পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
কথায় বলে নারীর ভূষণ গহনা, সেই গহনা প্রান কেড়ে নিচ্ছিল বছর পঁচিশের এক যুবতীর। প্রাণ বাঁচাতে অস্ত্রোপচার করে হতভম্ব রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক সিদ্ধার্থ বিশ্বাস সহ হাসপাতালে অন্যান্য রোগীরা।
রোগীর পাকস্থলীর মধ্যে থেকে তাঁরা বের করলেন একের পর এক গহনা,কয়েন, আস্ত হাত ঘড়ি,পুঁথি,পাথর থেকে শুরু করে লকেটও। সবমিলিয়ে যার ওজন কেজি দু’য়েক!
রামপুরহাট হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক সিদ্ধার্থ বিশ্বাসের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল এদিন এই অস্ত্রোপচার করেন। মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীর পেট থেকে ওই সমস্ত গয়না বের করা হয়। আপাতত ওই রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল।
দিন সাতেক আগে পেটে ব্যথা এবং বমি ভাব নিয়ে সিদ্ধার্থবাবুর কাছে এসেছিলেন বীরভূমের মাড়গ্রামের বাসিন্দা মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণী। তরুণীর পেটের এক্স রে এবং সিটি স্ক্যান রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন যে তাঁর পাকস্থলীতে ধাতব কিছু জমে আছে।
ওই চিকিৎসক জানান, তরুণীর পাকস্থলীতে থাকা ধাতব জিনিসের ওজন এতটাই বেশি ছিল যে তার ভারে পেট ঝুলে পড়েছিল।তরুণীর অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিলেও তাঁর শারীরিক অবস্থা তার উপযোগী ছিল না। হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ তলানিতে ঠেকায় অস্ত্রোপচারের আগে তাঁকে পাঁচ বোতল রক্ত দিতে হয়। শেষ পর্যন্ত বুধবার ওই তরুণীর অস্ত্রোপচার করা হয়।
দেখা যায়, তরুণীর পাকস্থলীর মধ্যে অসংখ্য গয়না রয়েছে। তার মধ্যে তামার হার, কানের দুল, আংটি, বালা সবই রয়েছে। মোট নব্বইটি দশ টাকার কয়েন পাওয়া যায় তাঁর পেটে। এ ছাড়াও বেশ কিছু দু’ টাকা এবং পাঁচ টাকার কয়েনও ছিল। ষাটটি রুপোর কয়েনও পাওয়া যায় তরুণীর পেটে। এছাড়াও পুঁথি, পাথর, লকেট, ঘড়ির বেল্ট এবং আস্ত একটি হাতঘড়িও উদ্ধার হয়েছে তরুণীর পেট থেকে। প্রায় এক ঘণ্টা পনেরো মিনিট ধরে ওই তরুণীর অস্ত্রোপচার করা হয়। সবমিলিয়ে তরুণীর পেটের ভিতর থেকে এক কেজি ছশো আশি গ্রাম ধাতব সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
যে গয়নাগুলি উদ্ধার করা হয়েছে,তার মধ্যে অধিকাংশই তামা বা ইমিটেশনের। তবে কিছু সোনার গয়নাও রয়েছে।অস্ত্রপচারের আগে ওই তরুণী চিকিৎসকদের জানিয়েছিলেন, তাঁর ভাইয়ের দোকান থেকে ওই কয়েনগুলি নিয়ে খেতেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ পুলিশী তৎপরতায় দেশবন্ধু মার্কেটে চুরি যাওয়া বাইক উদ্ধার
চিকিৎসকদের ধারণা, মাটির দলার মধ্যে ওই কয়েন ঢুকিয়ে গিলে খেতেন ওই তরুণী। কিন্তু বাকি সামগ্রী তিনি কীভাবে খেতেন বা কোথায় পেতেন,তা স্পষ্টভাবে বলতে পারছেন না তরুণীর বাড়ির লোকরাও।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584