাসিন্দা কুনাল হালদার শত অনুরোধেও ব্যবস্থা করতে পারেননি। অগত্যা নিজেই ডেভিড হেয়ার ব্লকে থেকে একটি স্ট্রেচার টেনে আনেন। সেই স্ট্রেচারে তোলেন তার পাশে ভর্তি থাকা পা ভেঙে যাওয়া হাওড়ার বাসিন্দা ৬৫ বছরের গুলজার মল্লিককে। কলকাতা মেডিকেল কলেজ চত্বর দেখল, ডান হাতে প্লাস্টার থাকা অবস্থায় একজন রোগী বা হাত দিয়ে স্ট্রেচার টানতে টানতে যাচ্ছেন সুপার স্পেশালিটি ব্লকের দিকে।

আরও পড়ুনঃ পাত পেড়ে মাংস ভাত, স্থানীয় কাকুদের এই উদ্যোগে খুশি শম্পা – প্রিয়াঙ্কারা

কুনাল হালদার বলেন,”আজই(৪ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার মধ্যে পরীক্ষা করতে হবে। না গেলে আর হতো না। আমার ডান হাত চার টুকরো হয়ে আছে। ওটি করার ডেট দেওয়া হয়েছে। করোনার পরীক্ষার রিপোর্ট না পেলে অস্ত্রোপচার হবে না। একই অবস্থা এই বৃদ্ধ মানুষটির। বারে বারে ডেকেছি। কেউই রাজি হননি। বাধ্য হয়েই নিজেই এলাম। আমাকেও বাঁচতে হবে, ওকেও। আর উপায় ছিল না।”

আরও পড়ুনঃ মথুরাপুরে মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা

৬৫ বছরের গুলজার বললেন,”এই ছেলেটি আমার কাছে সাক্ষাৎ ঈশ্বরের রূপ। ওই আমাকে বলল, আপনি স্ট্রেচারে উঠুন। সাহায্য করল। ভাঙা পা নিয়ে আমি তো নড়তেও পারিনা। ওই-ই বলল, আমি টেনে নিয়ে যাব।” শেষপর্যন্ত পরীক্ষা করাতে পেরেছেন তাঁরা। গোটা ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার আগে পর্যন্ত মেডিক্যাল কলেজের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here